Last Updated: September 28, 2012 21:59

ভেঙেছে ইউপিএ জোট। রাজ্যে রাস্তা আলাদা হয়েছে কংগ্রেস-তৃণমূলের। তিন বছরের শরিকি সম্পর্ক আজ বৈরিতার তলানিতে ঠেকেছে। এমনকী, প্রকাশ্যে মনমোহন সরকারের সমালোচনা করতেও ছাড়ছেন না তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাল্টে যাওয়া রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কার্যত পাখির চোখ করে এগোচ্ছে তৃণমূল। রাজনৈতিক মহলের ব্যখ্যা, বিধানসভা নির্বাচনের রাজনৈতিক লাভ অব্যাহত রাখতেই নির্বাচন এগিয়ে আনার পক্ষে সওয়াল করছেন খোদ তৃণমূল নেত্রী। অন্যদিকে, জোট ভাঙা কংগ্রেসের কাছেও এই নির্বাচন সাংগঠনিক শক্তি পরীক্ষার লড়াই।
এমতাবস্থায় বাম ও কংগ্রেস, দুই শিবিরই যে রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট এগিয়ে আনার বিপক্ষে। শুক্রবার দিল্লিতে চার বামদলের প্রতিনিধিরা নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়ে সেকথা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। তাঁদের দাবি, সংশোধিত ভোটার তালিকা তৈরির পরই পঞ্চায়েত ভোট করা হোক। একই মত কংগ্রেসেরও। গরমকালের আগেই পঞ্চায়েত ভোট সেরে ফেলতে চায় তৃণমূল। দলের একাংশের যুক্তি, বাম দল পরিচালিত পঞ্চায়েতগুলির অসহযোগিতায় কাজ করা যাচ্ছে না। ফলত উন্নয়নের স্বার্থে পঞ্চায়েত বোর্ডগুলিও তড়িঘড়ি দখল করার পক্ষপাতী তৃণমূল দল। কিন্তু তাঁদের এই যুক্তি খারিজ করে দিয়েছে প্রদেশ কংগ্রেস। তৃণমূল নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে যেভাবে একের পর এক নেতি বাচক ভাবমুর্তি উঠে এসেছে, তাতে এত সহজে ময়দান ছেড়ে দিয়ে চাইছে না বিরোধী কংগ্রেস। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি জানিয়েছেন, প্রয়োজনে তাঁরাও একই আর্জি নিয়ে নির্বাচন কমিশনে যাবেন।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানুয়ারিতে পঞ্চায়েত ভোট করতে চাইছেন। সেজন্য, ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ পিছিয়ে দিতে দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের কাছে আর্জি জানিয়েছেন মুখ্যসচিব সমর ঘোষ। কিন্তু ওয়াকিবহাল মহলের ব্যাখ্যা, এভাবে কোনও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচনের ওপর চাপ বাড়াতে থাকেন, সেক্ষেত্রে কমিশনের ভূমিকানিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। পরবর্তীতে অন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরাও ইচ্ছে মতো নির্বাচন নির্ঘণ্টের দাবি জানাতে পারে বলেও আশঙ্কা তাঁদের। ফলত গণতান্ত্রিক কাঠামোতে থেকে বিরোধীদের পাল্টা চাপের মুখে রাজ্যে অন্তর্বর্তী নির্বাচন করাটা কতটা সম্ভব হবে তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
First Published: Saturday, September 29, 2012, 19:23