সমর্থন প্রত্যাহারের হুমকি ডিএমকের, কমতে পারে পেট্রোলের দাম

সমর্থন প্রত্যাহারের হুমকি ডিএমকের, কমতে পারে পেট্রোলের দাম

সমর্থন প্রত্যাহারের হুমকি ডিএমকের, কমতে পারে পেট্রোলের দামপেট্রোলের দাম না-কমালে সরাসরি কেন্দ্রীয় সরকারের ওপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহারের হুমকি দিল ডিএমকে। বুধবার ডিএমকে সুপ্রিমো করুণানিধি বলেন, "প্রয়োজনে সমর্থন প্রত্যাহার করতে দু`বার ভাববে না তাঁর দল।"  শুধু কাগুজে হুমকি নয়, পেট্রোলের দামবৃদ্ধির প্রতিবাদে এদিন তামিলনাড়ু জুড়ে বিক্ষোভ কর্মসূচিও পালন করছে করুণানিধির দল।

লোকসভায় তৃতীয় বৃহত্তম ইউপিএ শরিক ডিএমকে'র সাংসদ সংখ্যা ১৮। ফলে শেষ পর্যন্ত দ্রাবিড়ভূমের এই প্রভাবশালী রাজনৈতিক দল কংগ্রেসের সঙ্গে ৮ বছরের গাঁটছড়া ছিন্ন করলে সংসদীয় সংখ্যাতত্ত্বে যথেষ্ট বেকায়দায় পড়বে মনমোহন সরকার। যদিও রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, গত বছরের বিধানসভা ভোটে ভরাডুবির পর দলের হৃত জনভিত্তি পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে পেট্রোলের মূল্যবৃদ্ধির ইস্যুকে হাতিয়ার করতে চাইছেন অশীতিপর 'কলাইঙ্গার'। ইতিমধ্যেই টুজি স্পেকট্রাম কেলেঙ্কারি, জমি দুর্নীতি-সহ একাধিক বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছে করুণানিধির পরিবার। এই পরিস্থিতিতে চেন্নাইয়ের কুরসি হাতছাড়া হওয়ার পর তিনি কেন্দ্রে ক্ষমতার বৃত্ত থেকে দূরে সরতে চাইবেন না বলেই এই অংশের অভিমত।

অন্যদিকে এদিনই পেট্রোলের দাম লিটারপ্রতি ২ টাকা পর্যন্ত কমতে পারে বলে ইঙ্গিত মিলেছে। রাষ্ট্রায়ত্ত তেল কোম্পানিগুলির তরফে এমনই জানানো হয়েছে। সম্প্রতি সংস্থাগুলির ত্রৈমাসিক হিসাব প্রকাশিত হলে দেখা যায়, লাভের পরিমাণ বেশ কয়েকগুণ বেড়েছে তাদের। এর পরই পেট্রোলের দাম বাড়ানোর কথা ভাবনাচিন্তা করা হচ্ছে। পেট্রোলের নতুন দাম ১ জুন থেকেই কার্যকর হতে পারে।

গত সপ্তাহেই পেট্রোলের দাম লিটারপিছু সাড়ে ৭ টাকা বাড়িয়েছিল রাষ্ট্রায়ত্ত তেল কোম্পানিগুলি। একধাক্কায় এতটা দামবৃদ্ধিতে দেশজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। ৩১ মে, ভারত বনধের ডাক দিয়েছে এনডিএ। ওই দিনই বিক্ষোভ সমাবেশের কর্মসূচি নিয়েছে বামেরা। সরকারের যুক্তি ছিল, পেট্রোলের দামবৃদ্ধিতে তাদের করণীয় কিছুই নেই। কারণ, ইতিমধ্যেই পেট্রোলকে ইতিমধ্যেই বিনিয়ন্ত্রণ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। দাম বাড়ার কারণ হিসেবে বলা হয়েছিল, টাকার দাম পড়ে যাওয়ায় অপরিশোধিত তেল আমদানির খরচ বেড়ে গিয়েছে। যুক্তি দেওয়া হচ্ছিল, বর্তমান আর্থিক পরিস্থিতিতে পেট্রোপন্যে ভর্তুকি দেওয়া একপ্রকার অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সমর্থন প্রত্যাহারের হুমকি ডিএমকের, কমতে পারে পেট্রোলের দাম

কিন্তু, সপ্তাহ ঘুরতে না-ঘুরতেই সম্পূর্ণ এক পৃথক ছবি সামনে চলে এল। ৩টি রাষ্ট্রায়ত্ত তেল কোম্পানিরই লাভের পরিমাণ গত আর্থিক বছরের শেষ ৩ মাসের হিসেবে কয়েকগুন বেড়েছে। হিসেব বলছে, ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশনের এই সময়ের মোট মুনাফার পরিমাণ বেড়ে হয়েছে ১২,৬৭০ কোটি টাকা। যা ২০১০-১১ সালের শেষ ত্রৈমাসিকের তুলনায় ৩ গুণ বেশি। ২০১১-১২ ডিসেম্বর থেকে মার্চ এই সময়ে হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়ামের লাভের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪,৬৩১ কোটি টাকা। যা তার আগের আর্থিক বছরের তুলনায় ৪ গুণ বেশি। ওই সময়ে ভারত পেট্রোলিয়ামের লাভের পরিমাণ তার আগের আর্থিক বছরের তুলনায় দ্বিগুণ বেড়েছে। বেড়ে হয়েছে ৩,৯৬৩ কোটি টাকা। তবে লাভের খতিয়ানে সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে ওএনজিসি। গত আর্থিক বছরে তাদের নিট মুনাফা বেড়ে হয়েছে ৩৫,১২৩ কোটি টাকা।

লাভের অঙ্কে ওএনজিসি মুকেশ অম্বানির রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজকেও পিছনে ফেলে দেশের এক নম্বর লাভজনক সংস্থায় পরিণত হয়েছে। লাভের অঙ্কে এই বৃদ্ধিতে এবার তাই পেট্রোলের দাম সপ্তাহ ঘুরতে না-ঘুরতেই কমানোর কথা ভাবছে রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাগুলি। সূত্রের খবর লিটারপ্রতি ২ টাকা পর্যন্ত দাম কমতে পারে পেট্রোলের। পয়লা জুন থেকেই কার্যকর হতে পারে নতুন দাম। আর তেমনটা হলে প্রবল চাপের মধ্যেও, কিছুটা স্বস্তি পাবে সরকার। বিরোধীরাও তাকে নিজেদের প্রতিবাদ আন্দোলনের সাফল্য হিসেবে তুলে ধরতে পারবে।



First Published: Wednesday, May 30, 2012, 14:11


comments powered by Disqus