Last Updated: September 28, 2011 00:04

দেশের জনবিন্যাসের এক বিরাট পরিবর্তন দেখা গেল দুহাজার এগারোর জনগণনায়।
দুহাজার একে ভারতের গ্রামীণ জনসংখ্যা ছিল চুয়াত্তর কোটি পঁচিশ লক্ষ।
দুহাজার এগারোয় সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁডিয়েছে তিরাশি কোটি একত্রিশ লক্ষে।
বৃদ্ধির পরিমাণ নয় কোটি ছয় লক্ষের কাছাকাছি।
গ্রামের এই জনসংখ্যা বৃদ্ধিকে কিন্তু এবারে তাত্পর্যপূর্ণ ভাবে পিছনে ফেলে দিয়েছে শহুরে নাগরিকদের সংখ্যা বৃদ্ধির পরিমাণ।
শহরের ক্ষেত্রে গত দশ বছরে জনসংখ্যা বেড়েছে প্রায় নয় কোটি দশ লক্ষ। দুহাজার একে দেশের শহরবাসীর সংখ্যা আঠাশ কোটি একষট্টি লক্ষ থেকে বেড়ে দুহাজার এগারোয় দাঁড়িয়েছে সাঁইত্রিশ কোটি একাত্তর লক্ষে।
ভারতে এর আগে একমাত্র উনিশশো একুশের জনগণনায় শহুরে মানুষের সংখ্যা লাফিয়ে বেড়েছিল। তারপর থেকে আর কোনওদিনই গ্রামের জনসংখ্যা বৃদ্ধিকে পিছনে ফেলতে পারেনি শহর।
দুহাজার এগারোর জনবিন্যাসের এই উলোট পূরাণের জন্য কয়েকটি কারণও উল্লেখ করা হয়েছে আদমসুমারির রিপোর্টে।
জীবিকার টানে গ্রাম ছেড়ে যাওয়া, শহরের স্বাভাবিক বৃদ্ধি, আর নতুন নতুন এলাকা জুড়ে নগরায়ন, এই তিনটি কারণকেই দায়ী করেছেন
জনগণনা কারিরা।
এবারের জনগণনায় সেনসাস টাউন বলে নতুন একটি শব্দ যোগ করেছে কমিশন। পাঁচ হাজার মানুষের কোনও গ্রাম বা মফস্বল এলাকার জনঘনত্ব চারশোর বেশি, আর পঁচিশ শতাংশের কম পুরুষকে কৃষির সঙ্গে যুক্ত হলেই তাঁকে সেনসাস টাউন হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। জনগণনা রিপোর্টে এই দিকটিকেই শহরে জনসংখ্যা বৃদ্ধির জন্য দায়ী করছেন অনেক বিশেষজ্ঞ।
তবে সব যুক্তি ছাপিয়ে উঠে এসেছে পরিযায়ী শ্রমিকদের বিষয়টিই। গ্রামে আর্থিক দুর্দশার কারণে কৃষি থেকে উচ্ছেদ হয়ে জীবিকার টানে শহরে যাওয়া মানুষরাই এই জনবিন্যাসের পরিবর্তনকে সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত করেছে বলে মনে করছেন অনেক বিশেষজ্ঞ। পরিযায়ী শ্রমিকদের মধ্যে অনেকেই আবার স্থায়ী জীবিকা না পেয়ে ঘুরে বেডায় এক শহর থেকে আরেক শহরে। পরিযায়ী শ্রমিকদের কাজের সন্ধানে গ্রাম ছেড়ে শহরে পাড়ি, এবং গ্রামীন ভারতের আর্থিক দুর্দশার ছবিটাই এই সেনসাস রিপোর্ট তুলে ধরেছে বলে সমাজবিজ্ঞানীদের একাংশের মত।
First Published: Wednesday, September 28, 2011, 00:04