Last Updated: November 4, 2013 10:33

নৃশংসতার সাক্ষী রইল দীপাবলি। শব্দবাজি ফাটানোর প্রতিবাদ করার মাশুল দিতে হল রাজ্যের দুই যুবককে। অশোকনগরের পিন্টু বিশ্বাস, বয়েস ৩০। আড়াই বছরের ছেলে রয়েছে পিন্টুর। শব্দবাজি ফাটানোর প্রতিবাদ করেছিলেন তিনি। প্রতিবাদের মাশুল খুন। মাথায় শাবলের আঘাত করে খুন করা হয় তাঁকে। আরেক নৃশংসতার সাক্ষী চারুমার্কেট। এক প্রতিবন্দ্বী যুবক শব্দবাজির প্রতিবাদ করায় তাঁকে প্রচণ্ড মারধর করা হয়। তাতেই শেষ নয়, তার হুইল চেয়ারটিও ভেঙে তচনছ করে দেয় তাঁর পাড়ার যুবকরা। হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে।
কালীপুজোর দিন পুলিস তত্পর হলেও, শব্দবাজি রুখতে দিওয়ালির রাতে তেমন নজরদারি চোখে পড়ল না। উত্তর, দক্ষিণ ও পূর্ব কলকাতা জুড়ে চলল শব্দ-তাণ্ডব। পুলিস কার্যত নীরব দর্শক। রবিবার রাত এগারোটা পর্যন্ত শব্দবাজি বিক্রি ও ফাটানোর অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে ২৩৯ জনকে। এবং আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গের অপরাধে গ্রেফতার হয়েছে ১৮৮ জন।
শব্দবাজি রুখতে কালীপুজোর দিন রাতে পুলিসের তত্পরতা লক্ষ করা গিয়েছিল। নিষিদ্ধ শব্দবাজি ফাটানোর দায়ে গ্রেফতার হয়েছিল প্রায় আটশোর কাছাকাছি। কিন্তু রবিবার, দিওয়ালির সন্ধে থেকেই শহরজুড়ে শুরু হল শব্দ তাণ্ডব।
রাত যতো বেড়েছে উত্তর কলকাতার গিরিশ পার্ক-মানিকতলা-কাশীপুর-বাগুইআটি-দমদম, দক্ষিণ কলকাতার কসবা-গড়িয়াহাট-সাদার্ন অ্যাভিনিউ-নিউ আলিপুর- তারাতলা-বেহালা, পূর্ব কলকাতার সল্টলেকে শব্দবাজির দাপটও বেড়েছে পাল্লা দিয়ে। কলকাতা তো বটেই, শহরতলির নানা এলাকাতেও শব্দ তাণ্ডবে নাজেহাল হয়েছেন মানুষ। গলি থেকে রাজপথ, পুলিসের নাকের ডগাতেই ফেটেছে শব্দবাজি। কিন্তু পুলিসের গা ছাড়া মনোভাব। ফলে রাজ্য সরকার শব্দবাজি রুখতে চাইলেও পুলিসের ব্যর্থতার কারণেই দিওয়ালির রাতে শব্দজব্দ হলেন সাধারণ মানুষ।
গতকাল শব্দবাজির প্রতিবাদের মাসুল দিয়েছেন প্রতিবন্ধী যুবক। জুটেছে বেধড়ক মার। ভেঙে দেওয়া হল হুইলচেয়ার। কোনও প্রত্যন্ত এলাকায় নয়, ঘটনা চারু মার্কেট থানার নাকের ডগায়।
চারু মার্কেট থানার কাছেই থাকেন প্রতিবন্ধী যুবক রতন মুদি। অভিযোগ, কালীপুজোর রাতে তাঁর হুইলচেয়ারে ছোঁড়া হয় চকোলেট বোমা। প্রতিবাদ করতেই শুরু হয়ে যায় বেদম মারধর। ভেঙে দেওয়া হয় হুইলচেয়ার। আক্রান্ত প্রতিবন্ধী যুবককে রাতে এম আর বাঙ্গুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিত্সার পর রবিবার দুপুরে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু, অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে ফের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গোটা ঘটনায় শব্দবাজির দৌরাত্ম্য বন্ধে পুলিস-প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশিষ্ট জনেরা।
মারধরের ঘটনায় মুল অভিযুক্ত লাল্টু সহ দুজনের বিরুদ্ধে চারু মার্কেট থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
First Published: Monday, November 4, 2013, 12:24