Last Updated: June 18, 2014 11:01

ইরাকে আটকে পড়া ভারতীয়দের মধ্যে ৪০ জনের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। জঙ্গিদের দখলে চলে যাওয়া মসুল শহরে আটকে পড়েছিলেন ওই ৪০ জন ভারতীয়। তাঁদের সঙ্গে কোনওরকম যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না বলে আজ জানিয়েছে ভারতীয় বিদেশমন্ত্রক। নিখোঁজরা সকলেই নির্মাণকর্মী। তাঁদের অপহরণ করা হয়েছে কিনা এবিষয়ে নিশ্চিতভাবে এখনও কিছু জানাতে পারেনি বিদেশমন্ত্রক।
তিকরিট শহরেও আটকে পড়েছেন ৪৬ জন ভারতীয়। পেশায় তাঁরা সকলেই নার্স। এই শহরটিও জঙ্গিদের দখলে চলে গিয়েছে। আটকে পড়া ভারতীয়দের সুরক্ষিতভাবে দেশে ফিরিয়ে আনতে সবরকম পথ পর্যালোচনা করে দেখছে বিদেশমন্ত্রক। তবে ইরাকে যা পরিস্থিতি তাতে জঙ্গিদের কবজায় থাকা শহরগুলি থেকে ভারতীয়দের বের করে আনা বেশ কঠিন বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
আটকে পড়া ভারতীয়দের সম্পর্কে খোঁজখবর দিতে ইতিমধ্যে দিল্লিতে বিদেশমন্ত্রকে একটি ২৪ ঘণ্টার কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে। বাগদাদে ভারতীয় দূতাবাস থেকে প্রতি ঘণ্টায় রিপোর্ট পাঠানো হচ্ছে। যোগাযোগ রাখা হচ্ছে ইরাক সরকার এবং রাষ্ট্রসংঘের বিশেষ দলের সঙ্গে।
এদিকে, বাগদাদের আরও কাছে গিয়েছে জঙ্গিরা। তাল আফারের পর এবার তাদের কবজায় মসুল। বাকুবা দখলের লক্ষ্যে লড়াই শুরু হয়েছে। হামলার কথা স্বীকার করে নিয়েছে ইরাকি সেনা। তবে তাঁদের দাবি, পাল্টা হামলায় পিছু হঠেছে জঙ্গিরা। ঘোর সঙ্কটে ইরাকের অস্তিত্ব। আজ এই সতর্কবাণী শুনিয়েছে রাষ্ট্রসঙ্ঘ। উদ্বেগ ক্রমেই বাড়ছে ইরাকে আটকে পড়া ভারতীয়দের সুরক্ষা নিয়ে।
আরও অবনতির পথে ইরাকের পরিস্থিতি। বাগদাদ দখলের পথে একের পর এক শহরের দখল নিচ্ছে জঙ্গিরা। রবিবার থেকে সেনাবাহিনীর সঙ্গে একটানা যুদ্ধ চলছে সুন্নি জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট ইন ইরাক অ্যান্ড দ্য ল্যাভেন্টের।
মঙ্গলবার তাঁদের দখলে চলে গিয়েছে মসুল শহর। এর ফলে বাগদাদের উত্তরাংশের বিস্তীর্ণ এলাকা এমুহুর্তে জঙ্গিদের দখলে। সোমবারই তাল আফার শহরের দখল নেয় তারা। তবে বিমানবন্দরের কিছু অংশ এখনও তাঁদেরই হাতে রয়েছে বলে দাবি ইরাকি সেনার।
বাগদাদ থেকে সামান্য কিছু দূরে বাকুবা শহর এমুহুর্তে উত্তেজনার কেন্দ্র। জঙ্গি হামলার প্রথম ধাক্কা সামলে তাদের পিছু হঠতে বাধ্য করা হয়েছে বলে দাবি সেনার।
পরিস্থিতি ক্রমেই ঘোরালো হয়ে ওঠায় উদ্বিগ্ন ভারত।বিদেশমন্ত্রকে খোলা হয়েছে চব্বিশ ঘণ্টার কন্ট্রোল রুম। ভারতীয় নাগরিকদের সুরক্ষার জন্য সবরকম ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছে বিদেশমন্ত্রক। পরিস্থিতি পর্যালোচনায় মঙ্গলবার জরুরি ভিত্তিতে বৈঠকে বসেছিল ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট টিম।
ইরাকে ভারতীয়দের নিরাপত্তার স্বার্থে কেন্দ্রের অবিলম্বে হস্তক্ষেপ করা উচিত বলে দাবি বিরোধীদের।
ইরাকের পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও। ইরাকে তাঁদের দূতাবাসের নিরাপত্তার জন্য বাড়তি দুশো পচাত্তর জন মার্কিন সেনার বিশেষ একটি দল মোতায়েন করা হয়েছে। তবে এর বাইরে ইরাকে সেনা পাঠানোর সম্ভাবনা আরও একবার খারিজ করে দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।
গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে রাষ্ট্রসঙ্ঘ জানিয়েছে, এমুহুর্তে ইরাকের সার্বভৌমত্ব প্রশ্নের মুখে। সাদ্দাম জমানার অবসানেও যুদ্ধ পরিস্থিতির অবসান হয়নি ইরাকে ।
First Published: Wednesday, June 18, 2014, 11:07