দিল্লিতে ইজরায়েলি দূতাবাসের গাড়িতে বিস্ফোরণ, আশঙ্কা নাশকতার

দিল্লিতে ইজরায়েলি দূতাবাসের গাড়িতে বিস্ফোরণ, আশঙ্কা নাশকতার

দিল্লিতে ইজরায়েলি দূতাবাসের গাড়িতে বিস্ফোরণ, আশঙ্কা নাশকতারসোমবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের কাছে আচমকা বিস্ফোরণ ঘটল ইজরায়েলি দূতাবাসের একটি গাড়িতে। এই ঘটনায় গাড়ির তিন যাত্রী গুরুতর আহত হয়েছেন। এঁদের মধ্যে রয়েছেন এক ইজরায়েলি কূটনীতিক এবং দূতাবাসের এক মহিলা কর্মী। বিস্ফোরণের তীব্র অভিঘাতে ক্ষতিগ্রস্থ হয়, আশপাশের আরও কয়েকটি গাড়ি। এই ঘটনার জেরে ফের রাজধানীর রেসকোর্স রোড ও সংলগ্ন এই 'হাই সিকিউরিটি জোন'-এর নিরাপত্তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।

প্রাথমিকভাবে ৭ রেসকোর্স রোডের মাত্র ৫০০ মিটার দূরে ইজরায়েলি দূতাবাসের এই গাড়িটিতে বিস্ফোরণের কারণ হিসেবে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত সিএনজি গ্যাসের সিলিন্ডারে আগুন লাগাকেই চিহ্নিত করে দিল্লি পুলিস। কিন্তু পরে গাড়ির ভিতরে বিস্ফোরকের উপস্থিতির প্রমাণ মেলে। পাশাপাশি প্রত্যক্ষদর্শীদের একাংশের জবানিতে উঠে আসে 'অন্য তথ্য'। বেলা আড়াইটে নাগাদ মোটর সাইকেল আরোহী দুই যুবক চলন্ত '১০৯ সি ডি ৩৫' নম্বরের ইজরায়েলি দূতাবাসের গাড়িটিকে ধাওয়া করে এসে ভিতরে কিছু ছুড়ে দিয়েছিল বলে একটি সূত্র জানিয়েছে। যদিও পরে দিল্লি পুলিসের তরফে ইঙ্গিত দেওয়া হয়, গাড়ির গায়ে 'স্টিকার বম্ব' জাতীয় কোনও বিস্ফোরক আটকানো হয়েছিল। ঘটনার পরই দিল্লি জুড়ে জারি করা হয় 'রেড অ্যালার্ট'।

নয়াদিল্লির ইজরায়েলি দূতাবাসের মুখপাত্র ডেভিড গোলফার্ড, সে দেশের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র ইগাল পালমোর এবং বিদেশমন্ত্রী আভিগদর লিবারম্যানের বক্তব্যেও শোনা গিয়েছে এই 'নাশকতার তত্ত্ব'। এদিনই জর্জিয়ার রাজধানী টিবলিসে ইজরায়েলি দূতাবাস চত্ত্বর থেকে একটি শক্তিশালী বোমা উদ্ধার হয়। নিরাপত্তা রক্ষীরা সজাগ থাকায় বোমাটি সময়মতো নিষ্ক্রিয় করা সম্ভব হয়। দু'টি ঘটনার মধ্যে নিবিড় যোগসূত্র রয়েছে বলেই মনে করছে ইজরায়েল সরকার।
দিল্লিতে ইজরায়েলি দূতাবাসের গাড়িতে বিস্ফোরণ, আশঙ্কা নাশকতার
ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানইয়াহু এদিন দিল্লিতে দূতাবাসের গাড়িতে বিস্ফোরণ এবং জর্জিয়ায় হামলার চেষ্টার পিছনে জঙ্গি সংগঠন হিজবুল্লা এবং তাদের 'মদতদাতা' ইরানের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন। প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি ইজরায়েলি গুপ্তচর সংস্থার গোপন অপারেশনে নিহত হয়েছিলেন জঙ্গি সংগঠন হিজবুল্লার অন্যতম প্রধান নেতা ইমাদ মুঘনিয়ে। এই ঘটনার চতুর্থ বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে সম্ভাব্য জঙ্গি হামলা ঠেকাতে গত শনিবার বিভিন্ন দেশের ইজরায়েলি দূতাবাসগুলির উদ্দেশে সতর্কবার্তা জারি করেছিল বেঞ্জামিন নেতানইয়াহু সরকার।

২৬/১১ সন্ত্রাসের সময় তাজ প্যালেস, ওবেরয় ট্রাইডেন্টের পাশাপাশি ভারতের অন্যতম ইহুদি-কেন্দ্র নরিম্যান হাউসও লস্কর-এ-তৈবার নিশানা হয়েছিল। ফলে আজকের ঘটনার পিছনে পাক মদতপুষ্ট কোনও ইসলামি জঙ্গিগোষ্ঠীর হাত থাকার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছে না কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। ইতিমধ্যেই নর্থ ব্লকের তরফে ইজরায়েলের বিদেশমন্ত্রকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরম ইজরায়েলের বিদেশমন্ত্রী আভিগদর লিবারম্যানেকে তদন্তে সমস্ত রকম সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।




First Published: Monday, February 13, 2012, 21:07


comments powered by Disqus