Last Updated: August 21, 2013 10:15

রাতভর বৃষ্টি হয়েছে হুগলির বিস্তীর্ণ এলাকায়। গতকাল সন্ধ্যায় মুষলধারে বৃষ্টির পর, রাতে বৃষ্টির পরিমাণ সামান্য কমে। তবে রাত থেকে সকাল পর্যন্ত ঝিরঝিরে বৃষ্টি হয়েই চলেছে। গতকাল সন্ধ্যায় ঝোড়ো হাওয়ায় হুগলির চণ্ডীতলায় বেশ কয়েকটি গাছ উপড়ে পড়ে। আরামবাগের পুরশুরা, খানাকুলের বিস্তীর্ণ এলাকায় জল জমে গেছে। বেশিরভাগ চাষযোগ্য জমি জলের তলায় চলে গেছে। ছোট ছোট ডিঙিতে যাতায়াত করছেন মানুষ। দামোদর, দ্বারকেশ্বর নদীর জল বাড়ছে।
গতকাল দিনভর বৃষ্টির পর আজ ফের বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে উত্তর চব্বিশ পরগনার বিস্তীর্ণ এলাকা। জল দাঁড়িয়ে গেছে বিটি রোড, কল্যাণী হাইওয়ে, যশোহর রোডসহ একাধিক রাস্তায়। মোটের ওপর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। তবে যেভাবে বৃষ্টি হচ্ছে তাতে রেল লাইনে জল দাঁড়িয়ে ব্যাহত হতে পারে ট্রেন চলাচল। আজ স্কুল, কলেজ বন্ধ হওয়ায় কিছুটা হলেও রেহাই মিলেছে। ফলে বাড়িতে বৃষ্টির আমেজ কাটাচ্ছেন অনেকে। খুব প্রয়োজন ছাড়া সকালে রাস্তায় বের হননি এলাকাবাসী।
রাতে একটু রেহাই দিলেও আজ সকাল থেকেই ফের মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয়েছে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার বিভিন্ন এলাকায়। ডায়মণ্ডহারবার, বারুইপুর, সোনারপুর, মগরাহাট, গোসাবা, জয়নগর, বাসন্তীসহ বিস্তীর্ণ এলাকা এখনও জলমগ্ন। কয়েক বিঘে জমিতে ধান রোওয়া হয়েছিল। কিন্তু বৃষ্টিতে জলের তলায় চলে গেছে ধানগাছগুলি। জল না সরলে নষ্ট হয়ে যাবে সেগুলি। বারুইপুরের কল্যাণপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় বৃষ্টিতে ভেঙে পড়েছে বেশকয়েকটি মাটির বাড়ি। বারুইপুরের এগারো নম্বর ওয়ার্ডে জল জমে রয়েছে। রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। সুন্দরবনে ব্যাহত হয়েছে ফেরি সার্ভিস। শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখায় ট্রেন পরিষেবা এখনও পর্যন্ত স্বাভাবিক রয়েছে বলে খবর।
বঙ্গোপোসাগরে ঘনীভূত নিম্নচাপটি উপকূল থেকে পশ্চিমদিকে সরায় ভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে বাঁকুড়া জেলায়। কংসাবতী, শিলাবতী, দ্বারকেশ্বর, গন্ধেশ্বরা ও শালি নদীর জলস্তর বেড়ে গিয়ে বিস্তীর্ণ এলাকা বানভাসি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যেই মুকুটমণিপুর ব্যারাজ থেকে ছাড়া হয়েছে দশ হাজার কিউসেক জল। প্রশাসনের তরফে বাঁকুড়ার প্রতিটি ব্লককে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
কংসাবতী ও দ্বারকেশ্বর নদীর জলস্তর বাড়ায় পুরুলিয়া জেলা বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। গতকাল রাত থেকেই প্রবল বর্ষণ শুরু হয়েছে জেলাজুড়ে। টানা বৃষ্টির জেরে জেলার কোথাও কোথাও বিদ্যুত্ বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। গ্রামাঞ্চলে প্রচুর কাঁচা বাড়ি ভেঙে পড়ায় নিরাশ্রয় বহু মানুষ। অনেকেই নিকটবর্তী প্রাথমিক স্কুলগুলিতে আশ্রয় নিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের দ্রুত ত্রাণের ব্যবস্থা করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে প্রশাসনকে। জেলার প্রতিটি ব্লকে সতর্কতা জারি করেছে প্রশাসন।
রাত থেকে টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত পশ্চিম মেদিনীপুরে জনজীবন। কংসাবতী ও কপালেশ্বরী নদীর জল বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে। শবং কপালেশ্বরী নদীর বাঁধে দু জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে। জেলার একাধিক নীচু এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ায় ঘরছাড়া হয়েছে বহু মানুষ। প্রশাসনের তরফে প্রতিটি ব্লকেই সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
First Published: Wednesday, August 21, 2013, 10:15