সাধারণ বাজেটে ভারসাম্য রক্ষার ইঙ্গিত অর্থমন্ত্রীর

সাধারণ বাজেটে ভারসাম্য রক্ষার ইঙ্গিত অর্থমন্ত্রীর

সাধারণ বাজেটে ভারসাম্য রক্ষার ইঙ্গিত অর্থমন্ত্রীরঘড়ির কাঁটায় তখন বেলা ১১টা বেজে ৪ মিনিট। বাজেট অধিবেশনের সূচনাপর্বেই লোকসভার বিরোধী বেঞ্চ থেকে ভেসে এল উচ্চস্বরের প্রতিবাদের আওয়াজ। কিন্তু সে সব ধর্তব্যের মধ্যে না এনেই প্রথামাফিক স্পিকারকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বাজেট পেশ শুরু করলেন অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়।

আর্ন্তর্জাতিক আর্থিক মন্দার অভিঘাত অতিক্রম করে ক্রমশ শক্তিশালী হচ্ছে ভারতের অর্থনীতি। লোকসভায় নিজের সপ্তম সাধারণ বাজেট পেশের সূচনা পর্বেই এই দাবি করলেন অর্থমন্ত্রী। ২০১১-১২ অর্থবর্ষে আর্থিক বৃদ্ধির হার ছিল ৬.৯ শতাংশ। আগামী ২০১২-১৩ সালে তা ৭.৬ শতাংশে পৌঁছবে বলে দাবি করলেন তিনি। রফতানি ক্ষেত্রে অগ্রগতি ভাল হলেও শিল্পক্ষেত্রে আশানুরূপ উন্নয়ন না হওয়া এবং সরকারি ক্ষেত্রে মুনাফা কমার কথা স্বীকার করে কার্যত সংস্কারমুখী পদক্ষেপের ক্ষেত্র প্রস্তুত করলেন তিনি।

রাজনৈতিক টনাপোড়েনের কারণে আপাতত প্রত্যক্ষ কর বিধি এবং `মাল্টি ব্র্যান্ড` খুচরো ব্যবসায় প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে `ধীরে চলো` নীতি নিলেও এ ব্যাপারে পূর্বঘোষিত নীতি থেকে সরে আসছে না কেন্দ্র। সেই সঙ্গে কিছু ক্ষেত্রে ভর্তুকিকে `অপ্রয়োজনীয়` হিসেবে চিহ্নিত করে এবং রাষ্ট্রায়ত্ব ক্ষেত্রগুলির বিলগ্নীকরণ থেকে ৩০,০০০ কোটি টাকা আয়ের কথা বলে কার্যত সংস্কার কর্মসূচি এগিয়ে নিয়ে যাওয়ারও ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। বিমান শিল্পকে চাঙ্গা করার জন্য ৪৯ শতাংশ বিদেশি বিনিয়োগে অনুমোদন এবং পরিকাঠামো নির্মাণ ক্ষেত্রে পিপিপি মডেল প্রণয়ন তারই ইঙ্গিত। সাধারণ বাজেটে ভারসাম্য রক্ষার ইঙ্গিত অর্থমন্ত্রীর

তবে কি আর্থিক বৃদ্ধির লক্ষ্য পূরণের স্বার্থে জনমোহিনী পথ থেকে পুরোপুরি সরে আসবে দ্বিতীয় ইউপিএ সরকার? ইন্দিরা গান্ধীর জমানায় অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনকারী প্রণব মুখোপাধ্যায় এ ক্ষেত্রে ভারসাম্য রক্ষার পক্ষপাতী। আর তাই আয়কর ছাড়ের সীমা বাড়ানো, আইসিডিএস প্রকল্পে ৫৮ শতাংশ বরাদ্দ বৃদ্ধি, নিকাশি ও পানীয় জল সরবরাহ বরাদ্দ ১৪,০০০ কোটি টাকা, মিড-ডে মিলে বরাদ্দ বেড়ে ১১,৯৩৭ কোটি টাকা এবং কৃষিঋণের পরিমাণ বাড়িয়ে ৫,৭৫,০০০ কোটি টাকা করার ঘোষণায় আমজনতার হৃদয় জয় করার প্রচেষ্টা স্পষ্ট। দ্বাদশ পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় ৬,০০০ নতুন স্কুল নির্মাণ, নতুন ৮,৮০০ কিলোমিটার রাস্তা তৈরি, শিক্ষার অধিকার আইনে ২৫,৫৫৫ কোটি টাকা বৃদ্ধিও তারই ইঙ্গিত।একই ভাবে জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত নানা প্রশ্নের মুখেও প্রতিরক্ষা বাজেট তেমন বাড়ানো হয়নি। এই খাতে বরাদ্দ ১ লক্ষ ৯৫ হাজার কোটি টাকায় সামরিক বাহিনীর আধুনিকীকরণের কাজ তেমন এগোবে না বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল। তাঁত শিল্পে ৩,৮৮৪ কোটি  টাকা ঋণ মকুব করার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী। অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির উন্নয়নে বরাদ্দ বাড়িয়ে ২১ হাজার ৭১০ কোটি টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। শিক্ষার অধিকার খাতে বরাদ্দ ২৫ হাজার ৫৫৫ কোটি বাড়িয়ে ৬ হাজার নতুন স্কুল তৈরির কথা ঘোষণা করেছেন প্রণববাবু। গ্রামীণ পরিকাঠামো উন্নয়েনে ২০ হাজার কোটি টাকা বাড়ানো হয়েছে। প্রতিবন্ধী ও বিধবা পেনশন মাসে ৩০০ টাকা করার প্রস্তাব দিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। 




First Published: Friday, March 16, 2012, 15:12


comments powered by Disqus