Last Updated: April 7, 2012 16:30

কেন্দ্রীয় সরকার এবং সেনাপ্রধানের তরফে ১৬ জানুয়ারি মধ্যরাতে দুটি ফৌজি ইউনিটের সন্দেহজনক তত্পরতার খবর অস্বীকার করা হয়েছে ইতিমধ্যেই। সেনা অফিসারদের একাংশের তরফে পুরো ঘটনার জন্য আমলাতন্ত্রের অতি সক্রিয়তাকে দায়ী করা হয়েছে। কিন্তু সেনাপ্রধানের বয়স বিতর্ক থেকে শুরু করে সেনাবাহিনীর বেহাল দশা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে লেখা জেনারেল ভি কে সিংয়ের চিঠি বা টেট্রা ট্রাক ঘুষ কাণ্ড--সাম্প্রতিক একের পর এক ঘটনায় যে ভাবে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক এবং জেনারেল ভি কে সিংয়ের দূরত্ব প্রকাশ্যে এসেছে, তা জাতীয় নিরাপত্তার পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকারক বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। এর ফলে দেশবাসীর সামনে সেনাবাহিনীর নেতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরি হতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
আর সেই সঙ্গেই উঠে আসছে একটি প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন- তবে কি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে প্রতিরক্ষামন্ত্রী এ কে অ্যান্টনির সঙ্গে সেনাপ্রধান ভি কে সিংয়ের সংঘাত বাধানোর চেষ্টা করছে কোনও প্রভাবশালী গোষ্ঠী?
ব্যক্তিগতভাবে প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও সেনাপ্রধান দু`জনেই অত্যন্ত সত্ হিসেবে পরিচিত। কিন্তু অ্যান্টনির অতি সাবধানী পদক্ষেপের কারণে সাম্প্রতিক কালে ভারতীয় ফৌজের আধুনিকীকরণের কাজ কিছুটা শ্লথ হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ। আর এ ব্যাপারে সেনাপ্রধান-সহ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্তা কিছুটা ক্ষুব্ধ। সাউথ ব্লকের একটি মহলের মতে, পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে কোনও বিদেশি প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম উত্পাদনকারী সংস্থা ক্ষোভের আগুনে ঘৃতাহুতি দেওয়ার কাজ করছে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী থাকাকালীন এ কে অ্যান্টনি অনিয়মের অভিযোগে ইজরায়েল, সুইত্জারল্যান্ড, সিঙ্গাপুর এবং রাশিয়ার চারটি সমরাস্ত্র নির্মাতা সংস্থার উপর নিষেধাজ্ঞা বলবত্ করেছিলেন। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের আধিকারিকদের সন্দেহের তালিকায় এই সংস্থাগুলির নামই প্রথমের সারিতে রয়েছে। এ ক্ষেত্রে অস্ত্র ডিল-এ কাটমানি নিতে অভ্যস্ত কয়েকজন দুর্নীতিগ্রস্থ সেনা অফিসার অ্যান্টনির বিরুদ্ধে চক্রান্তে জড়িত রয়েছেন বলেও মনে করা হচ্ছে।

এ কে অ্যান্টনির সাবধানী পদক্ষেপ সত্ত্বেও দ্বিতীয় ইউপিএ সরকারের জমানায় সামগ্রিকভাবে সশস্ত্র বাহিনীর তিন শাখার আধুনিকীকরণ প্রক্রিয়ার অগ্রগতি কিন্তু পুরোপুরি স্তব্ধ হয়নি। চলতি বছরেই ফরাসী যুদ্ধবিমান নির্মাতা সংস্থা ড্যাসল্ট অ্যাভিয়েশন-এর থেকে ১২৬টি পঞ্চম প্রজন্মের র্যাফেল ফাইটার জেট কেনার চুক্তি চূড়ান্ত হয়েছে। ইঙ্গ-মার্কিন যৌথ উদ্যোগে তৈরি এম-৭৭৭ আল্ট্রালাইট হাউইত্জার কামানের উত্কর্ষ পরীক্ষার পর দরপত্র সংক্রান্ত আলোচনা চলছে। ইতিমধ্যেই ভারতীয় নৌবাহিনীর জন্য ৭৫টি মাল্টিরোল হেলিকপ্টার কেনার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। বিশ্বের বৃহত্তম এই `চপার ডিল` হস্তগত করার জন্য ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি বিদেশি সংস্থার তত্পরতা শুরু হয়েছে জোরকদমে।
First Published: Saturday, April 7, 2012, 16:30