Last Updated: April 27, 2012 18:19

ফের খবরের শিরোনামে মেটিয়াবুরুজ থানার পুলিস কনস্টেবল এবং সক্রিয় তৃণমূল কর্মী তারক দাস। যাদবপুরে সাংবাদিক নিগ্রহের ঘটনার পর দলীয় কর্মীকে খুনের চেষ্টার অভিযোগ উঠল ওই পুলিস কনস্টেবল তথা তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীর বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার রাতে প্রদীপ ঘোষ নামে এক দলীয় কর্মীকে বাঁশ দিয়ে মারধর করে তারক। আশঙ্কাজনক অবস্থায় প্রদীপ ঘোষ একটি বেসরকারি হাসপাতালের আইসিসিইউতে ভর্তি।
এবার তাঁর দল, তৃণমূল কংগ্রেসেরই কর্মী প্রদীপ ঘোষকে খুনের চেষ্টার অভিযোগ তারক দাসের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, বৃহস্পতিবার রাতে ফোন করে ডেকে বাঘাযতীনের রবীন্দ্র পল্লীর বাসিন্দা প্রদীপ ঘোষকে বাঁশ দিয়ে পিটিয়ে হত্যার চেষ্টা করে তারক দাস।
ঘটনার পর তারক দাসকে ধরবার চেষ্টা করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কিন্তু তারক দাস পালিয়ে যায়। এরপর পাটুলি থানায় তারক দাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়। পাটুলি থানার পুলিসও তারক দাসকে খুঁজে পায়নি। তবে শুক্রবারও কাজে যোগ দিয়েছিল মেটিয়াবুরুজ থানার এই কনস্টেবল। পুলিসের ভূমিকা নিয়ে ইতিমধ্যেই তাই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
তারক দাসের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির জামিনযোগ্য ৩২৬ ধারায় গুরুতর আঘাত করার অভিযোগ এনেছে পুলিস। কিন্তু এ ধরনের ঘটনায় সাধারণত জামিন অযোগ্য ৩০৭ ধারায় খুনের চেষ্টার অভিযোগ। আবার বৃহস্পতিবার রাতের পর থেকে তারক দাসকে নাকি খুঁজেই পাচ্ছে না পাটুলি থানার পুলিস। পুলিসের খাতায় সে পলাতক। অথচ তারক দাসের বাড়িতে গিয়ে জানা গেল অন্য তথ্য। তারক দাসের বাড়ির লোক জানালেন, বৃহস্পতিবার রাতে অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর বাড়িতেই ছিলেন ওই পুলিসকর্মী। মেটিয়াবুরুজ থানায় সকালে কাজে যোগ দিয়েছিল তারক দাস। ফলে প্রশ্ন উঠছে পুলিসের ভূমিকা নিয়ে। পুলিসকর্মী বা তৃণমূল কর্মী হওয়ার জন্যই কী তারক দাসকে গ্রেফতার করা হল না?
তারক দাসের হাতে আক্রান্ত প্রদীপ ঘোষের স্ত্রী চাইছেন, যে তাঁর স্বামীকে নির্মমভাবে মারধর করেছে তাকে গ্রেফতার করুক পুলিস।
তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীদের একাংশের অভিযোগ, এলাকায় অসামাজিক কাজ থেকে শুরু করে স্থানীয় প্রোমোটার এবং ব্যবসায়ীদের থেকে টাকা আদায় করত পুলিসকর্মী তথা তৃণমূলকর্মী তারক দাস। সেই কাজে বাধা দেওয়াই এই ঘটনা বলে অভিযোগ। যদিও প্রদীপ ঘোষের আত্মীয়দের অভিযোগ, ইমারতি ব্যবসা নিয়ে গণ্ডগোলের জেরেই এই ঘটনা।
ইএম বাইপাস সংলগ্ন একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিত্সাধীন প্রদীপ ঘোষ। চিকিত্সকেরা জানিয়েছেন, তাঁর সঙ্কট এখনও কাটেনি। প্রদীপবাবুর পরিবারের পক্ষ থেকে পাটুলি থানায় এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।
এই তারক দাসের বিরুদ্ধেই এবছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি সাধারণ ধর্মঘটের দিন যাদবপুরে সাংবাদিকদের মারধরের অভিযোগ উঠেছিল। সেই ঘটনার জেরে তাকে এক মাসের জন্য সাসপেন্ড করে লালবাজার। কিন্তু সে সময় দলের তরফে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। সেই বেপরোয়া তারক দাসের বিরুদ্ধে এবার আরও গুরুতর অভিযোগ উঠল।
First Published: Friday, April 27, 2012, 18:19