Last Updated: December 16, 2012 12:36

নার্সিংহোমে শিশু বিক্রির ঘটনায় এখনও অধরা অভিযুক্তরা। ঘটনার দায় এড়াচ্ছে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ। উঠছে পুলিসি তদন্তেও ঢিলেমির অভিযোগ। গতকাল নার্সিংহোম কর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করলেও তাঁদের বিরুদ্ধে কার্যত কোনও ব্যবস্থা নেয়নি পুলিস। এই ঘটনার তদন্তের মুখ ঘুরিয়ে দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে। নার্সিংহোম কর্তাদের সাফাই অভিযুক্ত পিন্টু, রমজান, কৌশিক রায় সমাধান নার্সিংহোমের সঙ্গে যুক্ত নন। কর্তৃপক্ষের দাবি, তাঁদের অন্ধকারে রেখে নার্সিংহোমকে ব্যবহার করা হয়েছে। নার্সিংহোমের ভিতরে ঢুকে শিশুটিকে বিক্রির চেষ্টা করা হয়েছে বলে দাবি করেছে কর্তৃপক্ষ। কর্তৃপক্ষের যুক্তি, সেসময় একটি দুর্ঘটনার রোগী এসে পরায় ভিরের মধ্যে বাইরের অনেকেই ঢুকে যায় নার্সিংহোম চত্বরে। কিন্তু ছবি অন্য কথা বলছে। সেসময় আমাদের প্রতিনিধিরা ছাড়া আর কেউ ঢোকেননি। সঙ্গে ছিলেন রমজান ও চন্দ্রানী রায়। যদিও কর্তৃপক্ষের এই যুক্তি কীভাবে পুলিসের কাছে বিশ্বাসযোগ্য হল তা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে। এদিকে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের সঙ্গে স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক তথা সংখ্যালঘু দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী গিয়াসউদ্দিন মোল্লার যোগাযোগের অভিযোগ উঠেছে। সেই যোগাযোগ তদন্তে কোনওভাবে প্রভাব ফেলছে কিনা উঠছে সে প্রশ্নও।
পুলিসের দাবি, গা ঢাকা দিয়েছে ঘটনায় মূল অভিযুক্ত কৌশিক রায়, রমজান এবং পিন্টু। ঘটনার মূল অভিযুক্ত ডাক্তার চন্দ্রানী রায় শনিবার পুলিসের জেরায় রমাজানকে চেনেন এবং তাঁর বাড়ির ঠিকানাও জানেন বলেই জানিয়েছেন আমাদের। কিন্তু তাসত্বেও কেন রমজানের নাগাল পাচ্ছে না পুলিস, উঠছে সে প্রশ্নও। দিনভর নানা ঘটনাপ্রবাহের পর গতকাল বিকেলেই শিশুকল্যাণমন্ত্রী শ্যামাপদ মুখোপাধ্যায়ের নির্দেশে আটক করা হয় দক্ষিণ ২৪ পরগনার উস্তির `সমাধান` নার্সিংহোমের কর্তা সহ চারজনকে। জিজ্ঞাসাবাদের পরে অবশ্য তাঁদের ছেড়েও দেওয়া হয়। মিডিয়া রিপোর্টের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার পুলিস সুপার প্রবীণ ত্রিপাঠী।
শনিবার বেলা বারোটায় শিশু বিক্রির খবর সম্প্রচারিত হয় ২৪ ঘণ্টার পর্দায়। খবর সম্প্রচার হতেই রাজ্যজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়ে যায়। যে নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে অভিযোগ, উস্তির সেই `সমাধান` নার্সিংহোমেও শোরগোল শুরু হয়। স্থানীয় মানুষরাও ভিড় করেন নার্সিংহোমের বাইরে।
চব্বিশ ঘণ্টায় খবর দেখে নার্সিংহোমে উপস্থিত হন এলাকার বিধায়ক তথা সংখ্যালঘু দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী গিয়াসউদ্দিন মোল্লা। তদন্তের আশ্বাস দেন তিনি। মন্ত্রী বেরিয়ে যেতেই ফের উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। হেনস্থা শুরু হয় ২৪ ঘণ্টার প্রতিনিধিদের ওপর। ক্যামেরা কেড়ে নেওয়ারও চেষ্টাও করা হয়।
তখন থেকেই স্পষ্ট হতে থাকে পুলিসি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ। খবর সম্প্রচারের পর থেকে দফায় দফায় উত্তপ্ত হয়েছে নার্সিংহোম চত্বর। কিন্তু দীর্ঘক্ষণ সেখানে দেখা যায়নি পুলিসকে। যোগাযোগ করা হয় রাজ্যের শিশুকল্যাণ মন্ত্রী শ্যামাপদ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে। এ ঘটনায় ব্যবস্থা নিতে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান।
২৪ ঘণ্টার স্টিং অপারেশনে অভিযুক্ত চিকিৎসক চন্দ্রাণী রায়ের বয়ান দেখতে
ক্লিক করুন এখানে২৪ ঘণ্টার স্টিং অপারেশনে অভিযুক্ত রমজানের বয়ান দেখতে
ক্লিক করুন এখানে২৪ ঘণ্টায় এই খবর সম্প্রচারিত হওয়ার পরে অভিযুক্ত চিকিৎসক চন্দ্রাণী রায়ের
টেলিফোনে প্রতিক্রিয়া২৪ ঘণ্টার প্রতিনিধির উপর
পাল্টা চাপ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের
First Published: Sunday, December 16, 2012, 16:14