Last Updated: January 19, 2012 17:15

রাজ্য জুড়েই ধানের সঠিক মূল্য পাচ্ছেন না কৃষকরা। রাজ্যে গত ৮ মাসে ২৪ জন কৃষকের আত্মঘাতী হওয়ার ঘটনা ঘটল। ফলে মহাজনী দেনা শোধ করতে না-পেরে প্রায় প্রতিদিনই আত্মঘাতী হচ্ছেন কৃষক। অথচ, ভরা সভায় মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, `একজন চাষিও মরেনি। যারা মরেছে তাদের নাম চাষি হিসাবে সরকারি খাতায় নথিভুক্ত নেই।`
কেন্দ্রীয় সরকারের বেঁধে দেওয়া ন্যূনতম দামে ফসল বিক্রি করে অন্তত মহাজনের ঋণ শোধের পরিকল্পনা করেছিলেন রাজ্যের কৃষকরা। কিন্তু তেমন ভাবে ধান কিনতে উদ্যোগী হয়নি রাজ্য সরকার। দেড় মাসে লক্ষমাত্রার ১৫ শতাংশও ছুঁতে পারেনি প্রশাসন। ফলে দেনার দায় প্রায় প্রতিদিনই রাজ্যের কোথাও না-কোথাও আত্মহত্যা করছেন কৃষক-খেতমজুর। নয় নয় করে গত আট মাসে সংখ্যাটা ২৪ ছুঁয়েছে। কোথাও গলায় বিষ কোথাও দড়ি দিয়ে ঋণের ফাঁস থেকে মুক্তি খুঁজছেন বাংলার চাষিরা। বৃহস্পতিবারই আত্মহত্যা করেছেন বর্ধমানের গলসির কৃষক সুশান্ত ঘোষ। তাঁর পরিবার জানিয়েছে, দেনার দায়েই আত্মঘাতী হয়েছেন তিনি। অথচ সেকথা মানতেই রাজি নয় রাজ্যের তৃণমূল নেতৃত্বাধীন সরকার। মানতে রাজি নয় সরকারের সর্বময়ী কর্তী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল কংগ্রেসের পঞ্চায়েতিরাজ সম্মেলনে ভরা নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে দলীয় নেতা-কর্মীদের সামনে তিনি বললেন, এক জনও কৃষকও মরেনি। যে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে তাঁদের নাম কৃষক হিসেবে সরকারি খাতায় নথিভূক্ত নেই।

বৃহস্পতিবার বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে সুশান্ত ঘোষের। সোমবার কীটনাশক খেয়েছিলেন বছর পঁয়ত্রিশের ওই কৃষক। তার পর থেকে যমে-মানুষে লড়াই চলছিল। মৃত কৃষকের পরিবারের দাবি, গত মরশুমে ধান চাষ করেছিলেন সুশান্তবাবু। ফসলের দাম না-পাওয়া দেনায় ডুবেছিলেন তিনি। অথচ মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, মৃতরা কৃষক নন। তাঁরা সকলেই জটিল হয় জটিল রোগে আক্রান্ত ছিলেন। অথবা, কোটি কোটি টাকা ব্যক্তিগত ঋণ নিয়েছিলেন। টিভির পর্দায় এই বক্তব্য শুনে মৃত সুশান্তবাবুর শ্বশুরমশাইয়ের প্রতিক্রিয়া, `চ্যালেঞ্জ করছি, মুখ্যমন্ত্রী এসে দেখে যান আমরা চাষি কি না।`
First Published: Thursday, January 19, 2012, 19:53