Last Updated: January 17, 2012 15:26

জটিলতার চরমে কংগ্রেস-তৃণমূল জোট। কোনও রাখঢাক না-করে মঙ্গলবার মহাকরণে দাঁড়িয়েই মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলেন কংগ্রেস নেতা তথা রাজ্যের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ প্রতিমন্ত্রী মনোজ চক্রবর্তী। রাজ্যে 'ডিকটেটরশিপ' চলছে বলে ক্ষোভ উগরে দেন তিনি। নিজের দলের নেতা মানস ভুঁইঞাকেও রেয়াত করেননি মনোজবাবু। তাঁর বিরুদ্ধে দ্বিচারিতার অভিযোগ আনেন মুর্শিদাবাদের এই কংগ্রেস নেতা।
প্রসঙ্গত, গত কাল মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণের পর মনোজবাবুর কাছ থেকে দুটি দফতর ছিনিয়ে নেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এতে ক্ষুব্ধ মনোজবাবু মঙ্গলবার মহাকরণে দাঁড়িয়েই তৃণমূল নেতৃত্বাধীন রাজ্য সরকার ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তুলোধোনা করেন। বলেন, কাজ করা নয়, প্রতিহিংসা চিরতার্থ করাই এই সরকারের প্রাথমিক লক্ষ। মুখ্যমন্ত্রীর পারফরমেন্স নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, রাজ্যে 'ডিকটেটরশিপ' চলছে। মন্ত্রিসভা পুনর্গঠনের আগে মুখ্যমন্ত্রী তাঁর সঙ্গে আলোচনা করার সৌজন্যটুকু দেখাননি বলে অভিযোগ করেন তিনি। ইস্তফাপত্র দেখিয়ে তিনি বলেন, শুধু সই করা আর তারিখ বসানো বাকি। গোটা ঘটনাটি নিয়ে প্রণব মুখোপাধ্যায় ও অধীর চৌধুরীর সঙ্গে আলোচনা করেই তিনি পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন মনোজবাবু। দিন কয়েকের মধ্যে পুরো ঘটনা এআইসিসিকে জানাবেন তিনি। হাইকমান্ড তাঁকে পদত্যাগ করার অনুমতি দিলেই ইস্তফাপত্র পেশ করবেন। তবে মানসিক ভাবে তিনি এই মন্ত্রিসভার সঙ্গে থেকে কাজ করতে পারবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন মনোজবাবু।
এদিন দলীয় নেতা তথা রাজ্য মন্ত্রিসভার সদস্য মানস ভুঁইঞার বিরুদ্ধেও বিষোদ্গার করেন মনোজ চক্রবর্তী। তিনি বলেন, মানসবাবু দুমুখো নীতি নিয়ে চলছেন। তিনি সরাসরি অভিযোগ করেন, মানসবাবু তাঁর কাছে তৃণমূলী মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে এক কথা বললেও, মুখ্যমন্ত্রীর সামনে অন্যকথা বলেন তিনি। তিনি আরও জানান, মানসবাবুর সঙ্গে কথা বলেই তাঁর ক্ষমতাহ্রাস করা হয়েছে বলে মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে জানিয়েছেন।
এর পর শাসকজোটের দুই শরিকের তুমুল বাদানুবাদ শুরু হয়েছে। তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে দুপক্ষই। মনোজবাবুর বক্তব্যের সমর্থনে বহরমপুরের সাংসদ ও মুর্শিদাবাদ জেলা কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, কংগ্রেসী মন্ত্রীদের চূড়ান্ত হেনস্থা করা হচ্ছে। তাঁদের ক্রমশ অপ্রাসঙ্গিক করে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। রাজ্যে কংগ্রেসকে মুছে ফেলার চেষ্টা চালাচ্ছে তৃণমূল। ওদিকে সদ্য মন্ত্রিত্ব পাওয়া তৃণমূলের অরূপ বিশ্বাস মনোজবাবুর বক্তব্যকে 'পাগোলের চিত্কার' বলে কটাক্ষ করেন। পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, এসব বলতে হলে, ইস্তফা দিয়ে তার পর বলুন মনোজবাবু।
মনোজবাবুর এদিনের সাংবাদিক বৈঠকের পর কংগ্রেস-তৃণমূল জোটে জটিলতার সঙ্গে সঙ্গেই কংগ্রেসের অন্দরের ফাটল স্পষ্ট হল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
First Published: Tuesday, January 24, 2012, 17:39