Last Updated: October 18, 2013 11:42

নিকষ আঁধারে যেন এক চিলতে আলো দেখালেন ব্রিটেনের বিজ্ঞানীরা। তাঁরা আবিষ্কার করেছেন অলঝাইমার্স ডিজিজ প্রতিরোধের পদ্ধতি।
২০১০ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী,সারা বিশ্বে ওই অসুখে আক্রান্ত ৩ কোটি ৫৬ লক্ষ মানুষ। ২০৩০-এর মধ্যে তা দ্বিগুণ বেড়ে যাবে। ঘূণপোকার মতো অলঝাইমার্স ডিজিজ কুরে কুরে খায় রোগীর স্মৃতি,মস্তিষ্কের ক্ষমতা। এখনও পর্যন্ত তার কোনও ওষুধ বা চিকিত্সা নেই ।
ব্ল্যাক ছবিতে অমিতাভ বচ্চনের চরিত্রটা মনে পড়ছে ? মিশেল ম্যাকনেলির শিক্ষক দেবরাজ সহায়? বয়সের সঙ্গে সঙ্গে কমতে থাকে তাঁর মনে রাখার ক্ষমতা। সম্পূর্ণ স্মৃতিভ্রষ্ট হয়ে যান একদিন। অলঝাইর্মার্স ডিজিজ এমনই এক ভয়ঙ্কর অসুখ। সঞ্জয় লীলা বনশালীর সিনেমা থেকে কাট টু উত্তর ইংল্যান্ডের স্টকপোর্ট কমিউনিটি সেন্টার । প্রতি সপ্তাহে এখানে জড়ো হন বহু মানুষ। তাদের মধ্যে একটাই যোগসূত্র। সকলেই ডিমেনশিয়ায় ভুগছেন। ডিমেনশিয়া,অলঝাইমার্সের ডিজিজেরই এক অন্য রুপ।
রাহু-কেতুর মতো অলঝাইমার্স ডিজিজের মূলে রয়েছে দুটি দুষ্ট প্রোটিন। প্লাক এবং ট্যাঙ্গেল। যারা মানুষের মস্তিষ্কে গ্রহণ ধরায়। ওই দুই প্রোটিন প্রথমেই আক্রমণ করে স্মৃতির আঁতুরঘর হিপোক্যাম্পাসে। তারপর ছড়িয়ে পড়ে মস্তিষ্কের সর্বত্র। মুছে দেয় কাল-পরশুর স্মৃতি,ভাষা,যুক্তিবোধ,অনুধাবনের ক্ষমতা। প্লাক এবং ট্যাঙ্গেল প্রোটিনের ধ্বংসযজ্ঞ ঠেকানোর একটি পদ্ধতি বের করেছেন ব্রিটেনের লেইসেস্টার বিশ্বিবিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা। একটি যৌগের মাধ্যমে তাঁরা রুখে দিয়েছেন মস্তিষ্কের কোষসমূহের অকাল মৃত্যু। ইঁদুরের শরীরে পদার্থটি ব্যবহার করে সাফল্য পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
পঁয়ষট্টির পর থেকেই বাড়তে থাকে ডিমেনশিয়া বা অলঝাইমার্সে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা। সাধারণত আট থেকে দশ বছরের মধ্যে রোগীর মৃত্যু হয়। অলঝাইমার্স সোসাইটির আশঙ্কা,আগামী দিনে প্রতি তিনজন ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তির মধ্যে একজন ডিমেনশিয়ায় ভুগবেন। এখনও এই অসুখের কোনও চিকিত্সা নেই। তবে সামান্য হলেও আশার আলো দেখাচ্ছেন ব্রিটেনের বিজ্ঞানীরা ।
ব্ল্যাকের শেষদৃশ্যে দেবরাজ সহায়ের মস্তিষ্কের আলো-আঁধারি খানিকটা কমে। কিন্তু ওই প্রৌঢ় কি পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়ে উঠবেন? উত্তর খুঁজে চলেছেন ব্রিটেনের বিজ্ঞানীরা।
First Published: Friday, October 18, 2013, 11:46