Last Updated: March 29, 2012 21:55

আমলাদের হাতে জেলাপরিষদের আর্থিক ক্ষমতা হস্তান্তর ঘিরে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। এই ঘটনার গণতান্ত্রিক কি না, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে। উত্তর চব্বিশ পরগনা, নদিয়ার পরে সামনে আসছে মুর্শিদাবাদের নাম। এপ্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার সরাসরি অভিযোগ এনেছেন মুর্শিদাবাদের জেলা পরিষদের সভাধিপতি পূর্ণিমা দাস। দীর্ঘদিন ধরে উচ্চ পদে আধিকারিক না-দিয়ে রাজ্য সরকার মুর্শিদাবাদ জেলাপরিষদকে পঙ্গু করে দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে তাঁর অভিযোগ।
জেলাপরিষদের ক্ষমতা কেড়ে নিয়ে আমলাদের হাতে তুলে দেওয়ার ঘটনায় বিতর্ক তৈরি হয়েছে। রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই বামফ্রন্ট পরিচালিত উত্তর চব্বিশ পরগনা এবং নদিয়ার জেলাপরিষদের আর্থিক ক্ষমতা জেলাশাসকের হাতে তুলে দিয়েছেন। এপ্রসঙ্গে সামনে এসেছে মুর্শিদাবাদের নামও। কিন্তু মুর্শিদাবাদের জেলাপরিষদের সভাধিপতি পূর্ণিমা দাসের অভিযোগ, আজ নয়, দীর্ঘদিন ধরেই পঙ্গু করে দেওয়ার চেষ্টা চলছে বাম পরিচালিত জেলাপরিষদটিকে। স্থায়ী সমিতিতে বাম সদস্যদের সংখ্যা কম থাকায়, গত বছর বাজেট পেশ হয়নি মুর্শিদাবাদ জেলাপরিষদে। জুনের পর থেকে আর্থিক লেনদেন বন্ধ হয়ে গিয়েছে। কর্মীদের বেতন এবং অফিস খরচ বাবদই কেবল অর্থ বরাদ্দ করে পঞ্চায়েত দফতর। সেপ্টেম্বরে জেলাশাসকের কাছে আর্থিক লেনদেনের দায়িত্ব দেওয়া হয়। আর্থিক লেনদেন দেখতে থাকেন জেলাশাসক। এক্ষেত্রে আর্থিক বেনিয়ম কিম্বা বরাদ্দ অর্থের যথাযথ খরচ না-হওয়ার অভিযোগ তাই ওঠে না বলেই জেলাপরিষদের সভাধিপতির দাবি।

মুর্শিদাবাদের জেলাপরিষদের সভাধিপতি পূর্ণিমা দাসের অভিযোগ, জেলা পরিষদের প্রধান তিন আধিকারিককে একে একে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই তালিকায় রয়েছেন জেলাপরিষদের সচিব, সহকারী সচিব এবং অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলাপরিষদের) মতো আধিকারিকরা। গতবছর মে মাসে জেলাপরিষদের সচিব অবসর নেওয়ার পর, বারবার বলা সত্ত্বেও স্থায়ী সচিব নিয়োগ করা হয়নি। গত সেপ্টেম্বর মাসে অতিরিক্ত জেলাশাসক জেলাপরিষদ বদলি হয়ে যাওয়ার পর এখনও পর্যন্ত স্থায়ী কাউকে রাজ্য সরকার নিয়োগ করেনি। এমনকী, এই সময়কালের মধ্যে দীর্ঘ সময় জেলাশাসকও জেলার বাইরে ছিলেন। এছাড়াও জেলার গ্রামোন্নয়ন আধিকারিক সহ জেলা প্রশাসনের একাধিক আধিকারিকের পদ শূন্য। রাজ্য সরকার সেই পদে আধিকারিক পাঠাচ্ছেন না। তা সত্ত্বেও গত একবছরে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের প্রকল্পের রূপায়ণে জেলাপরিষদের অগ্রগতি ভালো। এই সব বিষয়ে পঞ্চায়েতমন্ত্রী, পঞ্চায়েত সচিবকে বারবার চিঠি দিয়ে জানানো সত্ত্বেও, তাঁরা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে পাশে দাঁড়াননি বলেই পূর্ণিমা দাসের অভিযোগ।
First Published: Thursday, March 29, 2012, 21:55