Last Updated: January 11, 2014 10:38

দেবযানি খোবরাগাড়েকে কেন্দ্র করে বড়সড় ফাটল ধরেছে ভারত-মার্কিন কূটনৈতিক সম্পর্কে। এ নিয়ে যথেষ্টই হতাশ হোয়াইট হাউস। কয়েকজন পদাধিকারীর নির্বুদ্ধিতায়, সম্পর্কের এই অবনতি বলে মন্তব্য করেছেন হোয়াইট হাউসের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক। মার্কিন প্রশাসন সূত্রে খবর, ১২ ডিসেম্বর দেবযানী খোবরাগাড়ের গ্রেফতারের খবর শোনার পরেই বিরক্তি প্রকাশ করেছিল হোয়াইট হাউস।
একে ঘিরে সম্পর্কের অবনতি নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন বারাক ওবামা। দেবযানী খোবরাগাড়ে মামলায় অগ্রগতি নিয়ে নিয়মিত খোঁজখবর নিতেন তিনি। দেবযানীর গ্রেফতারের পরেই, মার্কিন বিদেশসচিব জন কেরি সলমন খুরশিদের সঙ্গে দেখা কথা বলতে চাইলেও, তাঁকে সময় দেননি ভারতীয় বিদেশমন্ত্রী। তখন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শিবশঙ্কর মেননের কাছে গোটা ঘটনার জন্য ক্ষমা চান জন কেরি। প্রকাশ্য বিবৃতিতে অবশ্য দুঃখপ্রকাশের কথাই বলা হয়েছিল। হোয়াইট হাউস সূত্রে খবর দেবযানী দেশে ফেরার হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছে মার্কিন প্রশাসন। এরপর সম্পর্কের ফাটল মেরামতির কথা ভাবছে তারা।
নয়াদিল্লি থেকে একজন মার্কিন কূটনাতিককে সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটন থেকে ভারতীয় কূটনীতিক দেবযানী খোবড়াগারের অপসারণের পরই ভারতের অনুরোধে এই সিদ্ধান্ত নেয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। গতকাল রাত সাড়ে দশটা নাগাদ দেশে ফিরে আসেন দেবযানী খোবড়াগারে।
এর আগে মার্কিন আদালতে খারিজ হয়ে গিয়েছিল দেবযানী খোবরাগাড়ের আর্জি। আদালত জানিয়েছিল বাড়ছে না তাঁর বিরুদ্ধে চার্জগঠনের সময়সীমা। ভিসা কারচুপি থেকে রেহাই পেতে এই আর্জি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল দেবযানীর কাছে। আর এই বিতর্কের মধ্যেই ভারত সফর বাতিল করেন মার্কিন শক্তি সচিব।
দেবযানী খোবরাগাড়ে ইস্যুতে কঠোর অবস্থান থেকে সরছে না নয়াদিল্লিও। বিদেশমন্ত্রী সলমন খুরশিদ জানিয়েছেন, পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে যা যা করা উচিত, সেটাই করছে ভারত। মার্কিন আইন বলছে, গ্রেফতারের তিরিশ দিনের মধ্যে চার্জ গঠন করতে হবে। সেই অনুযায়ী ১৩ জানুয়ারি দেবযানী খোবরাগাড়ের বিরুদ্ধে চার্জগঠনের সময়সীমা শেষ হচ্ছে।
এই সময়সীমা বাড়ানোর আবেদন জানিয়েছিলেন ভারতীয় কূটনীতিক। কিন্তু মার্কিন আদালতে খারিজ হয়ে গিয়েছে সেই আর্জি। ফলে ভিসা কারচুপি বিতর্কে নতুন করে চাপ বাড়ল দেবযানীর ওপর। এই পরিস্থিতিতে অন্য বিকল্পগুলি খতিয়ে দেখতে শুরু করেছেন তাঁর আইনজীবী। ভিসা কারচুপি মামলায় অবশ্য আদালতে হাজির হওয়া থেকে নিষ্কৃতি পেয়েছেন দেবযানী খোবরাগাড়ে। কিন্তু, মার্কিন আইনকে সামনে রেখেই তাঁর বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন ম্যানহাটনের অ্যাটর্নি প্রীত ভারারা। তাঁর নির্দেশেই গ্রেফতার করা হয়েছিল দেবযানী খোবরাগাড়েকে।
এই বিতর্কে কোনওভাবেই সুর নরম করতে নারাজ নয়াদিল্লি। দিল্লির মার্কিন দূতাবাসে সমস্ত রকম বাণিজ্যিক কাজকর্ম বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র। ষোলই জানুয়ারির মধ্যে মার্কিন দূতাবাসে একটি ক্লাব বন্ধ করতে বলা হয়েছে। এগুলো যে সবই পাল্টা পদক্ষেপ সেটা বুঝিয়ে দিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী সলমন খুরশিদ।
First Published: Saturday, January 11, 2014, 14:20