`জবাবদিহি করব সংসদকে, কোনও ব্যক্তি বিশেষকে নয়`

`জবাবদিহি করব সংসদকে, কোনও ব্যক্তি বিশেষকে নয়`

`জবাবদিহি করব সংসদকে, কোনও ব্যক্তি বিশেষকে নয়` সামরিক শাসন না গণতন্ত্র? পাক রাজনীতির ভবিষ্যত্ এখনও দোটানায়। সেনার সঙ্গে সম্পর্কের বরফ গলাতে ইতিমধ্যেই পাক সেনা প্রধান আশফাক কায়ানির সঙ্গে বৈঠক করেছেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানি। বৈঠকের ঠিক পরের দিন রবিবার গিলানি স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, তিনি শুধুমাত্র জবাবদিহি করবেন সংসদকে। কোনও ব্যক্তি বিশেষকে নয়। তিনি বলেন, `আমার বিরুদ্ধে কারও কোনও অভিযোগ থাকলে, তার জবাবদিহি আমি কোনও ব্যক্তি বিশেষকে করব না। জবাবদিহি করব সংসদকে।` তিনি আরও বলেন, `আমি একবারও বলিনি যে আমিই ৫ বছর প্রধানমন্ত্রী থাকব। পাকিস্তানের জনগণ ৫ বছরের জন্য সংসদ নির্বাচন করেছে। সংসদ তার মেয়াদ পূর্ণ করবে।`

এর আগে সেনা ও আইএসআই-এর কার্যকলাপকে অসংসদীয় ও বেআইনি বলে অভিযোগ করেছিলেন পাক প্রধানমন্ত্রী। পাক মিডিয়ার একাংশ দাবি করে, সেনার বিরুদ্ধে মন্তব্য প্রত্যাহার করতে গিলানিকে নির্দেশ দিয়েছেন পাক প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি। রবিবার মেমোগেট কেলেঙ্কারি ইস্যুতে পাক সুপ্রিম কোর্টে একটি অ্যাফিডেভিট জমা দেন গিলানি। অ্যাফিডেভিটে, পাক সংবাদ মাধ্যমের একাংশের সেই মন্তব্যকেও খারিজ করেন গিলানি। `জবাবদিহি করব সংসদকে, কোনও ব্যক্তি বিশেষকে নয়`
পাকিস্তানে সেনা ও সরকারের সংঘাতের শুরু গত সপ্তাহে। চলতি বছরের নভেম্বর মাসে মনসুর ইজাজ নামে এক পাক বংশোদ্ভুত মার্কিন শিল্পপতির ফাঁস করে দেওয়া মেমো`তে প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি ও আমেরিকায় নিযুক্ত তত্‍কালীন পাক রাষ্ট্রদূত হুসেন হাক্কানির নাম জড়িয়ে যায়। ইজাজ দাবি করেন, মে মাসে হাক্কানির নির্দেশে তিনি একটি স্মারকলিপি বানিয়ে মার্কিন সেনাপ্রধান মাইক মুলেনকে দিয়েছিলেন। সেই স্মারকলিপিতে বলা হয়েছিল, গোপনে অভ্যুত্থানের ছক কষছে পাক সেনাবাহিনী। প্রেসিডেন্ট জারদারির নির্দেশে বানানো ওই মেমো`তে পাক সেনার সম্ভাব্য অভ্যুত্থান ঠেকাতে আফগানিস্তানে মোতায়েন মার্কিন ফৌজের সাহায্যও প্রার্থনা করা হয়েছিল। হাক্কানি অবশ্য দাবি করেন, পাকিস্তানের সেনাবাহিনী ও সরকারের মধ্যে দুরত্ব তৈরি করতেই এই ভুয়ো স্মারকলিপির গল্প তৈরি করা হয়েছে। যদিও সেই সাফাইয়ে সন্তুষ্ট হননি জেনারেল কায়ানি। সেনাবাহিনীর চাপে ইস্তফা দিতে হয় হাক্কানিকে। তাঁর বিরুদ্ধে শুরু হয় মামলা। এমনকি দিন কয়েক আগে পাক সেনার হামলার ভয়ে প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানির বাড়িতে আশ্রয় নিতে হয় হাক্কানিকে। এর পাশাপাশি সেনাপ্রধান কায়ানির ঘনিষ্ঠ প্রতিরক্ষা সচিব, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) নঈম খালিদ লোদিকে বরখাস্ত করে নার্গিস শেঠিকে নিযুক্তকরা নিয়ে সেনা-সরকার সংঘাত চরমে পৌঁছায়।

শুধু সেনাবাহিনীর রোষ নয়, প্রেসিডেন্ট জারদারির বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতি সংক্রান্ত কয়েকটি মামলার পুনরুজ্জীবনের প্রশ্নে সুপ্রিম কোর্টেরও নিশানা হয়েছে পাক গণতান্ত্রিক সরকার। জারদারির আর্থিক বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ও মেমোগেট কেলেঙ্কারি। সোমবার ২টি গুরুত্বপূর্ণ মামলার শুনানি পাক সুপ্রিম কোর্টে।

First Published: Sunday, January 15, 2012, 20:47


comments powered by Disqus