ফের এফডিআই-এর বিরোধিতায় ফেসবুকে সরব মমতা

ফের এফডিআই-এর বিরোধিতায় ফেসবুকে সরব মমতা

ফের এফডিআই-এর বিরোধিতায় ফেসবুকে সরব মমতা ভারতী গ্রুপের মাধ্যমে বেআইনিভাবে এ দেশের খুচরো বাজারে টাকা ঢালছে ওয়াল-মার্ট। ফেসবুকে এই অভিযোগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত ৫ সেপ্টেম্বর একই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে ভারতে ওয়াল-মার্টকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছিলেন সিপিআই সাংসদ এমপি অচ্যূতন। তারও আগে, সংসদে এ বিষয়ে বিবৃতি দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী আনন্দ শর্মা। ফলে, প্রশ্ন উঠেছে বহু আলোচিত একটি বিষয়ে এখন হঠাত্‍ ‍করে কেন সরব হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ?     

কেন্দ্রীয় সরকার সম্প্রতি খুচরো ব্যবসায়ে ৫১ শতাংশ বিদেশি বিনিয়োগের অনুমতি দিয়েছে। কিন্তু, তার অনেক আগে থেকেই ঘুরপথে আইন ফাঁকি দিয়ে ভারতে এই ব্যবসায়ে টাকা ঢালতে শুরু করেছে ওয়াল-মার্ট। এমনই অভিযোগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। ফেসবুকে তিনি বলেছেন, ২০১০ মার্চে ভারতী গ্রুপ তার অধীনস্থ সংস্থা সিডার সাপোর্ট সার্ভিসেস লিমিটেডে ৪৪৩ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে। একই সংস্থায় ৪৫৬ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে ওয়াল-মার্ট। পরে, সিডার সাপোর্ট সার্ভিসেস তার হাতে আসা বিদেশি বিনিয়োগের পুরোটাই ঢেলে দেয় খুচরো ব্যবসায়। মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, সিডারের কাছ থেকে ভারতীর শাখা সংস্থা ভারতী রিটেল লিমিটেড শেয়ার মারফত্‍ ৫১৩ কোটি টাকা পায়। অসুরক্ষিত ঋণ বাবদ সিডার ভারতী রিটেলকে দেয় আরও ৩৪৯ কোটি টাকা।

মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, কোনও কর্মী না থাকা সত্ত্বেও সিডার, ম্যানেজমেন্ট ফি বাবদ তাঁদের আয়ের হিসাব দেখিয়েছে। ফেসবুকে তিনি বলেছেন, ২০০৯ বিনিয়োগকারী সংস্থা থেকে রাতারাতি সিডার সাপোর্ট সার্ভিসেস লিমিটেডকে পরামর্শদাতা সংস্থায় রূপান্তরিত করা হয়। ১০০ শতাংশ বিদেশি বিনিয়োগে যাতে কোনও আইনি বাধা না থাকে সেজন্যই এই রূপান্তর। সিডারের হাতে আসা বিদেশি লগ্নির চূড়ান্ত গন্তব্য সম্পর্কে কেন্দ্রীয় সরকার খোঁজখবর নেয়নি বলেও মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ।      

কংগ্রেসের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার পর মুখ্যমন্ত্রী এই অভিযোগ তুললেও বিষয়টি নতুন নয়। মার্কিন বহুজাতিক ওয়াল-মার্টের বিরুদ্ধে ভারতের আইন ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগ আগেও উঠেছে। এ বিষয়ে গত ৫ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দেন সংসদের স্থায়ী কমিটির সদস্য সিপিআইয়ের রাজ্যসভার সাংসদ অচ্যূতন। তখনই তিনি ওয়াল-মার্টকে এ দেশে নিষিদ্ধ করার দাবি জানান। ভারতী গ্রুপের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন। সিডার সাপোর্ট সার্ভিসেসে ওয়াল-মার্টের কম্পালসারিলি কনভার্টেবল ডিবেঞ্চারের মাধ্যমে লগ্নি বিদেশি বিনিয়োগ আইন ভঙ্গ করেছে বলে অভিযোগ করেছিলেন অচ্যূতন। তিনি দাবি করেন, ওয়াল-মার্টের লগ্নির পুরোটাই বেআইনিভাবে সিডার, ভারতী রিটেলে বিনিয়োগ করে, যা সংস্থার অডিটেই ধরা পড়েছে। একই বিষয় উত্থাপিত হয় সংসদেও। ২০১১ মার্চে সংসদে কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী আনন্দ শর্মা বলেন, ভারতীতে ওয়ালমার্টের বিনিয়োগ সম্পর্কে আরবিআইয়ের কাছে কোনও তথ্য নেই। ফলে, বহুচর্চিত একটি বিষয়কে তুলে এনে হঠাত্‍ কেন মুখ্যমন্ত্রী ফেসবুকে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। 
 

First Published: Sunday, October 7, 2012, 20:47


comments powered by Disqus