৪৫ বছর ধরে হাসপাতালে ভর্তি পেলের দেশের পাউলো

৪৫ বছর ধরে হাসপাতালে ভর্তি পেলের দেশের পাউলো

Tag:  Paulo Machado
৪৫ বছর ধরে হাসপাতালে ভর্তি পেলের দেশের পাউলো৪৫ বছর ধরে তিনি ভর্তি হাসপাতালে। হাসপাতালের বিছানাই তাঁর কাছে ঘর হয়ে গিয়েছে। ঘরের ঠিকানা জিজ্ঞাসা করলে কিংবা লিখতে হলে তিনি তাঁর হাসপাতালের ঠিকানাই লেখেন। আর লিখবেন নাই বা কেন। সাড়ে চার দশক ধরে তিনি তো হাসপাতালেই ভর্তি হয়ে আছেন। তিনি পাউলো মাচাডো।

পেলের দেশে ব্রাজিলের বাসিন্দার দিন, রাত, যুগ, জীবন সব কিছুই কাটছে হাসপাতালে, রোগিদের সঙ্গে, ডাক্তার-নার্সদের সঙ্গে।

সেই কোন ছোটবেলা পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হয়ে ঘরের লোকেরা হাসপাতালে ভর্তি করেছিল। ডাক্তাররা তখন বলেছিল কিছুদিন থাকতে হবে। সেই দিনটা কখন সপ্তাহ পেরিয়ে মাস, মাস পেরিয়ে বছর, বছর পেরিয়ে যুগ, আর যুগ পেরিয়ে হয়ত জীবন হতে চলেছে সেটা খেয়ালই ছিল না কারও।

সাও পাওলোর এই হাসপাতালে একের পর রোগিরা এসেছেন, কেউ সেরেছেন, কেউ হয়তো জীবনযুদ্ধে হেরেছেন, কিন্তু সেই একই বিছানায় জীবনযুদ্ধ লড়েই চলেছেন পাউলো। লড়তে লড়তে অনেকে যখন হাল ছেড়ে দেন, সেখানেই আবার নতুন করে লড়ার রসদ খুঁজেছেন।

হাসপাতালের নিয়ম মেনে ভিজিটিং আওয়ার্সটাতেই শুধু পরিবার, বন্ধু, কিংবা বাইরের লোকের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পেতেন পাউলো। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্য তাঁর জন্য নিয়ম বদলাতে চেয়েছিল, শুধু তাঁর জন্য ভিজিটিং আওয়ার্সের সময় ২৪ ঘণ্টা করে দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু নিয়ম ভাঙতে রাজি হননি পাউলো। এখনও শুধু ভিজিটিং আওয়ার্সেই বাইরের লোকদের সঙ্গে দেখা করেন তিনি।
পাউলোর যখন দুদিন বয়স, তখনই তাঁর মা মারা যান। কিছু দিন পর পাউলোর পোলিও আক্রান্ত হন। ব্রাজিলে তখন পোলিও রোগের প্রকোপ খুব বেড়েছে। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রথম কটা দিন বেড পাননি।

হাসপাতালের বেডে শুয়ে শুয়ে অনেক কাজ করছেন পাওলো। হুইলচেয়ারে শুয়ে কম্পিউটারে কার্টুন বানান, মানে পেশায় তিনি কম্পিউটার অ্যানিমেটর। এখন নিজের জীবন যুদ্ধ নিয়ে একটা টেলিভিশন সিরিজের কাজে ভীষণ ব্যস্ত।

পাউলো বলেন, `আমি তো আর ফুটবল খেলতে পারি না, তাই মাথা খাটানোর কাজটার জন্য একটু বেশি সময় পাই। তাই কম্পিউটারের কাজটাই খুব ভালবাসি`।

হাসপাতালে সময় কাটান কি করে! জবাবে পাওলো বলেন, কী বলেন কী এটাই তো আমার ঘর। ঘরে সময় কাটানোর কত উপায়!

First Published: Monday, August 5, 2013, 18:04


comments powered by Disqus