সরকার শঙ্কুর পাশেই

সরকার শঙ্কুর পাশেই

সরকার শঙ্কুর পাশেইভাঙড় কাণ্ডে রাজ্যজুড়ে ধিক্কারের মধ্যেই আরাবুল ইসলাম ও শঙ্কুদেব পণ্ডার পাশে দাঁড়াল রাজ্য সরকার। অধ্যাপক নিগ্রহ ও হুমকির নিন্দা তো দূর অস্ত, শুক্রবার রাজ্য মন্ত্রিসভার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় শঙ্কুদেব পণ্ডার বক্তব্যকে সমর্থন করে বলেন, "অনেক অধ্যাপকই সিপিআইএমের হয়ে রাজনীতি করছেন। বিষয়টি নিয়ে ভাবার সময় এসেছে।"

খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, প্রাক্তন বিধায়ক আরাবুল ইসলামের পর এবার ফরমান-তালিকায় নবতম সংযোজন তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি)-এর রাজ্য সভাপতি শঙ্কুদেব পণ্ডা। ভাঙড় কাণ্ড নিয়ে রাজ্য জুড়ে প্রবল রাজনৈতিক বিতর্কের মধ্যেই এবার পশ্চিমবঙ্গের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে অধ্যাপনা করার নতুন `গাইডলাইন` তৈরি করে দিলেন শঙ্কুদেব।

কী সেই ফতোয়া?

বৃহস্পতিবার ভাঙড় কলেজের অধ্যাপিকা নিগ্রহে অভিযুক্ত দলীয় নেতা আরাবুল ইসলামের সমর্থনে বৃহস্পতিবার এলাকায় মিছিল করে তৃণমূল কংগ্রেস। মিছিলে নেতৃত্ব দেন দলের ছাত্র সংগঠনের সভাপতি শঙ্কুদেব পণ্ডা। মিছিল শেষে টিএমসিপি`র এক পথসভায় শঙ্কুদেব পণ্ডা বলেন, অধ্যাপকের মুখোশ পরে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে সিপিআইএম করা চলবে না।

সরকার শঙ্কুর পাশেই
আর কোনও অধ্যাপক যদি শাসক দলের ছাত্রসংগঠনের এই ফতোয়া অগ্রাহ্য করেন?

একেবারে আরাবুল ইসলামের কায়দাতেই তর্জনী উঁচিয়ে টিএমসিপি`র রাজ্য সভাপতির হুঁশিয়ারি, `তাহলে ইঞ্চিতে ইঞ্চি বুঝে নেব`!

ভাঙড় কলেজে প্রাক্তন বিধায়ক আরাবুল ইসলামের নেতৃত্বে অধ্যাপিকা নিগ্রহের ঘটনায় ইতিমধ্যেই রাজনৈতিকভাবে যথেষ্ট বেকায়দায় পড়ছে তৃণমূল। এই পরিস্থিতিতে কেন হঠাত্‍ সিপিআইএম বিরোধিতার নামে কার্যত গোটা অধ্যাপক সমাজের পায়ে দলতন্ত্রের শৃঙ্খল পরাতে তত্‍পর হলেন তৃণমূলের এই ছাত্রনেতা? রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ গোষ্ঠী সমীকরণ এর অন্যতম কারণ। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সঙ্গে শঙ্কুদেবের সম্পর্ক যথেষ্ট `মধুর`। সম্প্রতি একাধিক ইস্যুতে দু`জনের সংঘাত প্রকাশ্যে এসেছে। সম্প্রতি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিতে অডিট`কে কেন্দ্র করে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের শিক্ষামন্ত্রীকে ঘেরাওয়ের ঘটনায় এই তিক্ততা আরও বেড়েছে। সাম্প্রতিক অতীতে কার্টুন কাণ্ডে অধ্যাপক অম্বিকেশ মহাপাত্রের গ্রেফতারির পর যথেষ্ট সংযত প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী। ভাঙড় কলেজে অধ্যাপিকা নিগ্রহের ঘটনা নিয়েও আরাবুলের অবস্থানকে সমর্থন করেননি পেশায় অধ্যাপক ব্রাত্যবাবু। এই পরিস্থিতিতে দলীয় নেতৃত্বের `গুড বুক`-এ থাকতেই শঙ্কুদেব পণ্ডা আগ বাড়িয়ে আক্রমণাত্মক সিপিআইএম বিরোধিতার লাইনে হেঁটেছেন বলে মত, রাজনৈতিক মহলের একাংশের।



First Published: Saturday, April 28, 2012, 10:01


comments powered by Disqus