Last Updated: June 12, 2014 14:50

গায়ের রঙ কালো। তাই চাকরি থেকে বিয়ের বাজার কোথাও নাকি কদর নেই মেয়েদের। ফেয়ারনেস ক্রিমের জাদুতে কালো চামড়া সাদা চামড়ায় বদলে গেলেই নাকি আত্মবিশ্বাসে টইটম্বুর হয়ে
সবার কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে সেই কৃষ্ণকলি। বিয়ে থেকে কলেজ ক্যাম্পাস কিংবা চাকরির বাজার সর্বত্রই চড়চড় করে নাকি বেড়ে যাবে কৃষ্ণাঙ্গীর দাম।
এমনই চরম বর্ণ ও লিঙ্গ বৈষম্যমূলক ফেয়ারনেস ক্রিমের বিজ্ঞাপনতো আমরা হামেসাই দেখি। বর্তমানে ছেলেরদের জন্য ফেয়ারনেস ক্রিম বাজারে চলে এলেও এখনও বিজ্ঞাপনগুলি অনুযায়ী ফর্সা হতে না পারলে এদেশে মেয়েদের কে যে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে অনেক বেশি পিছিয়ে পড়তে হয় সে কথা বলা থাকে আরও ব্যপকভাবে। ফেয়ারনেস ক্রিমের রোজ রোজ বিক্রি বৃদ্ধি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় কীভাবে সাধারণ মানুষ এই সব বিজ্ঞাপনের কথা অন্ধভাবে বিশ্বাস করেন।
বেরিয়ে পড়ে আরও একটি লজ্জাজনক তথ্য। সাদা চামড়ার প্রতি এদেশের মানুষের অন্ধ আনুগত্য। বর্ণবৈষম্যের শিকড় যে ভারতীয়দের অন্তরের বহু গভীরে প্রেথিত তার প্রমাণ ঘরে ঘরে ফেয়ারনেস ক্রিমের উপস্থিতি। আর এই বৈষ্যমের ভিতের উপর দাঁড়িয়ে ফর্সা হওয়ার জাদুমলম বেচছে বহু সংস্থা। যারা এই ফেয়ারনেস ক্রিম কেনেন তারা হয়ত কোনদিনও ভেবে দেখেননি এই সংস্থাগুলির প্রতিশ্রুতি সঠিক হলে এতদিনে এদেশের অন্তত ৭০% মানুষের গায়ের রঙ ধবধবে ফর্সা হত।
তবে এভাবে অবাধ বর্ণবৈষম্যমূলক বিজ্ঞাপন বন্ধ করতে তৎপর হয়েছে এভাবে অবাধ বর্ণবৈষম্য রুখতে এবার তত্পর হয়েছে অ্যাডভার্টাইজিং স্ট্যান্ডার্ডস কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া (আসকি)। এটি একটি স্বয়ং শাসিত সংস্থা, যা মূলত ক্রেতা স্বার্থের নিয়ে কাজ করে। ফেয়ারনেস ক্রিমের বিরোধিতা করে সম্প্রতি তারা একটি নির্দেশিকা জারি করেছে ফেয়ারনেস ক্রিম, ফেস ওয়াস, সাবান প্রস্তুতকারী সংস্থা ও বিজ্ঞাপন এজেন্সিগুলির প্রতি। সেই নির্দেশিকা অনুযায়ী----
১. ফেয়ারনেস প্রস্তুতকারী কোনও সংস্থা এমন কোনও বিজ্ঞাপন তৈরি করতে পারবে না যেখানে গায়ের রঙের জন্যে বিভেদ করা হচ্ছে দেখানো হবে।
২. যাঁদের গায়ের রং কালো, তাঁরা জীবনে ব্যর্থ, অবসাদে ভুগছে, খারাপ দেখতে, অসহায় এমনটাও দেখানো যাবে না।
৩. পোস্ট প্রোডাকশন এফেক্টের সাহায্যে দেখানো যাবে না যে ফেয়ারনেস প্রোডাক্ট ব্যবহার করার পর নিমেষেই কেউ ধবধবে ফর্সা হয়ে গিয়েছে।
First Published: Thursday, June 12, 2014, 14:50