Last Updated: September 2, 2013 22:31

জন্মেও উত্সব। মৃত্যুতেও। উত্সবে মোড়া জীবনের প্রতিটি পরত। দুঃখ-কষ্ট বেদনার হাত থেকে মূল্যবান জীবনটাকে রক্ষা করতে উত্সবই সম্বল, পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনওয়া প্রদেশের কৈলাশ উপজাতির। আলেকজান্ডারের আমল থেকেই হিন্দুকুশের বুকে তাঁরা বাঁচিয়ে রেখেছেন নিজেদের স্বতন্ত্র চিরানন্দ সংস্কৃতি। হিন্দুকুশের দুর্গম প্রেক্ষাপটে কাঠ আর পাথরের ছোট ছোট বাড়ি। ছবির ধূসর ভাবটা বদলে দেন রঙিন অধিবাসীরা।
খাইবার পাখতুনওয়ার চিত্রাল জেলার এই উপজাতির নাম কৈলাশ। চির-আনন্দই এঁদের নিত্যসঙ্গী। আনন্দের সেই রেশটুকু এরা বাঁচিয়ে রাখতে চান মৃত্যুতেও। তাই বিষাদ নয়, মৃত্যুতেও যেন উত্সবের ছোঁয়া। চক নামের সেই উত্সবে মুখ চুলে ঢেকে মৃতদেহের কাছে বসে থাকেন পরিবারের মহিলারা। আর চারপাশে নাচগানে মাতেন বাকিরা। কোনও পুরুষের মৃত্যু হলে তিনদিন ধরে চক উত্সব চলে। মহিলাদের ক্ষেত্রে উত্সব হয় একদিনের। পারলৌকিক আচার হিসেবে চুল কেটে ফেলেন মৃতের আত্মীয়রা। মৃত্যুর সেই উতসবে থাকে ভুরিভোজের ব্যবস্থাও। সেজন্য তিরিশ, চল্লিশ বা কখনও কখনও একশোটিরও বেশি পাঁঠার প্রয়োজন হয়।
উত্সবের পর খোলা কফিনে দেহ গ্রামের বাইরে রেখে দিয়ে আসাই রেওয়াজ ছিল। কিন্তু সংক্রমণের ভয়ে বর্তমানে অনেকেই দেহ সমাহিত করছেন। আলেকজান্ডারের বাহিনীর বংশধর হিসেবেই মনে করা হয় এই কৈলাশ উপজাতিকে। সেদিন থেকেই তাঁরা আঁকড়ে ধরে রেখেছেন তাদের নিজস্ব ধর্ম ও সংস্কৃতিকে। তাই সেলুকাসের যুগের সেই বিচিত্র লোকাচারের ছোঁয়া আজও পাওয়া যায় হিন্দুকুশের উপত্যকায়।
First Published: Monday, September 2, 2013, 22:31