Last Updated: October 31, 2012 15:46

তেরো নম্বর হন্টেড ম্যানসন। দরজায় ঝুলছে কঙ্কাল। ছাদের ওপর বিকট কা কা শব্দে অবিরাম ডেকে চলেছে কুচকুচে কালো কাক। কড়া নাড়লেই বেরিয়ে আসছে ভয়ঙ্কর সব ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো। কখনও অট্টহাস্য, কখনও বা গোঁঙানি মিশ্রিত হাহাকার, তো কখনও গোল্লা-গোল্লা দুটো রক্তচক্ষু যেন এক্ষুনি কপাত্ করে গিলে খেয়ে নেবে। কোনও মতে প্রাণ হাতে করে ভূত বাবাজির ডেরা থেকে বেরিয়ে আসলেও কি বাঁচার জো আছে? বালতি থেকে ঝুপ করে কালো বেড়াল পায়ের কাছে লাফিয়ে পড়লেই একেবারে আত্মারাম খাঁচাছাড়া হওয়ার জোগার।
না। হাড় হিম করা এই বাড়ি কোনও মেছোভূত, গেছোভূত বা স্কন্ধকাটার আখড়া নয়। এইভাবেই ডুডলের অভিনবত্বে আজ আপনাকে হোম পেজে স্বাগত জানাচ্ছে গুগল। কেন রে বাবা এসব অলক্ষুণে ব্যাপার স্যাপার? আরে `হ্যালোউইন` এসে গেল যে। পুজো, লক্ষ্মীপুজোর মাঝে আপনি বেমালুম ভুলে গেলেও গুগল কিন্তু কিছুই ভোলে না। আর তাই এই সারপ্রাইজ ডুডল। হন্টেড হাউজের প্রথম দরজায় ক্লিক করলেই বেরিয়ে আসছে গুগল লোগোর `জি`-এর আকারের অক্টোপাস। দ্বিতীয় দরজায় জোড়া `ও` সদৃশ গোল-গোল দুটো লাল-হলুদ চোখ। হানাবাড়ির ১৩ নম্বর দরজায় কড়া নাড়লেই ছোট `জি`-র আকারের ঘোমটা দেওয়া অপেক্ষাকৃত কম ভয়ের ভূত। সবগুলোর মধ্যে এই ভূতই বোধহয় একটু সহনযোগ্য। চতুর্থ দরজায় খটখটালেই `এল` আকৃতির কাঁটাছেড়া কঙ্কালের রক্ত জল করা গোঙানি। আর শেষ ঘরে আপনার জন্য অপেক্ষা করে আছে দাঁত বার করে `ই` করে হাসি। মানে স্মাইলি। তবে এ মোটেই খিক খিক করে বালখিল্য হাসি হাসে না। হাড় কাঁপানো অট্টহাস্যে প্রাণ যায় যায় অবস্থা। সব দরজা খুলে যাওয়ার পর ফের ক্লিক করলেই কালো বেড়াল ঝুপ করে লাফিয়ে পড়ে আপনাকে নিয়ে যাবে সার্চ পেজে। মানে `হ্যাপি হ্যালোউইন` কিওয়ার্ডের পেজে।

`হ্যালোউইন`কে পৃথিবীর কোথাও কোথাও `অল হ্যালোস ইভ`ও বলা হয়। অল সেন্টস ডে-র সন্ধেবেলা অর্থাত্ অক্টোবর মাসের শেষ দিনে বিশ্বজুড়ে উদ্যাপিত হয় হ্যালোউইন।
কুমড়ো দিয়ে গা ছমছম লন্ঠন জ্বালিয়ে ভূতুরে পোষাকে কস্টিউম পার্টিতে `হ্যালোউইন` উত্সবে মেতে ওঠে সবাই। উদ্দেশ্য, অতৃপ্ত আত্মাদের বিদায় জানানো। অশুভ শক্তিকে দূরে রাখতেই এই `হ্যালোউইন`। বলতে গেলে অনেকটা আমাদের কালিপুজোর একদিন আগের ভূত চতুর্দশীর মত। চোদ্দ শাক, চোদ্দ পিদিম জ্বালিয়ে চোদ্দ পুরুষের অতৃপ্ত আত্মাদের তুষ্ট করে, অশুভ শক্তিকে দূর করার এই রেওয়াজেরই বিদেশি নাম `হ্যালোউইন`।
First Published: Wednesday, October 31, 2012, 15:46