Last Updated: May 30, 2012 18:36

ফের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন বিশ্বনাথন আনন্দ। ২০০০ সাল থেকে এই নিয়ে পাঁচবার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হলেন আনন্দ। ইজরায়েলের বরিস গেলফাঁকে টাইব্রেকারে হারালেন আনন্দ। দ্বাদশ গেম পর্যন্ত দুজনেরই পয়েন্ট ছিল ছয়। তাই ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। সেখানে প্রথম গেম ড্র হয় ৩২ চালে। কিন্তু দ্বিতীয় গেমে সাদা ঘুঁটি নিয়ে জেতেন বিশ্বনাথন আনন্দ। এরপর গেলফাঁ-আনন্দের তৃতীয় গেম ড্র হতেই পঞ্চম বারের জন্য বিশ্বদাবার খেতাব জিতলেন আনন্দ।
র্যাপিড চেস-এ তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব ইতিমধ্যেই প্রতিষ্ঠিত বিশ্ব দাবা দুনিয়ায়। সেই নজির কি অক্ষুণ্ণ রাখলেন বিশ্বনাথন আনন্দ। টাইব্রেকার-যুদ্ধে আনন্দের সামনে সবথেকে বড় সুবিধা ছিল প্রতিদ্বন্দ্বীর বিরুদ্ধে র্যাপিড চেস-এ তাঁর দুরন্ত ট্র্যাক রেকর্ড। কিন্তু বিশ্ব দাবার ইতিহাস বলছে, সংখ্যাতত্ত্বের নিরিখে পিছিয়ে থাকা প্রতিপক্ষরা প্রায়শই এরকম ক্ষেত্রে মরিয়া মরণকামড় দিয়ে থাকেন। যেমন ১৯৯৪ সালের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন মিটে দিয়েছিলেন গাতা কামাস্কি। রুশ বংশোদ্ভূত মার্কিন বিস্ময়বালকের কাছে হেরে বিদায় নিতে হয়েছিল তামিল `জিনিয়াস`কে। এমনকী ধীরগতির খেলোয়াড় হিসেবে পরিচিত আনাতোলি কারপভও তাঁর কেরিয়ারের শেষ সময়ে, ১৯৯৮ সালের ফিডে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের (তখন গ্যারি কাসপারভের নেতৃত্বে চলছিল প্রফেশন্যাল চেস অ্যাসোসিয়েশন-এর সমান্তরাল দাব বিশ্বখেতাব) লড়াইয়ে হারিয়েছিলেন তরুণ-তুর্কী আনন্দকে। আজ গেলফাঁর খেলার মধ্যেই দেখা গেল সেই হার না মানা মনোভাব।
২০০৩ সালের বিশ্ব দাবায় ফর্মের তুঙ্গে থাকা ভ্লাদিমির ক্র্যামনিকের বিরুদ্ধে র্যাপিড চেস-এ ভিশি`র চমকপ্রদ জয়কে এখনও ভোলেনি দাবা-দুনিয়া। ভোলেনি প্রবল চাপের মুখে দাঁড়িয়ে তাঁর চমকপ্রদ প্রত্যাঘাতের ক্ষমতাকে। কিন্তু বুধবারের বারবেলায় মস্কোর ২৫-বি পার্ক স্ট্রিটে গেলফাঁর সঙ্গে ২৫ মিনিটের দাবা-দ্বৈরথে অনেকটাই অতীতের ছায়া বলে মনে হল আনন্দকে। গেলফাঁর বিরুদ্ধে তাঁর ৩৫-১১ রেকর্ড বোধহয় ভুলে গিয়েছিলেন তিনি। তাই ১২ গেমের লড়াইয়ে তূল্যমূল্য লড়াইয়ের শেষে ৬-৬-এর অমীমাংসিত ফলের পুনরাবৃত্তি দেখা গেল এখানেও।
তবে দাবা বিশেষজ্ঞদের একাংশের ধারণা, টাইব্রেকারের প্রথম ম্যাচে কালো ঘুঁটি নিয়ে খেলতে নামায় অতিরিক্ত ঝুঁকি নেননি আনন্দ। প্রাথমিকভাবে আক্রমণাত্মক খেলে কিছুটা সুবিধাজনক জায়গায় গিয়েও শেষ পর্যন্ত স্বভাববিরুদ্ধ সংযম দেখিয়েছেন। ৪ ম্যাচের র্যাপিড টাইব্রেকারের বাকি ৩টি ম্যাচে প্রতিদ্বন্দ্বীকে পিছনে ফেলে বিশ্বনাথন আনন্দ চতুর্থবার বিশ্বখেতাব করতে পারবেন বলেই মনে করছেন তাঁরা।
First Published: Wednesday, May 30, 2012, 18:40