চেতলা কাণ্ডে দলীয় তদন্তের নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর

চেতলা কাণ্ডে দলীয় তদন্তের নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর

চেতলা কাণ্ডে দলীয় তদন্তের নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীরচেতলা কাণ্ডে নাটকীয় মোড়। বয়ান বদলে ফেললেন অভিযোগকারিনী। নিজের বয়ানের থেকে একশো আশি ডিগ্রি ঘুরে গিয়ে মঙ্গলবার মহিলা স্বীকার করে নিলেন মিথ্যে কথা বলেছিলেন তিনি। তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই তাঁর ওপর চাপ দেওয়া হচ্ছিল মিথ্যা কথা বলার জন্য। সেই কারণেই তিনি পুলিসের কাছে মিথ্যা অভিযোগ করেছিলেন বলে এদিন স্বীকার করে নিয়েছেন মহিলা। চেতলা কাণ্ডের ঘণ্টার মধ্যেই বয়ান বদলে ফেলছেন মূল অভিযোগকারিনী সোনাই হালদার। তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই তাঁর ওপর চাপ দেওয়া হচ্ছিল মিথ্যা কথা বলার জন্য। সেই কারণেই তিনি পুলিসের কাছে মিথ্যা অভিযোগ করেছিলেন বলে এদিন জেরায় স্বীকার করে নিয়েছেন তিনি। কিন্তু কীসের চাপে মিথ্যা বলতে হল তাঁকে? ঠিক কী কারণে ধর্ষণের মতো মিথ্যা অভিযোগ আনতে তিনি বাধ্য হলেন? এই ঘটনায় জড়িয়ে গিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের দুই গোষ্ঠীর নাম। ঘটনার স্বার্থে তৃণমূলে দলীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

রাতের কলকাতায় আবারও ধর্ষণের ঘটা সত্বেও, চেতলা কণ্ডে প্রথম থেকেই কতগুলো প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। যে সময় ও যেখানে এই ঘটনা ঘটে সেই সময় ওই এলাকায় যথেষ্ট লোকজন থাকার কথা। কিন্তু ঘটনার কোনও প্রত্যক্ষদর্শী খুঁজে পায়নি পুলিস। মহিলা সঠিক ভাবে বলতেও পারেননি যে গাড়িতে দুস্কৃতীরা এসেছিল সেই গাড়ির মুখ কোনদিকে ছিল। মহিলাকে একটি জায়গায় নিয়ে গিয়ে দুজন ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। অথচ মহিলা তাদের কারোর চেহারার কোনও বর্ণনা পর্যন্ত দিতে পারেননি। ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণের অন্যতম নথি নিগৃহীতার ডাক্তারি পরীক্ষার রিপোর্ট। কিন্তু এক্ষেত্রেও অত্যন্ত কৌশলে পুলিসের চোখে ধুলো দেওয়ার চেষ্টা করেছেন ওই মহিলা। যার জেরে মেডিক্যাল পরীক্ষার পর চিকিত্সকরা জানিয়ে দেন, মহিলার শরীরে অত্যাচারের কোনও চিহ্ন পাওয়া যায়নি। এতগুলো অসঙ্গতির সূত্র ধরেই তদন্ত চালিয়ে শেষ পর্যন্ত পুলিস বুঝতে পারে মহিলার অভিযোগ সত্যি নয়।

জানা গিয়েছে রবিবার সোনাইকে প্রথমে থানায় নিয়ে যান তৃণমূল কাউন্সিলর জুঁই বিশ্বাস। সঙ্গে ছিলেন আবাসনমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের ভাই স্বরূপ বিশ্বাস। মঙ্গলবার পুলিসি জেরায় ভেঙে পড়ে সোনাই। পুলিস প্রথম থেকেই তার বয়ানে অসঙ্গতি রয়েছে বলে সন্দেহ করে। পরে তদন্তে জানা যায় ঘটনার সময় রাতে তিনি যে বাড়িতে আয়ার কাজ করতেন সেখানেই ছিলেন। প্রশ্ন উঠেছে, তবে কি রাজনৈতিক চাপের মুখে বয়ান বদল করলেন ওই সোনাই? জুঁই বিশ্বাস অবশ্য সেকথা মানতে চাননি। তাঁর যুক্তি, তিনি জনপ্রতিনিধি হিসাবে নিগৃহীতাকে থানায় নিয়ে যান। সেসময় অন্য তৃণমূল কর্মী ছেনোর সম্পর্কে কিছুই তিনি জানতেননা বলে জানিয়ছেন জুঁই। এমনকী মহিলার বক্তব্যে কোনও রকম অসঙ্গতির ইঙ্গিত পাননি বলেও জানিয়েছেন তৃণমূল কাউন্সিলর। সেই সঙ্গে তাঁর স্বামী স্বরূপ বিশ্বাস ঘটনার সঙ্গে কোনও ভাবেই যুক্ত নন বলেও দাবি করেছেন তিনি।

সোনাই হালদারের এদিনের বক্তব্যের পর ধর্ষণের মিথ্যা অভিযোগের থেকেও যেই প্রশ্নটা বড় করে দেখ দিয়েছে তা হল এই ঘটনার পিছনের রাজনীতি। সোনাইয়ের স্বীকারোক্তির পরই জুঁই বিশ্বাস জানান অজয় ভট্টাচার্য ওরফে ছোনোকে তিনি চেনেন না। অথচ শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের বয়ানে উঠে এসেছে অজয়কে অরূপ বিশ্বাসের ঘনিষ্ঠ হিসেবেই চিনতেন তিনি। শোভনদেব চট্টপাধ্যায় আরও জানান, তৃণমূলের কেউ এই নক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়ে থাকলে দল তাকে বহিষ্কার করতে কসুর করবেনা। সেই সঙ্গে তিনি এও জানান তিনি অজয় ভট্টাচার্যকে দীর্ঘদিনের পার্টি কর্মী হিসাবে চেনেন। রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতা ফিরহাদ হাকিম এই ঘটনার জন্য সংবাদমাধ্যমকে এক হাত নিয়েছেন। সংবাদমাধ্যমের একাংশ কুৎসা রটানোর চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি।











First Published: Tuesday, August 14, 2012, 23:14


comments powered by Disqus