Last Updated: November 14, 2012 17:23

ফের পুলিসের গুলিতে মৃত্যু গ্রামবাসীর। আবারও পুলিসের বিরুদ্ধে অসহিষ্ণুতার অভিযোগ। ২০১১-র অক্টোবর থেকে ২০১২-র নভেম্বর। পুলিসের গুলিতে মৃত্যু হয়েছে পাঁচজন নিরীহ গ্রামবাসীর। পুলিসের গুলি রেয়াত করেনি শিশু বা মহিলাদেরও। পুলিস কি ক্রমশ ট্রিগার হ্যাপি হয়ে উঠছে? তা নিয়েই শুরু হয়েছে বিতর্ক।
৭ অক্টোবর, ২০১১, বগুলা, নদিয়াগুলি চলল নদিয়ার বগুলায়। দশমীতে ঠাকুর ভাসান যাচ্ছিল। ঘড়িতে রাত একটা। স্থানীয় এক কংগ্রেস নেতার গাড়ি আটকায় পুলিস। খবর পেয়ে বগুলার কৈখালি বাজারের কাছে বিক্ষোভ দেখায় দলীয় সমর্থকরা। বিক্ষোভ আটকাতে গুলি চালায় পুলিস। গুলিতে মৃত্যু হয় রাজেশ্বরী মল্লিকের। প্রাথমিকভাবে সাসপেন্ড করা হয় দুজন পুলিসকে। তবে কিছুদিনের মধ্যে উঠে যায় সে সাসপেনশন।
অক্টোবর, ২০১১, আসানসোল, বর্ধমানদুর্গাপুজোর ঠাকুর ভাসানকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় আসানসোলের জিটি রোড-হটন রোড এলাকা। দশমীর রাতে মহাবীর আখরার প্রতিমা নিয়ে শোভাযাত্রা চলছিল। পুলিস বাধা দেয়। এরপরই পুলিস-জনতা খন্ডযুদ্ধ বাধে। গুলি চালায় পুলিস। মৃত্যু হয় মনু বার্মা নামে এক যুবকের। এখনও সেই ঘটনার তদন্ত চলছে।
১ ডিসেম্বর, ২০১১, মগরাহাট, দক্ষিণ ২৪ পরগনাদক্ষিণ ২৪ পরগনার নৈনান গ্রামে দীর্ঘদিন ধরেই হুকিংয়ের অভিযোগ ছিল। ডিসেম্বরের এক তারিখ তা সরেজমিনে দেখতে গ্রামে পৌঁছন বিদ্যুত দফতরের কর্মীরা। বিদ্যুতের খুঁটি বসানোর দাবি করেন গ্রামবাসীরা। ইতিমধ্যে পুলিসের খবর যায় বিদ্যুত কর্মী এবং পুলিসদের আটকে রাখা হয়েছে। এরপরই বিশাল ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে যান এসডিপিও। গ্রামবাসীদের সঙ্গে বচসা বাধে পুলিসের। গুলি চালায় পুলিস। মৃত্যু হয় নয় বছরের এক ছাত্রী সহ এক মহিলার।
৬ নভেম্বর ২০১২, দুবরাজপুর, বীরভূমজমি আন্দোলনের জেরে পুলিসের গুলি চালানোর ঘটনায় অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে বীরভূমের দুবরাজপুর। লোবা গ্রামে খনির কাজের বরাত পাওয়া বেসরকারি সংস্থার মাটি তোলার মেশিন আটকে রেখেছিলেন আন্দোলনকারীরা। সেই মেশিনটি উদ্ধার করতে গিয়ে গ্রামবাসীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে পুলিস। গ্রামবাসীরা তির ধনুক নিয়ে পুলিসের ওপর চড়াও হয় বলে অভিযোগ। পাল্টা গুলি চালায় পুলিস। আহত হন পাঁচজনের বেশি গ্রামবাসী।
১৪ নভেম্বর, ২০১২, তেহট্ট, নদিয়াদুবরাজপুরের রেশ কাটতে না কাটতে ফের জনতার ওপর পুলিসের গুলি। এবার নদিয়ার তেহট্ট। পুলিসের বেপরোয়া গুলিতে মৃত্যু হল একজনের। গুরুতর জখম হন আরও তিন জন। কোনও নিচুতলার পুলিসকর্মী নন, গুলি চালান স্বয়ং এসডিপিও। পুলিসি অভিযান চলে অতিরিক্ত পুলিস সুপারের নেতৃত্বে।
কেন বারবার বেপরোয়া হয়ে উঠছে পুলিসের গুলি? রাজনৈতিক মহলের মতে একদিকে প্রশাসনিক ঘাটতি অন্যদিকে সরকারের অসহিষ্ণুতার কারণেই এধরনের ঘটনা ঘটছে।
First Published: Wednesday, November 14, 2012, 18:02