Last Updated: March 22, 2012 09:59

কয়েক মাসের টানাপোড়েনের পর ভারতীয় বিদেশমন্ত্রকের হস্তক্ষেপে অভিজ্ঞান ও ঐশ্বর্যকে তাঁদের অভিভাবকদের হাতে তুলে দিতে রাজি হয়েছিল নরওয়ে সরকার। কিন্তু দুই বাঙালী শিশুর বাবা অনুরূপ ভট্টাচার্যের চাঞ্চল্যকর বিবৃতির ফলে পুরো বিষয়টিই নতুন মোড় নিতে চলেছে। শুক্রবার স্ট্র্যাভেঞ্জার আদালতে এই নিয়ে শুনানিও হওয়ার কথা। অনুরূপবাবুর মন্তব্যকে হাতিয়ার করে, পারিবারিক জটিলতার অভিযোগ তুলে সেখানে দুই শিশুকে পরিবারের হাতে ফেরত দেওয়ার বিষয়ে অসম্মতি জানাতে চলেছে নরওয়ের `চাইল্ড ওয়েলফেয়ার সার্ভিসেস`।
বুধবার মিডিয়ার মুখোমুখি হয়ে অনুরূপবাবু জানান, কেবলমাত্র সংস্কৃতিগত পার্থক্যের জন্যই নরওয়ে কর্তৃপক্ষ তাঁদের শিশুদের সরিয়ে নিয়ে যায়নি। সমস্যা কারণ আরও গভীরে। তাঁর স্ত্রী সাগরিকা গুরুতর মানসিক সমস্যায় ভুগছে দাবি করে স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের মামলা দায়ের করার কথা জানান অনুরূপ ভট্টাচার্য।

দীর্ঘদিনের লড়াই। সন্তানকে ফিরে পাওয়ার লড়াই। নরওয়ে থেকে যে লড়াইয়ের ঢেউ পৌঁছেছে এদেশে। সরব হয়েছেন দেশবাসী। অনেক সংগ্রাম, অনেক আন্দোলনের পরে, যখন সবেমাত্র আশার আলো দেখা যাচ্ছে, তখনই ছন্দপতন। স্ত্রী সাগরিকার বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগে বিবাহ বিচ্ছেদের আবেদন করেন অনুরূপ ভট্টাচার্য। এতদিনের এত চেষ্টা মুহূর্তে থমকে যায়। অভিযোগ জানানোর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই যদিও তা অস্বীকার করেছেন অনুরূপ ভট্টাচার্য। স্ত্রীর সঙ্গে কোনওরকম সমস্যা নেই বলেও জানিয়েছেন। কিন্তু এই ঘটনাকে ষড়যন্ত্র বলে অভিযোগ সাগরিকার পরিবারের।
কিন্তু এই অভিযোগ পাল্টা অভিযোগের ঘটনাকে দুর্ভাগ্যজনক বলে মন্তব্য করেন বিদেশমন্ত্রী। সেই সঙ্গে বিদেশমন্ত্রকের তরফে আপাতত শিশু হস্তান্তর প্রক্রিয়া থেকে সরে আসার কথা জানান হয়। এদিনই শিশু হস্তান্তরের জন্য নরওয়ে রওনা হওয়ার কথা ছিল বিদেশমন্ত্রকের যুগ্ম সচিবের। সেই সফর আপাতত স্থগিত রেখেছে বিদেশমন্ত্রক। নরওয়ের ভারতীয় দূতাবাসের কাছ থেকে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে।
এর মধ্যে আবার অনুরূপ ভট্টাচার্যের ভাই অরুণাভাস ভট্টাচার্য শিশুদুটির দায়িত্ব নিতে অস্বীকার করেছেন বলেও জল্পনা শুরু হয়েছে। তাই শিশুদুটির বাবা-মা অনুরূপ ও সাগরিকার সঙ্গে কথা বলে সবদিক খতিয়ে দেখেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে বিদেশমন্ত্রকের তরফে জানান হয়েছে।
First Published: Thursday, March 22, 2012, 09:59