বিদ্রোহী শোভনদেব; নেমে আসতে পারে দলীয় শাস্তির খাঁড়া

বিদ্রোহী শোভনদেব; নেমে আসতে পারে দলীয় শাস্তির খাঁড়া

বিদ্রোহী শোভনদেব; নেমে আসতে পারে দলীয় শাস্তির খাঁড়া ফের বিদ্রোহের সুর শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের গলায়। "তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ঘিরে ফেলেছে কিছু স্বার্থান্বেষী মানুষ। যাঁরা নতুন তৃণমূলে এসেছে তারা তৃণমূলকে গুছিয়ে নিতে চাইছে"। আজ কলকাতায় তৃণমূল ট্রেড ইউনিয়নের প্রতিষ্ঠা দিবসের এক অনুষ্ঠানে এমনই বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন প্রবীণ এই তৃণমূল নেতা । তৃণমূল সূত্রে খবর, শোভনদেবের বক্তব্যে যথেষ্টই ক্ষুব্ধ তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব। দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মুখ খোলায় শাস্তির মুখে পড়তে পারেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে, তাঁকে বিধানসভায় দলের মুখ্য সচেতকের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার কথা ভাবছে তৃণমূল। শোভনদেবের জায়গায় তাপস রায়কে মুখ্য সচেতক করা নিয়েও ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে।

কয়েকদিন আগে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে দলেরই কিছু কর্মীদের হাতে হেনস্থা হতে হয়েছিল শোভনদেবকে। এই ঘটনা নিয়ে রাজ্য রাজনীতি বেশ কিছুদিন ধরেই সরগরম। এর আগেও নিজের হেনস্থা নিয়ে সরব হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু রবিবার আইএনটিটিইউসির প্রতিষ্ঠা দিবসে তাঁর মন্তব্যে নতুন করে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। এই অনুষ্ঠানে শোভনদেব বলেছেন জঙ্গলমহল থেকে উত্তরবঙ্গ বা নন্দীগ্রাম, সর্বত্রই মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সঙ্গেই তিনি ছিলেন। ভবিষ্যতেও থাকতে চান। তবে সম্মানজনক ভাবে। তিনি জানিয়েছেন `` স্বার্থানেষী কিছু মানুষ মুখ্যমন্ত্রীকে ঘিরে রেখেছে। কেউ সিন্ডিকেটের ব্যবসা করছেন, কেউ কাটমানির। দলে যাঁরা নতুন এসেছেন তাঁরা আদতে গুছিয়ে নিতে এসেছেন। দলে এসেই পদ পাওয়া উচিত নয়।`` তবে এখানেই থেমে থাকেননি তৃণমূলের বর্তমান মুখ্যসচেতক। জানিয়েছেন, "কারও ইচ্ছা হলেই সে দলের নেতার উপর হাত তুলতে পারে না। দলের উচিৎ কড়া হাতে এসব নিয়ন্ত্রণ করা"। শোভনদেবের বক্তব্য অনুযায়ী তাঁর অসন্তোষের কথা তিনি সুব্রত মুখার্জী, মুকুল রায়কে বলেছেন। তবে এখনই তিনি দল ছেড়ে বেরিয়ে আসছেন না। তবে দল যদি মনে করে দলের আর তাঁকে প্রয়োজন নেই, সেক্ষেত্রে দলীয় সিদ্ধান্ত তিনি মাথা পেতে মেনে নেবেন।

অসন্তোষ প্রকাশের পাশাপাশি মমতার প্রতি তাঁর আস্থাও ব্যক্ত করেছেন অভিজ্ঞ এই তৃণমূল নেতা। জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রীর চারদিকে অশুভ বলয় তৈরি হয়েছে। কিন্তু তিনি অতন্ত বুদ্ধিমতী। তাই অসুখটা সনাক্ত করে ফেলেছেন। দ্রুত মুখ্যমন্ত্রী এই সব সারিয়ে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন বলেও আশা প্রকাশ করেছেন তিনি। তৃণমূলের
শ্রমিক সংগঠনের দায়িত্ব শোভনদেবের হাত থেকে দোলা সেনকে দেন মুখ্যমন্ত্রী। এই নিয়েও শোভনদেবের ক্ষোভ এখন সর্বজনবিদিত। আজকে আইএনটিটিইউসির অনুষ্ঠানে ঘুরিয়ে দোলা সেনেকে বিঁধতেও ছাড়েননি তিনি। বলেন, ট্রেড ইউনিয়ন কেউ করতেই পারেন। তবে জেলা সভাপতিকে ইউনিয়ন সভাপতি করার সিদ্ধান্তকে `গণতন্ত্রকে ধর্ষন` করার সামিল বলে দাবি করেছেন তিনি।

দলীয় কোন্দল নিয়ে গত কয়েকদিন ধরেই বিতর্কে জর্জরিত তৃণমূল কংগ্রেস। আজকে শোভনদেবের এই মন্তব্য সেই বিতর্ককে কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিল।

First Published: Sunday, December 9, 2012, 14:39


comments powered by Disqus