Last Updated: December 25, 2011 16:27

এক দিকে অর্থনৈতিক অস্থিরতা, অন্য দিকে সেই সমস্যা সমাধানে রাজনীতিকদের উপরে অনাস্থা! এই জোড়া অভিঘাতে বিশ্ব জুড়ে বিশেষ করে ইউরোপে অনিশ্চয়তায় ভুগছেন বিনিয়োগকারীরা। ব্যাঙ্কগুলি ইতিমধ্যেই যে ঋণ দিয়েছে সেই ঋণ মেটাতে সংশ্লিষ্ট সরকার তাদের সাহায্য না করলে ইউরোপ এবং আমেরিকায় ব্যাঙ্কিং পরিষেবা দ্বিতীয়বার সঙ্কটের মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিনিয়োগকারীরা। সব মিলিয়ে এই মুহূর্তে দুনিয়াজুড়ে গভীর সঙ্কটে অর্থনীতি। ভারতের উপরেও তার প্রভাব স্পষ্ট।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপে অর্থনীতির শ্লথ গতি চিন্তায় রেখেছে বিনিয়োগকারীদের। ফলে দুনিয়াজুড়ে সঙ্কটের মুখে অর্থনীতি। তার প্রভাব এড়াতে পারেনি ভারতও। এখানকার বাজার থেকে দ্রুত টাকা তুলে নিচ্ছেন দেশি এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীরা। সেনসেক্সের নিম্নমুখী সূচকেই সেই ছবিটা স্পষ্ট। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায় জানিয়ে দিয়েছেন, ইউরোপ এবং আমেরিকার অর্থনীতির প্রভাব ভারতের পক্ষে এড়ানো সম্ভব নয়।
বিশ্ববাজারে জিনিসপত্রের দাম বাডলে তার ফল ভারতেও এসে পড়বে। ফলে একদিকে আরো একটি অর্থনৈতিক মন্দার আশঙ্কা অন্যদিকে দ্রব্যমূল্যবৃদ্ধি এবং মুদ্রাস্ফীতির সাঁড়াশি চাপ--এই দুয়ের জেরে রীতিমতো আশঙ্কিত ভারতীয় অর্থনীতি।

পরিস্থিতি বদলানোর আশু সম্ভাবনা দেখছে না আন্তর্জাতিক মুদ্রাভাণ্ডার। নিম্নগামী অর্থনৈতিক বিকাশ এবং ঋণ গ্রহণের এক বিপজ্জনক অধ্যায়ে বিশ্ব অর্থনীতি নতুন করে প্রবেশ করেছে বলে তাঁদের দাবি।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিবিদ এবং কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কও খুব একটা আশার আলো দেখাতে পারছেন না। অর্থনীতিবিদদের প্রত্যাশা ছাপিয়ে শুধু সেপ্টেম্বরেই লক্ষাধিক চাকরির সুযোগ তৈরি করেছিল ওয়াশিংটন। শ্রম দফতরের হিসাব অনুযায়ী, তবুও বেকারির হার থমকে ছিল ৯ শতাংশের উপরে। বাণিজ্য দফতরের হিসাব, গত এপ্রিল থেকে জুনের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক বৃদ্ধির হার ছিল ১.৩ শতাংশ।
ইউরোজোনের পরিস্থিতি একটু ভাল হলেও নির্মাণশিল্পের অবস্থা বেশ টালমাটাল। গ্রিস, পর্তুগাল, আয়ারল্যান্ডের কপালে আন্তর্জাতিক সাহায্য জুটেছে বটে, কিন্তু তাদের মতোই ক্রেডিট রেটিংয়ে পতন ঘটেছে ইতালি, স্পেন, সাইপ্রাসের। এই বছরেই ক্রেডিট রেটিংয়ে পতন ঘটেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেরও। ঋণে জর্জরিত গ্রিসকে দ্বিতীয়বার বেলআউট করানোর জন্য গত জুলাইয়েই সহমত হয়েছিলেন ইউরোজোনের নেতৃত্ব। এবং `ইউরোপিয়ান ফিনানসিয়্যাল স্টেবিলিটি ফান্ড`-কে এই ধরনের অর্থনৈতিক সাহায্যের ব্যাপারে আরও ক্ষমতা দেওয়ারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু গ্রিসকে বেলআউট করানোর পর `ইউরোপিয়ান ফিনানসিয়্যাল স্টেবিলিটি ফান্ড`-এর হাতে যে অর্থ পড়ে আছে, তার পরিমাণ সামান্যই।
এই অবস্থায় বিশ্ব অর্থনীতির চেহারায় যে খুব দ্রুত পরিবর্তন ঘটবে, এমন কথা বলছেন না অতি বড় আশাবাদীও ।
First Published: Sunday, December 25, 2011, 16:27