গল্ফ গার্ডেনে গণধর্ষণের কথা মানল পুলিস

গল্ফ গার্ডেনে গণধর্ষণের কথা মানল পুলিস

গল্ফ গার্ডেনে গণধর্ষণের কথা মানল পুলিসটালিগঞ্জের গল্ফ গার্ডেনে গণধর্ষণের শিকার মহিলার বয়ান লিপিবদ্ধ করল পুলিস। শনিবার চিত্তররঞ্জন ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে মহিলার বয়ান নেওয়া হয়। একইসঙ্গে মহিলার পোষাক ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। মহিলার অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানিয়েছেন চিকিত্‍‍‍সকরা। তাঁকে স্ত্রীরোগ বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে।

মহিলার শারীরিক পরীক্ষার প্রাথমিক রিপোর্ট আজই পুলিসের হাতে তুলে দেওয়া হবে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। ঘটনায় ধৃত শরিফ আলিই ওই মহিলাকে ধর্ষণ করে বলে জেরায় জানতে পেরেছে পুলিস। তার সঙ্গে আরও ৪-৫ জন ছিল বলে জেরার জানিয়েছে শরিফ। তবে তাঁরা কেউ ধর্ষণ করেনি বলে পুলিসের অনুমান। আজ শরিফকে আদালতে তোলা হবে। তবে অভিযুক্ত আরও কয়েকজন এখনও ফেরার। তবে ধৃত শরিফের পরিবারের সদস্যরা ধর্ষণের অভিযোগ মানতে রাজি নন। তাঁদের দাবি ধর্ষিতা মহিলা শফিকের পূর্ব পরিচিত। তাঁদের দু'জনের মধ্যে গভীর সম্পর্কও ছিল। কিন্তু মহিলার স্বামী সমস্ত কিছু জানতে পারার পর ফাঁসানো হয়েছে শফিককে।

শুক্রবার ভর সন্ধেতে টালিগঞ্জের আনোয়ার শাহ রোড এলাকায় ওই মহিলাকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করা হয়। স্থানীয় বাসিন্দার জানিয়েছেন সন্ধে  সাড়ে ৭টা নাগাদ  অসুস্থ সন্তানের জন্য ওষুধ কিনতে বেড়িয়েছিলেন ওই মহিলা। তখনই তাঁকে তুলে নিয়ে যায় জনা ছয় দুষ্কৃতী। একটি ফাঁকা গুমটি ঘরে নিয়ে গিয়ে মহিলাকে গণধর্ষণ করা হয় বলেও অভিযোগ। রাত আটটা নাগাদ ওই গুমটি ঘর থেকেই মহিলাকে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করেন স্থানীয় বাসিন্দারা।  ঘটনাস্থল থেকেই মূল অভিযুক্ত শরিফ আলিকে হাতেনাতে ধরে ফেলে ক্ষিপ্ত জনতা। তাকে স্থানীয় একটি ক্লাবে আটকে রেখে রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ খবর দেওয়া হয় যাদবপুর থানায়। পরে রাত নটা নাগাদ ঘটনাস্থলে এসে শরিফ আলি ওরফে চিনুকে আটক করে পুলিস।
গল্ফ গার্ডেনে গণধর্ষণের কথা মানল পুলিস

প্রথমে শারীরিক পরীক্ষার জন্য এমআর বাঙুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় আক্রান্ত মহিলাকে। তবে জখম গুরুতর হওয়ায় রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ চিত্তররঞ্জন ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় ধর্ষিতাকে। শারীরিক পরীক্ষার পাশাপাশি চিকিত্সাও চলছে ওই মহিলার।  পুলিসসূত্রে জানা গেছে, জিজ্ঞাসাবাদে মূল অভিযুক্ত শরিফ আলির বয়ানে একাধিক অসঙ্গতি ধরা পড়েছে। ঘটনায় অভিযুক্ত ৬ জনই এলাকায় নির্মাণ কাজের ঠিকা শ্রমিক বলেও জানতে পেরেছে পুলিস। নির্মীয়মাণ বহুতলটির প্রোমোটারের সঙ্গেও একাধিক সময় ঠিকার কাজ করেছে বলেও খবর। স্থানীয় মানুষ আরও অভিযোগ করেন যে ওই গুমটি ঘরটি ওই বহুতলের প্রোমোটারের অফিস হলেও প্রত্যেক সন্ধেয় অভিযুক্তরা ওখানে মদ ও জুয়ার আসর বসত।
 
যেভাবে ভর সন্ধ্যায় খাস কলকাতার বুকে মহিলাকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটল, তাতে মহিলাদের নিরাপত্তার প্রশ্নটি আরও একবার সামনে চলে এল। সেই গল্ফ গার্ডেন গণধর্ষণের ঘটনার জেরে প্রকাশ্যে চলে এসেছে এই এলাকায় স্থানীয় যুবকদের দৌরাত্ব্যের কথাও। এলাকার মহিলাদের অভিযোগ, প্রায়শই তাদের হেনস্থার শিকার হতে হয়। রাস্তা দিয়ে যাতায়াতের সময় স্থানীয় যুবকরাই নানা অশ্লীল আচরণ করে বলে অভিযোগ। এমনকী ছোট ছোট স্কুলছাত্রীদেরও প্রায়শই উত্ত্যক্ত করা হয় বলেও অভিযোগ।



First Published: Tuesday, February 19, 2013, 13:58


comments powered by Disqus