গুলবার্গ গণহত্যা রিপোর্ট প্রকাশে অনিচ্ছুক `সিট`

গুলবার্গ গণহত্যা রিপোর্ট প্রকাশে অনিচ্ছুক `সিট`

গুলবার্গ গণহত্যা রিপোর্ট প্রকাশে অনিচ্ছুক `সিট`গুলবার্গ গণহত্যার তদন্ত রিপোর্ট এবং আনুষঙ্গিক নথিপত্র কোনও ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের হাতে তুলে দেওয়ার ক্ষেত্রে আপত্তি তুলল বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)। ২০০২ সালের গোধরা পরবর্তী গুজরাত দাঙ্গার বিভিন্ন ঘটনার তদন্তে সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত সিট-এর তরফে এদিন আমদাবাদের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের এজলাসে এই 'অবস্থান' স্পষ্ট করা হয়েছে।

২০০২ সালে গুজরাত দাঙ্গার সময় আমদাবাদের গুলবার্গ সোসাইটি গণহত্যায় নিহত হন প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ এহসান জাফরি। ওই ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন এহসান জাফরির স্ত্রী জাকিয়া জাফরি। তাঁর আবেদনের ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তদন্তে নামে গুজরাত-দাঙ্গার বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)। কিন্তু তাত্‍পর্যপূর্ণ ভাবে `সিট`-এর রিপোর্টের ভিত্তিতে নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে গুজরাত দাঙ্গা নিয়ন্ত্রণে নিষ্ক্রিয় থাকার অভিযোগ প্রসঙ্গে কোনও রায় দেয়নি শীর্ষ আদালত। `আদালত বান্ধব` রাজু রামচন্দ্রনকে দিয়ে সিট-এর রিপোর্ট পর্যালোচনা করানোর গত ১২ সেপ্টেম্বর বিচারপতি ডি কে জৈনের নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের তিন সদস্যের বেঞ্চ এই মামলার বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণের ভার আমদাবাদের ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের উপর ছেড়ে দেয়।
গুলবার্গ গণহত্যা রিপোর্ট প্রকাশে অনিচ্ছুক `সিট`

৮ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত 'সিট'-এর তরফে আমদাবাদের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম এস ভাটের কাছে সিল-বন্ধ খামে গুলবার্গ গণহত্যা মামলার 'ক্লোজার রিপোর্ট' জমা দেওয়া হয়। গুজরাতের সংবাদমাধ্যমের একাংশের দাবি, মুখ্যমন্ত্রী মোদীর বিরুদ্ধে দাঙ্গায় প্ররোচণা দেওয়া বা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে প্রশাসনকে নিষ্ক্রিয় রাখার অভিযোগ উল্লিখিত হয়নি সিট-রিপোর্টে। অভিযুক্ত অন্য ৫৭ জন রাজনীতিক ও প্রশাসনিক কর্তার বিরুদ্ধেও প্রমাণ সংগ্রহে আপারগতার কথা স্বীকার করেছে সিট। সংবাদমাধ্যমে গুলবার্গ গণহত্যাকাণ্ডের দায় থেকে নরেন্দ্র মোদীকে রেহাই দেওয়ার কথা প্রচারিত হওয়ার পরই সমাজকর্মী তিস্তা শেতলবাদ এবং মুকুল সিনহা মেট্রোপলিটন আদালতে দু'টি পৃথক আবেদনপত্র পেশ করে সিট-রিপোর্টের কপি চেয়েছিলেন। ৯ ফেব্রুয়ারি নিম্ন আদালতে এই মামলার শুনানির সময় বিচারক এম এস ভাট এই ব্যাপারে 'অবস্থান' জানতে চেয়ে একটি নোটিস পাঠান সিট'কে। আজ ছিল এই মামলার শুনানি।

এদিন সিট-এর কৌঁসুলি জানান, কয়েক হাজার পাতার তদন্ত রিপোর্ট ও আনুষঙ্গিক নথিপত্র যথাযথ ভাবে সঙ্কলিত করে আদালতে পেশ করার জন্য আরও সময় প্রয়োজন। সেই সঙ্গে রিপোর্ট ও অন্যান্য নথিপত্র এখনি কোনও মানবাধিকার সংস্থাকে দেওয়ার ব্যাপারেও আপত্তি জানায় হয় বিশেষ তদন্তকারী দলের তরফে। অন্য দিকে তিস্তা শেতলবাদের আইনজীবী বলেন, গুলবার্গ গণহত্যার তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ্যে আনার ব্যাপারে অনীহা প্রকাশ করে আদালতের অবমাননা করছে সিট। চূড়ান্ত রিপোর্ট পেশের আগে সিট-এর তরফে এই সময় প্রার্থনা এবং রিপোর্টের বিষয়বস্তু প্রকাশ্যে না আনার আবেদনের বিষয়ে অবশ্য কোনও রায় দেননি বিচারক এম এস ভাট। আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি এই মামলার পরবর্তী শুনানি।



First Published: Monday, February 13, 2012, 17:36


comments powered by Disqus