Last Updated: March 21, 2014 22:53
২৪ ঘণ্টার অনন্য সাধারণ মনোরঞ্জন ব্যাপারী
কথায় বলে জাত চন্ডাল। তিনি সত্যিই চন্ডালের সন্তান। আর এটাই তাঁর সামাজিক অপরাধ। তাই তিনি আমাদের তথাকথিত ভদ্রসমাজ, পেশা ও বৃত্তি, সমাজের অন্য মানুষের সহমর্মিতা ও সংবেদনশীলতা থেকে চির বঞ্চিত। অন্তত তাঁর ৫৯ বছরের কঠিন জীবনবোধ থেকে তাই তো মনে হয়েছে।
শৈশবেই নিজের ভিটেমাটি ছেড়ে উদ্বাস্তু জীবন। বসবাস কখনও শিয়ালদহ স্টেশন। কখনও বা শরনার্থী শিবির। দন্ডকারন্যের উপর পাথুরে প্রান্তরে অনাহারে মৃত্যু হয় বাবা-মা`র। কঠিন বাস্তবের সম্মুখীন সে। কোনওরকমে কলকাতায় ফেরা। যুক্ত হন রাজনীতির বিশেষ মতাদর্শে। দুবছরের জন্য কারাদন্ড। বব্দি অবস্থাতেই জেলের মাটির মেঝের উপর কাঠি দিয়ে দাগ টেনে অক্ষর পরিচয়। আর এই অক্ষর পরিচয় তাঁকে টেনে নিল বাংলা সাহিত্যের দিকে। পড়তে থাকলেন একের পর এক গল্প। উপন্যাস। জেল মুক্তির পর মাল টানার কাজ করলেন। পেটের তাড়নায় রিক্সা চালিয়েছেন তিনি। কিন্তু বই থেকেছে সর্বক্ষণের সাক্ষী। তাঁর সামনে খুলে যায় জ্ঞানের ভুবন। কিন্তু দারিদ্র ঘোচে না। ঘোচে না আগামিকাল কী খাবেন সেই অনিশ্চয়তা। এই ৫৯ বছর বয়সেও একটু অন্নের সংস্থানের জন্য দু`শো জনের রান্নার কাজ করেন তিনি। কিন্তু এখন সে সব যেন আর তাঁকে স্পর্শ করে না। করলেও সৃষ্টি করে না কোনও গভীর ক্ষত। যন্ত্রণা সহ্য করার শ্রেষ্ঠ উপায় যে তাকে উপেক্ষা করা, তা সে তার চন্ডালের জীবন দিয়ে উপলব্ধি করেছে। আর এই উপলব্ধিকে প্রশ্রয় দিতে সে লিখতে শুরু করে। তার লেখা ছাপা হয় বিভিন্ন লিটল ম্যাগাজিনে। ছাপা হয় তার জীবনবোধের গল্প। লিখে ফেললেন তাঁর জীবনবোধের প্রবন্ধও। `ইতিবৃত্তে চন্ডাল জীবন`। তিনি মনোরঞ্জন ব্যাপারী।
First Published: Friday, March 21, 2014, 22:53