পেট্রোলের মূল্যবৃদ্ধি, সরকারে থেকেই প্রতিবাদ করবে তৃণমূল

পেট্রোলের মূল্যবৃদ্ধি, সরকারে থেকেই প্রতিবাদ করবে তৃণমূল

পেট্রোলের মূল্যবৃদ্ধি, সরকারে থেকেই প্রতিবাদ করবে তৃণমূলপেট্রোলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি সত্ত্বেও ইউপিএ টু সরকারের ওপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করছে না তৃণমূল কংগ্রেস। বুধবার তোল কোম্পানিগুলি দাম বাড়ানোর কথা ঘোষণা করার কিছুক্ষণের মধ্যেই মহাকরণে সাংবাদিকদের একথা স্পষ্ট করেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, গত কয়েক মাসে আন্তর্জাতিক বাজারে পেট্রোলের দাম কমলেও দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। শরিক দল তৃণমূল কংগ্রেসর সঙ্গে কোনওরকম আলোচনা না-করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। এই সিদ্ধান্ত `অন্যায়` ও `একতরফা` বলে মন্তব্য করেন তিনি। সরকারে থেকেই তৃণমূল কংগ্রেস পেট্রোলের মূল্যবৃদ্ধির বিরোধিতা করবে বলেও জানিয়ে দিয়েছেন দলনেত্রী। তবে সরকারের ওপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করবে না তৃণমূল কংগ্রেস।

বুধবারই পেট্রোলের দাম লিটারপিছু ৭ টাকা ৫০ পয়সা বাড়ানোর কথা ঘোষণা করেছে তেল কোম্পানিগুলি। বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে কার্যকরী হবে এই দর। সেই প্রেক্ষিতে দলীয় সিদ্ধান্ত ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "টাকার দামে রেকর্ড পতনের পর দেশে আর্থিক সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে। শেয়ার বাজার থেকে অর্থ তুলে নিচ্ছেন লগ্নিকারীরা। এই অবস্থায় কেন্দ্রীয় সরকারের ওপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করলে দেশে অস্থিরতা আরও বৃদ্ধি পাবে।" বামেদের সুরে সুর মিলিয়ে এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "বার বার দাম বাড়িয়ে লোকসান মোকাবিলা কোনও পদ্ধতি হতে পারে না। এজন্য একটি সুগঠিত ব্যবস্থা গড়ে তোলা উচিত কেন্দ্রীয় সরকারের। পুরোটাই মিস ম্যানেজমেন্ট হচ্ছে।" সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল নেত্রীর প্রতিক্রিয়া নিয়ে মুখ খুলতে চায়নি প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব।

সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করেছে সিপিআইএম-সহ বাম দলগুলি। এই সিদ্ধান্ত ইতিমধ্যে মূল্যবৃদ্ধিতে জেরবার দেশের সাধারণ মানুষের জীবন আরও দূর্বিসহ হয়ে উঠবে বলে জানিয়েছে তারা। অবিলম্বে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে তারা।

পেট্রোলের মূল্যবৃদ্ধিতে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ইউপিএ-র তৃতীয় বৃহত্তম শরিক ডিএমকেও। সিদ্ধন্ত দূর্ভাগ্যজনক বলে মন্তব্য করেছেন দলের নেতা টিআর বালু।

ইউপিএ টু সরকারের তৃতীয় বর্ষপূর্তির নৈশভোজে অংশগ্রহণ করলেও পেট্রোলের দাম বৃদ্ধির কড়া সমালোচনা করেছেন সমাজবাদী পার্টি। দলের মুখপাত্র রাজেন্দ্র চৌধুরী বলেন, "তৃতীয় বর্ষপূর্তিতে সাধারণ মানুষকে ইউপিএ টু-র উপহার। এই সিদ্ধান্ত জনবিরোধী, তাই অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।"

সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছে প্রধান বিরোধী দল বিজেপিও। বিজেপি মুখপাত্র রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, "এই সিদ্ধান্ত যুক্তিহীন, হঠকারী। এর ফলে সাধারণ মানুষের ওপর মূল্যবৃদ্ধির চাপ আরও বাড়বে।"


ওদিকে পেট্রোলের মূল্যবৃদ্ধির দায় ঝাড়ার চেষ্টা করেছে কংগ্রেস। দলের মুখপাত্র রসিদ আলভি এদিন বলেন, "পেট্রোলের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত কংগ্রেস বা ইউপিএ সরকার নেয়নি। পেট্রোলের বিনিয়ন্ত্রণের পর তেল কোম্পানিগুলিই এই সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে। আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের মূল্যবৃদ্ধির ফলে তারাই পেট্রোলের দামবৃদ্ধির কথা ঘোষণা করেছে।" তবে পেট্রোল বিনিয়ন্ত্রণ কারা করল সে সম্পর্ক কোনও মন্তব্য করেননি তিনি।






First Published: Thursday, May 24, 2012, 15:25


comments powered by Disqus