Last Updated: April 21, 2014 23:44

চিটফান্ড নিয়ন্ত্রণ বিলে ছাড়পত্র না মেলায় কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। তাঁর যুক্তি, এই বিল আইনে পরিণত হলে সারদার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে পারবে সরকার। যদিও, অর্থমন্ত্রীর দাবি মানতে নারাজ বিরোধীরা। চিটফান্ড নিয়ন্ত্রণে বাম আমলে আনা বিল কেন্দ্রের কাছ থেকে ফিরিয়ে নেয় রাজ্য সরকার। তৈরি হয় নতুন বিল। বামেদের দাবি ছিল, তাদের আনা বিলে প্রয়োজন অনুযায়ী সংশোধনী এনে সেটিকেই কেন্দ্রের অনুমোদনের জন্য ফের পাঠানো হোক।
নতুন বিল আনা হলে তার ভিত্তিতে পুরনো অপরাধের ক্ষেত্রে পদক্ষেপ করা যাবে না। আর তার ফলে পার পেয়ে যাবে সারদার মতো বিভিন্ন বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থা। এই ছিল বামেদের যুক্তি। যদিও, সরকার তা মানতে চায়নি। গত বছরের এপ্রিলে বিধানসভায় পাশ হয়, দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল প্রোটেকশন অফ ইন্টারেস্ট অফ ডিপোজিটর্স ইন ফিনান্সিয়াল এস্টাব্লিশমেন্ট বিল। বিল নিয়ে প্রশ্ন তোলে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক। রাজ্য সরকার বিলটি ফিরিয়ে নেয়। গত ডিসেম্বরে বেশ কয়েকটি সংশোধনী সহ বিলটিকে বিধানসভায় পাশ করানো হয়। চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য সেটিকে পাঠানো হয় কেন্দ্রের কাছে। সেই বিলে এখনও দিল্লির ছাড়পত্র মেলেনি।
চিটফান্ড নিয়ন্ত্রণে রাজ্য সরকারের আনা বিলে রেট্রোস্পেকটিভ এফেক্টের কথা বলা হয়েছে। যার মানে দাঁড়ায় আগের ঘটনার বিচার করা যাবে নতুন আইনে। বিধানসভায় বিল পাশের সময়ই বিরোধীরা অভিযোগ করেন, বিলে যে ভাবে রেট্রোস্পেকটিভ এফেক্টের উল্লেখ করা হয়েছে তা বেআইনি। কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রক বিষয়টি মানতে চাইবে না বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তাঁরা। সম্ভাব্য এই বাধা এড়াতে বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র একাধিক সংশোধনী আনলেও তা খারিজ করে দেয় সরকার।
চার মাস পরেও বিলে কেন্দ্রের অনুমোদন না মেলায় সেই আশঙ্কাই শেষপর্যন্ত সত্যি হতে চলেছে বলে মনে করছে বিভিন্ন মহল। ভোটের মধ্যেই এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের হাতে সারদা-কাণ্ডের তদন্ত গতি পাওয়ায় চাপে শাসকদল। এই অবস্থায় চিটফান্ড বিলে ছাডপত্র দিতে দেরির অভিযোগে কেন্দ্রকে কাঠগড়ায় তুলেছেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। তাঁর যুক্তি খারিজ করেছেন আইনজীবী তথা কংগ্রেস নেতা অরুণাভ ঘোষ। চিটফান্ড বিলে রেট্রোস্পেকটিভ এফেক্ট নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্য বিধানসভার প্রাক্তন অধ্যক্ষ। ইডি-র তদন্তের বিরুদ্ধে যুক্তি সাজাতে গিয়ে চিটফান্ড নিয়ন্ত্রন বিল আইনে পরিণত হলে সারদার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে সুবিধা হওয়ার কথা বলছে রাজ্য সরকার। সারদার টাকা কোথায় গেল তা জানতে তদন্ত করছে ইডি। রাজ্য সরকারের কাছে যে তথ্য জানতে চেয়েছিল সুপ্রিম কোর্টও। তাই, প্রশ্ন উঠছে ইডি-র তদন্তের সঙ্গে চিটফান্ড নিয়ন্ত্রণ আইন থাকা না থাকার বিষয়টিকে কেন টেনে আনতে চাইছে রাজ্য সরকার?
First Published: Monday, April 21, 2014, 23:44