Last Updated: December 18, 2013 19:49

পার্থ প্রতিম চন্দ্র
সান্তাক্লজ আসেন... এসে উপহার দেন.. এই বিশ্বাসটা সবারই থাকে। এমন একটা বিশ্বাসে ডানা মেলে দেখলাম সান্তাক্লজ এসে পড়েছেন আমাদের দেশে। আসুন দেখেনি সান্তাকে কাছে পেয়ে কে কী উপহার চাইলেন।---
মোহনবাগান ক্লাবের কর্তারা- ধুত্, যতসব। সান্তা খুড়ো জানো আমরা বেশ আছি। বছর আসে, বছর যায়। সিলেকশন থুড়ি ইলেকশন আসে আমরা জিতি। নো প্রবলেম, যাকে বলে বিন্দাস আছি। আমাদের সমস্যা শুধু ওই সমর্থকরা। শুধু ট্রফি, ট্রফি করে চেঁচায়। আরে ট্রফি কী আর গাছের ফল, যে পেরে এনে দেব... যা হচ্ছে হতে দে না বাবু.. তা না হেরে গেলে কান্না.. আর টিভি, পেপারে ওসব দেখিয়ে আমাদের চাপে রাখা। তাই বলছি কী, তুমি বরং সমর্থকদের তুলে নাও।
মোহনবাগান ক্লাবটা একেবারে আমাদের ব্যক্তিগত সম্পত্তি বানিয়ে দাও। দরকার নাম বদলাবে এই যেমন ধরো মিত্র অ্যান্ড বোস বাগান ক্লাব.. বা ওরকম কিছু একটা। আর শোনো তোমার গিফটটা এই মরসুমে না দিলেও চলবে। এ মরসুমে সব ব্যর্থতা ছোঁয়া হয়ে গেছে। সমর্থকরা আর মনে হয় চেঁচাবে না। তবে ওটা পরের মরসুমে অবশ্যই দিও কিন্তু...
লালুপ্রসাদ যাদব- উফ, কী জ্বালা। এই বয়েসে কোথায় দেশের রাজনীতির বটবৃক্ষ হব তা না কোথায় জেল। কবে পশুদের খাবার নিয়ে কয়েকশো কোটি টাকা সাবার করেছিলাম, তার যাবর এখনও কাটতে হচ্ছে। যতসব...। তা বলি কি তুমি বরং পশুদের খাওয়ার টাওয়ার ঝামেলা তুলে দাও। আচ্ছা পশুরা শুধু জল খেয়ে বেঁচে থাকবে, সেরকম একটা অ্যারেঞ্জমেন্ট করলে হয় না। তাহলে না রাহেগা বাঁশে, না রাহেগা বাঁশোরি...
সাজিদ খান-- আমায় শুধু হিম্মত দাও... যাতে আরও একবার হিম্মতওয়াল রি রিমেক করতে পারি। ফারহা খানের ভাই আমি, নাচতে না জানলে উঠোন বাঁকা এই তত্ত্ব দিলে তো লোকে হাসবে। তাই হিম্মত দাও যাতে উঠোন বেঁকিয়ে নেচে মাত করিয়ে হিম্মতওয়ালা টু বানাই।
শীলা দীক্ষিত-- সান্তা ভালই হল তুমি এলে। এ বয়েসে তোমার কাছে কিছুই বিশেষ চাওয়ার নেই। তবে কী জানো, হারের জ্বালাটা বড় বেদনার। তাই তোমার কাছে গিফটে এমন একটা জিনিস চাইব যেটা আমার হারের ঘায়ে মলম দিতে পারে। গিফটে তুমি এমন একটা ম্যাজিক কর যাতে ভারত থেকে ঝাড়ু জিনিসই উঠে যাও। আচ্ছা বল ঝাঁটার আর কী দরকার, আর বাবা ভ্যাকিয়ুম ক্লিনার আছে ঘর ঝারতে হলে ওটাই যথেষ্ট। ঝাড়ু জিনিসটা বেশ বিরক্তিকর, দেখতেও কেমন বিচ্ছিরি। তুমি বরং আমায় গিফটটা দাও, আমি নির্বাচন কমিশনে চলি... যে জিনিসটার অস্তিত্ব নেই, সেটা কি নির্বাচনের প্রতীক হতে পারে! আর জনগণকেও বোঝাতে পারবও ঝাঁড়ু অচল, হাত সচল.. তাই ঝাড়ু দিয়ে নয় হাত দিয়ে ভ্যাকিয়ুম ক্লিনার দিয়ে ঘর (মানে সমাজ) পরিষ্কার করুন।
শ্রীসন্থ- আমাদের দেশটা বড্ড সেকেলে সান্তা জি। আপনাদের ওখানে তো শুনেছি খেলায় বেটিং-টেটিং বৈধ করা হয়েছে। এই ট্রেন্ডটা আমার দেশে ঢুকে পড়লে আমি পুরো নির্দোষ হয়ে যাব। এখন যে কটা পেটি কেস আছে তাও উঠে যাবে। পিচে যেরকম ব্যাট-ট্যাট হাতে নিচেছি, তাতে দেশে আমার টিআরপি ভালই। এখন হাঁটতে হাঁটতে কমেন্ট্রি করতে পারব। তাই প্লিজ গিফট হিসাবে আমি চাইব আমাদের দেশে বেটিংটা বৈধ করে দাও। আর হ্যাঁ, তোমার গিফটটা আমার মোজায় না রুমালে রেখো। জানোই তো রুমাল আমার বড় প্রিয়। এই রুমাল নাড়িয়েই বুকিদের বার্তা দিতাম তো তাই।
শ্রীনিবাসন-- সান্তা বাবা আমার জামাইবাবাজিটা একেবারে গুণধর। ওর জন্য তো আমার যায় যায় অবস্থা হয়েছিল। যাক ফাঁড়া কেটে গেছে, তুমি আমার জামাই গুরুকে আমার স্বস্থানে ফিরিয়ে দাও। আমার মেয়েটা তো কোনও দোষ করেনি, তা ছাড়া আমার জামাইটা তো আর খারাপ ছেলে নয়। মাঝে মাঝে যা একটু জুয়া, বেটিং এসব করে। আমি যেখানে ছাড়পত্র দিয়েছি সেখানে অপরাধ নেই। তুমি বরং সংবাদমাধ্যমকে ডিলিট করে আমার গুরদেব থুড়ি গুরনাথকে নিজ স্থানে ফিরিয়ে দাও।
আর আমার- এই লেখাটা লোকে পড়ে হাসুক, কমেন্ট করুক আর বস ডেকে বলুক তুমি পেকে গেছো। ভুল হল, বস বলবে তোমার চেয়ারটা থুড়ি চাকরিটা পেকে গেছে।
First Published: Thursday, December 19, 2013, 18:27