Last Updated: November 11, 2013 16:28

দুটি ঐতিহাসিক নজির তৈরি করলেন ছত্তিশগড়ের রেড করিডরের ভোটাররা। এক, দেশের মধ্যে তাঁরাই প্রথম না ভোটের অধিকার প্রয়োগ করলেন। দুই, মাওবাদীদের ফতোয়া উপেক্ষা করে সামিল হলেন ভোট প্রক্রিয়ায়। নজিরবিহীন ভাবে ভোট পড়ল সত্তর শতাংশ। এর আগে কখনও এসব অঞ্চলে এত ভোট পড়েনি।
বস্তার, রাজনন্দন গাও, সুকমা, দান্তেওয়াড়া, ছত্তিশগড়ের এই চার জেলা মাওবাদী ঘাঁটি বলে পরিচিত। প্রতিবারই ভোটের সময় ফতোয়া জারি করে মাওবাদীরা। ভোট বয়কটের ফতোয়া। কিন্তু এবার সেই ফতোয়া উপেক্ষা করেই ভোট দিলেন মাওবাদী প্রভাবিত এলাকার মানুষরা। বিকেল তিনটে পর্যন্তই দেখা যায় ভোট পড়ে সত্তর শতাংশ। কিন্তু প্রশাসনের আঁটোসাঁটো নিরাপত্তা সত্ত্বেও এড়ানো গেল না মাওবাদী হামলা। দান্তেওয়াড়ায় বুথে মাওবাদী হামলায় এক সিআরপিএফ জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে। বস্তারে মাওবাদীদের রাখা বোমা নিষ্ক্রিয় করতে গিয়ে জখম হয়েছেন এক পুলিস কর্মী। উদ্ধার হয়েছে দশটি শক্তিশালী বোমা। কাঙ্কেরে জখম হয়েছেন এক বিএসএফ জওয়ান।
ছত্তিশগড়ের ৯০টি বিধানসভার মধ্যে আঠেরোটিতে ভোট হল সোমবার। আঠেরোটি কেন্দ্রে ভোটার সংখ্যা ঊনত্রিশ লক্ষের কিছু বেশি। প্রতিবারই ভোট উপলক্ষে নিরাপত্তা বলয়ে মুড়ে ফেলা হয় মাওবাদী প্রভাবিত ছত্তিশগড়ের সব এলাকা। এবারও ব্যতিক্রম ছিল না। আঠেরোটি কেন্দ্রে ভোটের জন্য এক লক্ষ সশস্ত্র বাহিনীর নিরাপত্তা বলয় তৈরি হয়। শুধু বুথেই নয় গোটা এলাকাতেই চলে টহলদারি।
এক লক্ষ শসস্ত্র পুলিসের মধ্যে ৫০ হাজারেরও বেশি ছিল কেন্দ্রীয় সশস্ত্র বাহিনী। প্রতিবারই প্রায় একইরকম ব্যবস্থা থাকলেও মাওবাদীদের ভয়ে ভোট দিতে আসেননা মানুষ। যাঁরা ভোট দেন তারা আঙুলে কালি লাগাতে চান না। আর এবার ছবিটা একদম অন্যরকম। ভোট দিয়ে শুধু আঙুলে কালিই লাগালেন না। ক্যামেরার সামনে দেখালেনও।
অত্যুত্সাহী ভোটারদের মধ্যে মহিলা আর নতুন ভোটারদের সংখ্যা ছিল চোখে পড়ার মত। ভোট দিতে এসেছিলেন সদ্য মাওবাদীদের হাতে খুন হওয়া কংগ্রেস নেতা উদল মাদলিয়রের স্ত্রী। এই আঠেরোটি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে পনেরোটি বিজেপির দখলে। যার মধ্যে রয়েছে মুখ্যমন্ত্রী রমন সিং-এর নিজের কেন্দ্রটিও।
সাধারণ ভাবে কোথাও বেশি ভোট পড়লে তা বিরোধী শিবিরের কাছে খুশির খবর। কিন্তু ছত্তিশগড়ের শাসক বিজেপির দাবি মাওবাদী এলাকায় উন্নয়নের জেরেই মানুষ ঘর থেকে বেরিয়ে এসে ভোট দিয়েছে তাদের।
First Published: Monday, November 11, 2013, 23:03