Last Updated: March 14, 2013 17:42

চাকরি চান? কাজের সুযোগ? এই সংক্রান্ত লিফলেট বিলি স্টেশনে একেবারেই স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু এই চাকরির প্রলোভনে পা দিয়েই মারাত্মক বিপদে পড়লেন এক মহিলা। আদতে তিনি পড়ে যান নারী পাচারকারীদের খপ্পরে। এই মহিলাই পাচার হয়ে গিয়েছিলেন।
দেখুন পুরো ঘটনার এক্সক্লুসিভ ভিডিওচাকরির জন্য বাপি সাহা তাঁকে নিয়ে যান রায়পুরে। চাকরি তো পাননি তিনি। বরং হতে হয়েছে মারাত্মক অভিজ্ঞতার শিকার। মারাত্মক এক চক্রের শিকার হয়েছেন এটা বুঝতে পেরেই পালানোর ছক কষতে শুরু করেন ওই মহিলা। পেয়েও যান সেই সুযোগ।
পাচারকারীদের হাত থেকে মুক্ত হয়ে কোনওরকমে ফিরতে পারলেও এরপর থেকে মহিলাকে পড়তে হয় হুমকির মুখে। বাপি সাহা, যার মাধ্যমে পাচার হয়েছিলেন তারই হুমকি চলতে থাকে। বলা হয়, দিতে হবে ক্ষতিপূরণ। ডেকেও পাঠানো হয় মহিলা ও তাঁর স্বামীকে। একইসঙ্গে চলতে থাকে হুমকি ফোন। অভিযুক্তদের হাত নাকি রয়েছে অনেক দূর পর্যন্ত। কথায় কথায় তারা শুনিয়েছে মন্ত্রী থেকে পুলিসকর্তাদের নাম।
বুধবার রাতভর আতঙ্কে কাটিয়েছেন ওই মহিলা। চোখের জল এখনও শুকোয়নি। পাচারকারীদের হাত থেকে কোনওরকমে মুক্ত করেছেন নিজেকে। এবার লড়াই স্বামীকে মুক্ত করার।
দিশেহারা অবস্থা। নিজে মুক্তি পেয়েছেন। কিন্তু নারীপাচার চক্রের হাতে আটক স্বামী। আসছে হুমকি ফোন। চাওয়া হচ্ছে মুক্তিপণ। এক দুটাকা নয়, পাচার চক্রের খপ্পর থেকে স্বামীকে উদ্ধার করতে মুক্তিপণের মূল্য ধার্য হয়েছে তিন লক্ষ টাকা।
নারী পাচারকারীদের ক্রমাগত হুমকি ফোনে ভয়ে কুঁকড়ে গিয়েছিলেন ওই মহিলা। পৌঁছন চব্বিশ ঘণ্টার দফতরে। নিজের দিশেহারা অবস্থার কথা বিস্তারিত জানান আমাদের। ক্রমাগত হুমকির জেরে পুলিসের কাছে যেতে ভয় পাচ্ছিলেন ওই মহিলা। আমরা বোঝাই যে পুলিসের কাছেই যান। পুলিস -প্রশাসনই পারবে এই বিপদ থেকে উদ্ধার করতে।

দীর্ঘসময় বোঝানোর পর অবশেষে কলকাতা পুলিসের সদর দফতর লালবাজারে যেতে রাজি হন তিনি। পৌঁছন লালবাজারে। অত্যন্ত দ্রুত উদ্যোগ নেন পুলিস কর্তারা। শিয়ালদায় পৌঁছে যায় কলকাতা পুলিসের বিশেষবাহিনী। সঙ্গে...আমরা। এখানেই রয়েছে স্পেশাল অপারেশন গ্রুপের ঘর। এই ঘরেই রাতভর আটকে রাখা হয় ওই মহিলার স্বামীকে।
হাতেনাতে ধরা পড়ে যায় তিন অভিযুক্ত। উদ্ধার হয় স্বামী। মহিলা। ওকে ফিরে পাব ভাবিনি। আপনাদের ধন্যবাদ। শিয়ালদা জিআরপির দুই কনস্টেবল বিশ্বজিত্ দাস ও আলতাফ হোসেন এই হমকি ফোন ও পাচারচক্রের সঙ্গে যুক্ত। তৃতীয় অভিযুক্ত সাফাইকর্মী সইদুল মোল্লা।
মেজোবাবু বসেছিলেন। আমার বাড়িতেও গেছিলেন। কোনও ঘটনাই জিআরপি কর্তাদের অজানা ছিলনা। অর্থাত্ রক্ষকই ভক্ষক। যেভাবে খাস রেল পুলিসের স্পেশাল অপারেশন গ্রুপের ঘরে এক ব্যক্তিকে আটকে রেখে মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টা চলেছে তাতে দায়িত্ব এড়াতে পারেন না রেল পুলিসের কর্তারাও।
First Published: Thursday, March 14, 2013, 23:49