পঞ্চায়েত প্যাঁচে হাঁসফাঁস দশা রাজ্য সরকারের

পঞ্চায়েত প্যাঁচে হাঁসফাঁস দশা রাজ্য সরকারের

পঞ্চায়েত প্যাঁচে হাঁসফাঁস দশা রাজ্য সরকারেরপঞ্চায়েত যুদ্ধ এবার সিঙ্গল বেঞ্চ থেকে ডিভিশন বেঞ্চে। সোমবারই আদালতে যাচ্ছে রাজ্য সরকার। এরপর ফের শুনানি-পর্ব, ফের রায়দান। পঞ্চায়েতমন্ত্রীর হুঁশিয়ারি, ডিভিশন বেঞ্চের রায়ও বিপক্ষে গেলে সুপ্রিম কোর্টে যাবে সরকার। এদিকে আবার জুন মাসে গরম ও বর্ষার কথা তুলে ভোট করাতে নারাজ রাজ্য। তাহলে কি হবে পঞ্চায়েত ভোটের ভবিষ্যত?  

সুব্রত মুখোপাধ্যায় আজ সাংবাদিকদের বলেন, সারা ভারত কেন.. পৃথিবীতে কেউ পারবে না রায় বাস্তবে প্রয়োগ করতে। সঙ্গে পঞ্চায়েত মন্ত্রী আরও বলেন, আরও দুটো আদালত আছে। পাশাপাশি পঞ্চায়েত মামলার রায় প্রসঙ্গে এবার হাইকোর্টের বিচারপতিকেই চ্যালেঞ্জ জানালেন পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়৷

সহযোগিতা তো দূরের কথা, রাজ্য কিন্তু ফের আইনি যুদ্ধেই যাচ্ছে। সোমবার সরকার যাবে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে। এদিকে, শনিবারের মধ্যে চারশো পর্যবেক্ষকের তালিকা কমিশনকে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। তালিকা যে আসবে না শুক্রবারই তা স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন পঞ্চায়েতমন্ত্রী।

সরকার বারবার দাবি করেছে, ভোটের জন্য তাঁরা তৈরি। দু-দুবার ভোটের দিনও ঘোষণা করেছে। অথচ পর্যবেক্ষকদের তালিকাই তৈরি নেই। প্রশ্ন উঠছে, সত্যি কি সরকারের পঞ্চায়েত ভোট করার সদিচ্ছা ছিল? আদালত কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করে ভোট করার নির্দেশ দিয়েছে।
  
সরকার ভোটের জন্য তৈরি থাকলে কত কেন্দ্রীয় বাহিনী বা অন্য রাজ্যের পুলিস পাওয়া যেতে পারে, তা জানতে অনেক আগেই কেন্দ্রকে চিঠি দিত রাজ্য। তা যে করা হয়নি সে তো বুঝিয়ে দিলেন পঞ্চায়েতমন্ত্রীই।  জুনে পঞ্চায়েতগুলির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে ভোট না করানোর যুক্তি হিসেবে আবহাওয়াকেও টেনে আনছে সরকার।

পঞ্চায়েত মন্ত্রী বলেন , গরম-বর্ষায় কীভাবে সম্ভব হবে ভোট।
 
সোমবার সরকার ডিভিশন বেঞ্চে যাবে। আবার ১৮ মে থেকে হাইকোর্টে এক মাসের গ্রীষ্মকালীন অবকাশ শুরু হচ্ছে। ফলে ডিভিশন বেঞ্চের রায় বেরোতেই জুন পেরিয়ে যাবে। ডিভিশন বেঞ্চে যে পক্ষই হারুক, তারা যে সুপ্রিম কোর্টে যাবে তা স্পষ্ট। অর্থাত্‍ আইনি পর্ব মিটতে অনেক সময় লাগবে।

 
তৃণমূলের অন্দরের খবর, এখন পঞ্চায়েত ভোট করতে রাজি নন মুখ্যমন্ত্রী। এমনিতেই গার্ডেনরিচ, মাঠপুকুর, ভাঙড়কাণ্ড, সুদীপ্ত গুপ্তর মৃত্যু, প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলা--একের পর এক ঘটনায় বিপাকে সরকার। তার উপর সারদা কেলেঙ্কারি। ওই প্রতারণা কাণ্ড যে গ্রামবাংলায় দলের বিশ্বাসযোগ্যতায় বড়সড় ধাক্কা দিয়েছে অন্দরের আলোচনায় তা মানছেন তৃণমূলের শীর্ষনেতারাও।

ড্যামেজ কন্ট্রোলের নানা পদক্ষেপে এখনও কাজ হয়নি, উল্টে দলনেত্রীর সততার প্রতীক ভাবমূর্তিও প্রশ্নের মুখে পড়েছে বলে মত তৃণমূলের অনেক নেতারই। এই অবস্থায় পঞ্চায়েত ভোট হলে, ফল খারাপ হওয়ার আশঙ্কা থাকে আর তার ছাপ পড়বে লোকসভা ভোটেও। এই হিসেব কষেই পঞ্চায়েত ভোট এড়িয়ে যেতে চাইছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণমূল শিবির থেকে অন্তত তেমনই শোনা যাচ্ছে। শোনা যাচ্ছে, সারদা কেলেঙ্কারির কথা প্রকাশ্যে আসার পরে ঘণিষ্ঠদের কাছে মুখ্যমন্ত্রী নাকি বলে ফেলেছিলেন, ভাগ্যিস এখন পঞ্চায়েত ভোটটা হচ্ছে না।

First Published: Saturday, May 11, 2013, 20:51


comments powered by Disqus