Last Updated: July 7, 2014 20:29

কয়েকবছর আগে ভারতীয় ফুটবলের ডিফেন্ডার হিসেবে দেশকে গর্বিত করেছেন তিনি। আর এখন ওড়িশার কেন্দ্রপাড়া জেলার আদুলে ছোট্ট পানের দোকান চালিয়েই দিন গুজরান করেন ২৩ বছরের রষ্মিতা পাল। কিন্তু এখনও ফুটবলই তাঁর প্রথম ভালবাসা।
স্বামী ও ছোট্ট সন্তানকে নিয়ে অভাবের সংসার টানতে তাঁকে বেছে নিতে হয়েছে এই জীবন। বললেন, "ফুটবল আমার রক্তে। কিন্তু দারিদ্য আমার কেরিয়ার কুঁড়িতেই মেরে ফেলেছে। ফুটতে দেয়নি।" গরীব দিনমজুরের মেয়ে রষ্মিতা ১২ বছর বয়সে ফুটবল খেলা শুরু করেন। দুই কোচ চিত্তরঞ্জন পাত্র ও প্রমোদ পাত্র অল্পবয়সেই রষ্মিতার প্রতিভা দেখে তাঁকে ট্রেনিং দেওয়া শুরু করেন। রাজ্য ও জাতীয় স্তরে বিভিন্ন টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণের পর ২০০৮ সালে মালয়শিয়ার কুয়ালালামপুরে এশিয়ান ফুটবল ফেডারশেনের অনুর্ধ্ব ১৬ মহিলা দলে যোগ্যতা অর্জন করেন রষ্মিতা।
এর দুবছর পর কটকে অনুর্ধ্ব ১৯ ন্যাশনাল উইমেন্স ফুটবলে ওড়িশাকে জেতানোয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন রষ্মিতা। ২০১১ সালে ঢাকায় সিনিয়র এএফসি যোগ্যতা অর্জন পর্বে ভারতীয় দলে প্রতিনিধিত্ব করেন তিনি। বাহরিনে আমন্ত্রণমূলক ফুটবল ম্যাচও খেলতে যান। ২০১২ সালে ভিলাইতে অনুষ্ঠিত সিনিয়র উইমেন্স ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে বিজয়ী ওড়িশা দলের সদস্য ছিলেন তিনি।
কিন্তু এত সাফল্যও ঘোচাতে পারেনি দারিদ্র। অভাবের তাড়নায় স্কুলের পড়াশোনাও শেষ করতে পারেননি তিনি। জানালেন, "মালয়শিয়ায় এএফসি কোয়ালিফায়ার ক্যাম্প থাকায় ক্লাস টেনের পরীক্ষায় বসতে পারিনি আমি।" খরচ জোগাতে না পেরে ২০০৯ সালে ভুবনেশ্বরের স্পোর্টস হোস্টেল ছাড়তে বাধ্য হল রষ্মিতা। ২০১৩ সালে তাঁর বিয়ে হয়ে যায়। স্বামীর কোনও স্থায়ী চাকরি নেই সংসার চালাতে তাই পানের দোকানই ভরসা তাঁর।
রষ্মিতার কোচ চিত্তরঞ্জন পাত্র জানালেন, শিক্ষাগত যোগ্যতা বেশি দূর না থাকার কারণে রষ্মিতা চাকরি পাননি। তাঁর জীবনের গল্পো দারিদ্রের অন্ধকারে প্রতিভা হারিয়ে যাওয়ার গল্পো। রষ্মিতার বিষয়ে খোঁজ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন ওড়িশার স্পোর্টস ও ইউথ সার্ভিস মন্ত্রী সুদাম মারান্দি। বলেন, "রাজ্য সরকার বিভিন্ন সময়ে খেলোয়াড়দের জন্য বিভিন্ন অনুদান অনুমোদন করে। আমি চেষ্টা করব যাতে রষ্মিতা খেলায় ফিরতে পারেন।"
First Published: Monday, July 7, 2014, 20:51