Last Updated: January 1, 2013 09:15

স্বাগত দুহাজার তেরো। মোমবাতি মিছিল, শোক, প্রতিবাদের মধ্যেই শহর মাতল হৈ-হুল্লোড়, নাচগান, পানভোজনে। নিরাপত্তা, সুশাসনের দাবি নিয়ে শহর ফিরল শারীরিকতার চেনা ছন্দে। দিল্লির নির্যাতিতা তরুণীর স্মৃতি তর্পণ সেখানে যেন শুধুই বিচ্ছিন্ন ঘটনা। আনন্দ-উচ্ছ্বাসের আতিশয্যই হয়ে গেল প্রধান। বর্ষবরণের সন্ধে থেকে রাত।
মোমবাতির স্নিগ্ধ শিখাতেই আস্থা রেখেছিল পার্কস্ট্রিট। অসংখ্য মৌন দীপশিখায় বাঙ্ময় হয়ে উঠেছিল মহিলাদের সামাজিক নিরাপত্তার দাবি। অন্যান্য বছরের থেকে একেবারে আলাদা ছবি। অথচ উদযাপনের জন্য আয়োজনের খামতি নেই। এশিয়াটিক সোসাইটির মোড় থেকে মল্লিক বাজার ক্রসিং, পুরোটা জুড়েই আলোর শামিয়ানা। স্নিগ্ধ মোমের শিখা সন্ধে থেকে সেই রোশনাইকে যেন ম্লান করে দিয়েছিল। উত্সবের উষ্ণতাকে ছাপিয়ে বড় হয়ে উঠেছে প্রতিবাদের উত্তাপ।
কিন্তু উল্টো ছবি শহরের অধিকাংশ হোটেল, রেঁস্তোরায়। আনন্দ- বিষাদের মধ্যে হাজির হয় রাত বারোটা।
স্বাগত দুহাজার তেরো, অচেনা পার্ক স্ট্রিট হঠাত্ই ফিরে আসে তার চেনা ছন্দে। নীরবতার পরেই ভোলবদল। শুরু হয় নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর উচ্ছ্বাস। নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে গিয়ে হয়ত পিছনে চলে গেল নির্যাতিতা তরুণীর স্মৃতি। মোমের আলোয় দীপ্ত মুখের বদলে শুধুই উচ্ছ্বাসের আতিশষ্য।
কিন্তু এরমধ্যেই ব্যতিক্রম। বর্ষবরণের উচ্ছ্বাস নয়। আপাতত মোমের শিখাতেই তাপ এবং সন্তাপ খুঁজে নিয়েছিলেন ধর্মতলায় জড়ো হওয়া প্রতিবাদী মুখগুলি। আসলে বিক্ষোভ, প্রতিবাদ, মোমবাতি মিছিল সবই হয়েছে বিক্ষিপ্তভাবে। শেষ পর্ষন্ত সেগুলো হয়ে রইল কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। সামিল হয়েছিল শহরের অল্প সংখ্যক মানুষ। অধিকাংশই মজে রইলেন বর্ষবরণের হইহল্লোর আর নাচ, গানে। নাহলে যে শহর মোমবাতি মিছিলে পা মেলায়, সেই শহরেই বর্ষবরণের রাতে উশৃঙ্খল আচরণের জন্য গ্রেফতার হতে হয় শতাধিককে।
First Published: Tuesday, January 1, 2013, 09:15