Last Updated: March 12, 2014 21:44
দিল্লির রামলীলা ময়দানে জনতন্ত্র র্যালিতে এলেনই না আন্না হাজারে। যদিও তাঁর মুখপাত্র জানিয়েছেন, আন্না অসুস্থ থাকায় এ দিনের সভায় যেতে পারেননি। কিন্তু তাঁর অনুপস্থিতি নিয়ে রাজনৈতিক মহলের প্রশ্ন, শুধুই কি শরীর খারাপ থাকার জন্য এ দিন অনুপস্থিত রইলেন তিনি? শোনা যাচ্ছে, আন্নার অনুগামীরাই চাননি, কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আন্নার নাম জড়িয়ে পড়ুক। তাতে তাঁর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন তাঁরা। তা ছাড়া, এ দিনের সভায় নামমাত্র লোকের মাঝখানে গিয়ে উপস্থিত হলে আন্না-ম্যাজিক নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুবিধা পেয়ে যেত বিরোধী শিবির। পর্যবেক্ষকদের ধারণা, আজ অনুপস্থিত থেকে সেই অস্বস্তি এড়ানোর চেষ্টা করলেন আন্না।
জনতন্ত্র র্যালি-তে এলেন না আন্না হাজারে। তাঁর মুখপাত্র সুনীতা গোদারা জানালেন, অসুস্থ থাকায় এ দিনের সভায় হাজির থাকতে পারেননি আন্না। কিন্তু সভায় হাজার দশেক লোক হলে তিনি শরীর খারাপ নিয়েও হাজির হতেন।
তা হলে কি, মঙ্গলবার রামলীলা ময়দানে নামমাত্র লোক হওয়ার জন্যই সভা এড়িয়ে গেলেন আন্না হাজারে? রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ধারণা অন্তত তাই-ই। তাঁরা মনে করছেন, এ দিনের ফাঁকা সভায় তিনি গেলে যে আন্না-ম্যাজিক নিয়ে এত চর্চা, সেই ম্যাজিক নিয়েই প্রশ্ন উঠে যেত। প্রশ্ন তোলার সুবিধা পেয়ে যেত কেজরিওয়াল শিবির। নিজের লার্জার দ্যান লাইফ ভাবমূর্তি রক্ষা করতেই এ দিনের ফাঁকা রামলীলা ময়দান এড়িয়ে গেলেন তিনি। মমতা ব্যানার্জি এমনকী, আন্না হাজারেও সম্ভবত মনে করেছিলেন প্রবীণ গান্ধীবাদীর নামেই ভর্তি হয়ে যাবে জনতন্ত্র র্যালি।
কিন্তু বাস্তবে তা না হওয়ায় ইতিমধ্যেই আন্না-ম্যাজিক নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু হয়েছে। আন্না শিবিরের অন্দরে কান পাতলে আরও একটা তাত্পর্যপূর্ণ কথা শোনা যাচ্ছে। লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসকে সমর্থন করলে আন্নার অরাজনৈতিক ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হওয়ার আশঙ্কা করছিলেন তাঁর দলের লোকজন। যে দিন থেকে তিনি তৃণমূল এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সমর্থন করার কথা বলেছেন, সেদিন থেকেই দলের অন্দরে ক্ষোভ-প্রতিবাদ দানা বাঁধছিল।
বরুণ বিশ্বাসের পরিবারের সদস্য-সহ মানবাধিকার কর্মীদের সাত জনের প্রতিনিধিদল মঙ্গলবার আন্না হাজারের সঙ্গে দেখা করে একটি চিঠি দেন। রাজ্যে একের পর এক খুন-ধর্ষণের ঘটনায় তৃণমূল এবং রাজ্য সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে আন্নাকে এ দিনের সভায় না যাওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে ওই চিঠিতে। ওই আবেদনও শেষ মুহূর্তে আন্নার সিদ্ধান্ত বদলের একটা বড় কারণ হয়ে থাকতে পারে বলে ওয়াকিবহালদের ধারণা। টিম আন্না সূত্রে খবর, এরপর থেকে কোনও রাজনৈতিক দলের প্রচারেই সম্ভবত আন্না হাজারে আর যাবেন না। এই অবস্থায় সম্ভবত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বুঝতে পারছেন, আন্নার নাম নিয়ে সর্বভারতীয় ভোট-রাজনীতির বৈতরণী পার হওয়া খুব একটা সম্ভব নয়। আন্নার অনুপস্থিতির কারণ হিসেবে আরও একটা যুক্তি দেখতে পাচ্ছেন পর্যবেক্ষকরা। বিজেপি এবং কংগ্রেসও সম্ভবত এ দিনের সভায় না থাকার ব্যাপারে কোনও ভূমিকা পালন করে থাকতে পারে। যদিও, মমতা নিজে এ সবে আমল দিতে নারাজ।
First Published: Thursday, March 13, 2014, 18:02