Last Updated: March 21, 2013 11:00

হাতে মাত্র কয়েকটা ঘণ্টা। আজই রাষ্ট্রসংঘে শ্রীলঙ্কা বিরোধী প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটি। তার আগেই ভারতীয় সংসদে পাস করিয়ে নিতে হবে সেই প্রস্তাবের সংশোধনী। যদিও এ নিয়ে সর্বদল বৈঠকে ঐকমত্য হয়নি। মতানৈক্য রয়েছে সরকারের অন্দরেও। ডিএমকে সমর্থন প্রত্যাহার করার পর অভূতপূর্ব সঙ্কটে কেন্দ্রীয় সরকার।
সরকারের স্থায়িত্ব নিয়ে বুধবার সকালেও আত্মবিশ্বাসী ছিলেন কংগ্রেসের ক্রাইসিস ম্যানেজাররা। বেলা যত গড়িয়েছে, ততই ফিকে হয়েছে সকালের আত্মবিশ্বাস। ডিএমকের পাঁচ মন্ত্রী ইস্তফা দেওয়ার পর সঙ্কট আরও গভীর হয়েছে। ডিএমকেকে ধরে রাখতে কংগ্রেসের তরফে প্রথমে মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠক ডাকা হয়। এরপর ডাকা হয় সর্বদল বৈঠক। দুটি বৈঠকই নিষ্ফলা। এদিকে বৃহস্পতিবারই রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার পরিষদে পেশ হবে শ্রীলঙ্কা বিরোধী প্রস্তাব।
২০০৯-এ এলটিটিই নির্মূল অপারেশনের সময় শ্রীলঙ্কা সেনা ও সরকারের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ ওঠে। সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতেই প্রস্তাব পেশ হবে রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার পরিষদে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তদারকিতে তৈরি হয়েছে এই প্রস্তাব। প্রস্তাবে শ্রীলঙ্কা সেনার বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে তদন্তের সুপারিশ করা হয়েছে।
ডিএমকের দাবি, রাষ্ট্রসংঘে যে প্রস্তাব পেশ হচ্ছে তার ভাষা যথেষ্টই নরম। তাদের দাবি, রাষ্ট্রসংঘে পেশ হতে চলা প্রস্তাবের ওপর কয়েকটি সংশোধনী আনুক ভারত। সংশোধনীতে শ্রীলঙ্কা সেনা ও সরকারের বিরুদ্ধে গণহত্যা, জাতিবিদ্বেষের মতো গুরুতর অভিযোগ আনা হোক। অভিযোগের তদন্ত নিরপেক্ষ সংস্থাকে দিয়ে নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে শেষ করার কথা বলা হোক। দোষী প্রমাণিত হলে, শ্রীলঙ্কা সরকার ও সেনার বিরুদ্ধে শাস্তির সুপারিশও করুক তদন্তকারী সংস্থা। সর্বোপরি ডিএমকের দাবি ছিল সংশোধনীগুলি রাষ্ট্রসংঘের প্রস্তাবে পেশের আগে ভারতের সংসদে পাস করিয়ে নেওয়া হোক। ভারত সরকারের সুপারিশেই, শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে প্রস্তাবের ভাষা নরম করা হয়েছে বলে অভিযোগ ডিএমকের। যদিও, সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।
ডিএমকেকে ধরে রাখতে কেন্দ্রীয় সরকার বৃহস্পতিবার সংসদে শ্রীলঙ্কা বিরোধী প্রস্তাব নিয়ে আসতে চায়। যদিও সেই প্রস্তাব নিয়ে কংগ্রেসের মধ্যেই রয়েছে দ্বিমত। প্রশ্ন উঠছে, শ্রীলঙ্কার মতো সার্বভৌম দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে কীভাবে ভারতীয় সংসদে প্রস্তাব গৃহীত হতে পারে? পাকিস্তানের সংসদে আফজল গুরুকে নিয়ে গৃহীত প্রস্তাবের বিরোধিতা করছে ভারত। সেখানে শ্রীলঙ্কা নিয়ে ভারতের সংসদে প্রস্তাব গৃহীত হবে কী করে? প্রতিবেশী শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে প্রস্তাব এনে উপমহাদেশের ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতির ওপর নিয়ন্ত্রণ আলগা করার ঝুঁকি ভারত নিতে পারে কি?
কংগ্রেসেরই আরেকটি অংশের দাবি, সরকার বাঁচাতে ডিএমকের দাবি মেনে নেওয়া হোক। যদিও, ডিএমকে নেতারা মনে করছেন, অনেক দেরি হয়ে গেছে।
অভূতপূর্ব পরিস্থিতিতে শ্রীলঙ্কা বিরোধী প্রস্তাব নিয়ে বৃহস্পতিবার সংসদের মুখোমুখি হচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার।
First Published: Thursday, March 21, 2013, 11:00