আফগানিস্তানে নিহত `কাবুলিওয়ালার বাঙালি বউ`

আফগানিস্তানে নিহত `কাবুলিওয়ালার বাঙালি বউ`

আফগানিস্তানে নিহত `কাবুলিওয়ালার বাঙালি বউ` `কাবুলিওয়ালার বাঙালি বাউ` আত্মজীবনীর লেখক সুস্মিতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আফগানিস্তানে হত্যা করল তালিবানিরা। আফগানিস্তানের পাকতিকায় রাতে লেখিকার বাড়িতে হামলা চালায় তালিবানিরা। স্বামী আত্মীয়দের বেঁধে তাণ্ডব চালায় তাঁরা। সুস্মিতাকে বাড়ির বাইরে এনে খুন করে তালিবান জঙ্গিরা। স্থানীয় একটি মাদ্রাসার সামনে লেখিকার দেহ পুঁতে দেওয়া হয়েছে বলে খবর।

সুস্মিতার জীবনের গল্প

১৯৮৮, ২ জুলাই। ২৭ বছর বয়সে স্পেশল ম্যারেজ অ্যাক্টে জানবাজ খান নামের এক কাবুলিওয়ালাকে বিয়ে করেন সুস্মিতা। জানভাজের সঙ্গে বাড়িতে অমতে আফগানিস্তানে পালিয়ে যান সুস্মিতা। জানবাজ পরে কলকাতায় ফিরে এসে ব্যবসা শুরু করলেও তালিবানিদের ফতোয়ার কারণে আফগানিস্তানেই থেকে যেতে হয় সুস্মিতাকে।

শ্বশুর বাড়িতে তিন ভাশুর তাঁদের স্ত্রী ছেলে মেয়ে ও স্বামীর প্রথম পক্ষের স্ত্রীর সঙ্গেই তখন ঘর করছেন সুস্মিতা। সেই সময় আফগানিস্তানে তালিবান রাজ শুরু হয়। বন্ধ হয়ে যায় বই, টেলিভিশন, রেডিও, সংবাদপত্র। মেয়েদের বাড়িতে বাইরে বেড়েনোর ওপর জারি হয় নিষেধাজ্ঞা।

পেশায় নার্স সুস্মিতা তালিবানদের লুকিয়ে একটি ক্লিনিক খোলেন। ১৯৯৫ তালিবানরা জানতে পেরে সুস্মিতার উপর অত্যাচার চালায়। ১৯৯৫, ২২ জুলাই সুস্মিতার নামে ফতোয়া জারি করে তালিবানরা।

সুস্মিতা এরপরই কোনওক্রমে একটি জিপে চড়ে পাকিস্তানের ইসলামাবাদে পালিয়ে আসেন। যোগাযোগ করেন ভারতীয় দূতাবাসে। কিন্তু সেখান থেকে উল্টে তাঁকে তালিবানিদের হাতে তুলে দেয়। এরপর আবার তিনি পালাবার চেষ্টা করেন এবং ধরা পড়েন। কিন্তু তৃতীয়বার তিন তালিবানকে হত্যা করে পালিয়ে আসার চেষ্টা করেন। কাবুল থেকে তাঁকে ভিসা, পাসপোর্ট দেওয়া হয় কলকাতা ফেরার জন্য। ১৯৯৫, ১২ অগাস্ট কলকাতায় ফেরেন তিনি।

১৯৯৭ সালে নিজের জীবনের কালো অভিজ্ঞতার অধ্যায়গুলো নিয়ে লেখা বই `কাবুলিওয়ালার বাঙালি বউ` পাঠকদের মধ্যে সারা ফেলে দিয়েছিল। তাঁর লেখা কাহিনী এসেছে বড় পর্দাতেও। এসকেপ ফর্ম তালিবান তাঁর উপন্যাসের থেকে তৈরি ছবি।

First Published: Thursday, September 5, 2013, 19:40


comments powered by Disqus