Last Updated: January 17, 2012 09:13

২০১০ সালের ১৭ জানুয়ারি প্রয়াত হন তিনি। মৃত্যুর ২ বছর পরেও, শুধু সিপিআইএম দলের কাছেই নয়, রাজ্য ও জাতীয় রাজনীতিতে তাঁর শূণ্যস্থান পূরণ হয়নি।
এপ্রিল মাসে কেরলের কোজিকোড়ে সিপিআইএম-এর ২০ তম পার্টি কংগ্রেস। দলের প্রতিষ্ঠার পর থেকে এই প্রথম কোনও কংগ্রেস হচ্ছে যেখানে জ্যোতি বসু সম্পূর্ণ অনুপস্থিত। কোয়েম্বাটোরে উনিশতম পার্টি কংগ্রেসেও শারীরিক অসুস্থতার কারণে ছিলেন না তিনি। তবে তাঁর বার্তা চালানো হয়েছিল। দৈনন্দিন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অনুপস্থিত থাকলেও সিপিআইএম সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, পলিটব্যুরো ও কেন্দ্রীয় কমিটি দলের দুই শীর্ষ জায়গাতেই জ্যোতি বসু থাকবেন। থাকবেন পথ প্রদর্শক হিসেবে। মঙ্গলবার কলকাতায় বসেছে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক। যেখানে মূল আলোচ্য, কোজিকোড় পার্টি কংগ্রেসের রাজনৈতিক দলিল, অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা করা হবে মতাদর্শগত খসড়া দলিল নিয়েও। নির্বাচনী বিপর্যয়ের পর, এই দুই খসড়া দলিলই দলের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিশ্চিতভাবে এখন দলের অন্দরে বারবার অনুভূত হচ্ছে জ্যোতি বসুর অনুপস্থিতি। শুধু সিপিআইএম দল নয়, তাঁর শূণ্যস্থান এখনও অপূরণীয় জাতীয় রাজনীতিতেও।

জাতীয় রাজনীতি নিয়মমাফিক চললে, ২০১৪ সালে লোকসভা নির্বাচনের মুখোমুখি হবে দেশ। একদিকে কংগ্রেসের চরম উদারনীতি এবং আর্থিক সংস্কারের পথ, অন্যদিকে বিজেপির সাম্প্রদায়িক চরিত্র, দুয়ের থেকে দূরত্ব বজায় রাখাই বামেদের রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতা। এই বাধ্যবাধকতার সামনে দল কোন পথে হাঁটবে তা ঠিক করা অত্যন্ত কঠিন কাজ। ১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদধ্বংসের পর প্রায় একইরকমের রাজনৈতিক মোড়ের সামনে দাঁড়িয়েছিল বামেরা। তখন হরকিষেণ সিং সুরজিত্ এবং জ্যোতি বসু অকংগ্রেসি-অবিজেপি তৃতীয় বিকল্পের ধারণা ভারতীয় রাজনীতিতে আনেন। ১৯৯৬ সালে যে রাজনৈতিক তত্বের সাফল্য দেখেছিল দেশ। দুদশকের বেশি সময় পর প্রায় একইরকমের রাজনৈতিক মোড়ের সামনে দাঁড়িয়ে বামেরা। বামেদের সামনে তৃতীয় বিকল্প তৈরি করা ছাড়া অন্য বিকল্প নেই। কিন্তু, তার নেতৃত্ব দেবেন কে? এখন সেটাই বড় প্রশ্ন। আর সেখানেই মৃত্যুর দুবছর পরেও জাতীয় রাজনীতিতে তাঁর অনুপস্থিতি অনুভূত হচ্ছে।
First Published: Wednesday, January 18, 2012, 10:26