Last Updated: February 11, 2014 09:40

রাজ্যের পুলিস প্রশাসন দীর্ঘদিন নানা সমস্যায় ভুগছে। সমস্যাগুলির মোকাবিলা করার উপায় এবং পুলিস বাহিনীর উন্নয়নের জন্য একটি রিপোর্ট তৈরি করতে বলা হয়েছিল রাজ্যের দুই আইপিএস অফিসারকে। বাহিনীর সমস্যা, দুর্বলতা থেকে শুরু করে পুলিস বাহিনীর ওপর রাজনৈতিক প্রভাব। সব কিছুরই খোলামেলা বিচার বিশ্লেষণ করে রিপোর্ট জমা দিয়েছেন দুই আইপিএস অফিসার। তাতে উঠে এসেছে নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য। ২৪ ঘণ্টার বিশেষ রিপোর্ট।
রাজ্যের পুলিস প্রশাসনের বেহাল দশার ছবি উঠে এল দুই পুলিস কর্তার রিপোর্টে। ভিশন টোয়েন্টি টোয়েন্টি নামের এই রিপোর্টের ছত্রে ছত্রে রয়েছে পুলিসবাহিনীর অন্দরমহলের চাঞ্চল্যকর সব তথ্য। রিপোর্টটি তৈরি করেছেন এডিজি আইজি এস্টাব্লিশমেন্ট সঞ্জয় মুখার্জি এবং কলকাতা পুলিসের ইস্টার্ন সাবার্বান ডিভিশনের ডেপুটি কমিশনার ধ্রুবজ্যোতি দে।
উনচল্লিশ পাতার এই রিপোর্টে কী রয়েছে তা দেখে নেওয়া যাক।
1.পোস্টিংয়ে প্রবল রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ
ভালো পোস্টিংয়ের জন্য রাজ্যের বহু পুলিস অফিসার রাজনীতিকদের তোষামোদ করেন। থানার দৈনন্দিন কাজেও চলে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ।
2. পুলিসের ভাবমূর্তি তলানিতে
জনমানসে পুলিস বাহিনীর ভাবমূর্তি তলানিতে ঠেকেছে। একই অবস্থা পুলিস কর্মীদের একাংশের ব্যক্তিগত ভাবমূর্তিরও।
মানুষের সঙ্গে খারাপ ব্যবহারের ফলে দিনের পর দিন আরও খারাপ হচ্ছে পরিস্থিতি।
3. পুলিসে দুর্নীতি
নীচু থেকে উঁচুতলা, দুর্নীতিতে ছেয়ে গেছে পুলিসের বিভিন্ন স্তর। সততার পুরস্কার কিম্বা দুর্নীতিগ্রস্তদের শাস্তি । কোনওটা না হওয়াই এর কারণ।
4. কর্তাদের স্বৈরতান্ত্রিক আচরণ
অধস্তনদের দিয়ে অনৈতিক এবং বেআইনি কাজ করান উর্ধতন পুলিস কর্তাদের একাংশ। বসের নির্দেশ, তাই না বলতে পারেন না নীচু তলার কর্মীরা। মুখ বুজে অনৈতিক কাজ করতে বাধ্য হন তাঁরা।
5. আদর্শ বিচ্যুতি
রাষ্ট্রের আদর্শের বিষয়ে পুলিসের সচেতনতার অভাব রয়েছে। মাওবাদীদেরও আদর্শবোধ আছে। কিন্তু পুলিসের মধ্যে নেই।
6. অপর্যাপ্ত পুলিস বাজেট
বাহিনীর আধুনীকিকরণের জন্য পর্যাপ্ত টাকার অভাব। সরকারি সাহায্যও যথেষ্ট নয়।
7. মারাত্মক শারীরিক ও মানসিক চাপ
নীচুতলার কর্মীদের কাজ করতে হচ্ছে প্রবল শারীরিক এবং মানসিক চাপ নিয়ে। যার ফলে ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশনের মতো রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন পুলিস কর্মীরা। বাড়ছে মদ্যপানের প্রবণতাও। পরিণামে পরিবার, সহকর্মী এবং সাধারণ মানুষের সঙ্গে পুলিসের দুর্ব্যবহারও বাডছে।
8. লোকবলের অভাব
বছরের পর বছর ফাঁকা পড়ে আছে পুলিসের বিভিন্ন পদ। লোক নেই। বাড়তি চাপ সামলাতে হিমসিম খাচ্ছেন পুলিস কর্মীরা।
9. লিঙ্গ বৈষম্য
রাজ্যের পুলিস বাহিনী পুরুষপ্রধান। উল্লেখযোগ্যভাবে কম মহিলা পুলিসের সংখ্যা। যেকারণে মহিলাদের ওপর অপরাধের তদন্তে রীতিমতো সমস্যায় পড়তে হচ্ছে পুলিসকে।
দুই আইপিএস অফিসারের তৈরি এই রিপোর্ট এখন দেখা যাচ্ছে রাজ্য পুলিসের ওয়েবসাইটে। এই রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করেই দুহাজার কুড়ির মধ্যে পুলিস বাহিনীকে ঢেলে সাজানোর কথা ভাবছেন রাজ্য
পুলিস কর্তারা।
First Published: Tuesday, February 11, 2014, 09:40