Last Updated: October 19, 2012 14:48

লম্বা, সুঠাম, পেশিবহুল চেহারার বাঙালি পুরুষ চিরকালই বিরল।
আনন্দ ঘোষ তাঁদেরই একজন। তবে শুরুটা মোটেও এরকম ছিল না। রোগা, প্যাংলা চেহারা বলে বরাবরই বন্ধুমহলে ঠাট্টা করা হত তাঁকে নিয়ে। তারপর রীতিমত খেটেখুটে, ঘাম ঝরিয়ে তিনি আজকের আনন্দ। আর যেই না হলেন ঝুপ করে মডেলিংয়ের অফারও নিজে থেকেই এসে পড়ল তাঁর ঝুলিতে। প্যালারাম থেকে হান্ডসাম হাঙ্ক হওয়ার সেই গল্পই শোনালেন আমাদের। শুনলেন ২৪ ঘণ্টার প্রতিনিধি
প্রমা মিত্র।
পরিবার এবং পড়াশোনাআমার বাড়ি যাদবপুরে। বাবার ওষুধের ব্যবসা রয়েছে, আমার মা হোমমেকার। জি ডি বিড়লা থেকে ক্লাস টুয়েলভ পাশ করার পর সাদার্ন এভিনিয়্যুয়ের সেন্ট পিটার্স কলেজ থেকে বিবিএ করেছি আমি।
মডেলিংয়ে আসার গল্পোআমার মডেলিংয়ে আসা নিয়ে একটা মজার ঘটনা আছে। আমি কখনই ভাবিনি গ্ল্যামার ওয়ার্ল্ডে আসব। আমি খেলতে খুব ভালবাসতাম। ফুটবল, ক্রিকেট, টেবিল টেনিস সবকিছুই খেলতাম। আন্ডার নাইন্টিনে স্কুলের প্রতিনিধিত্বও করেছি যখন স্কুল পাশ করলাম তখন খুব রোগা ছিলাম। বন্ধুরা খুব খেপাত। সেই জন্য টুয়েলভ পাশ করার পর আমি জিম জয়েন করলাম। জিম করার পর আস্তে আস্তে ফিজিক্যালি ইমপ্রুভ করলাম। তখন একদিন আমি ট্রেনে করে বাড়ি ফিরছিলাম। হঠাত্ একজন সহযাত্রী আমাকে মডেলিংয়ের প্রস্তাব দেন। আমি সেরকম উত্সাহ দেখাইনি। তখন উনি ওনার নিজের এক্সপেরিমেন্টের জন্য আমার কিছু ছবি তুলতে চান। আমি রাজি হলে উনি আমার বেশ কিছু ছবি তোলেন এবং ছবিগুলো বিভিন্ন জায়গায় সার্কুলেট করে দেন। সেইসূত্রেই আমার কাজ পাওয়া শুরু হল। আস্তে আস্তে পেশাটাকে ভালবেসে ফেললাম। তারপর ২০০৭-এ গ্ল্যাডরাগস মেগাহান্ট কনটেস্টে ফটোজেনিক ফেস জিতি। প্রথম ৬তেও সিলেক্টেড হয়েছিলাম। তখন থেকেই জীবনের মোড় ঘুরে যায়।
এখনও পর্যন্ত সেরা কাজআমি প্রথম থেকেই যখন যেই কাজটাই করেছি সেটাকেই সেরা কাজ মনে করে করেছি আর আমার সেরাটাই দিয়েছি। তাই আজ পর্যন্ত আমার সব অ্যাসাইমেন্টই আমার কাছে সেরা। আমি র্যাম্পে যেরকম কাজ করেছি, সেরকমই প্রিন্টেও প্রচুর কাজ করেছি। দুটো কর্মাশিয়াল শুটও করেছি। প্রায় সব ন্যাশনাল লেবেল ডিজাইনারদের শোতেই আমি র্যাম্পে পারফর্ম করেছি। কলকাতা ফ্যাশন উইক, ব্লেন্ডারস প্রাইড ফ্যাশন ট্যুর সব র্যাম্পেই হেঁটেছি। সব্যসাচী মুখার্জি, দেব আর নীল সবার হয়েই র্যাম্পে হাঁটার সুযোগ হয়েছে। প্রিন্টে গারমেন্ট শুট, ফ্যাশন শুট, এডিটোরিয়াল শুট সবরকমই করেছি। এছাড়াও অজন্তা ফুটওয়্যার, পি সি চন্দ্র জুয়েলার্সের কমার্শিয়ালে কাজ করেছি।
মডেলিং এবং বাড়িআমার মডেলিংয়ে আসা নিয়ে বাড়িতে কোনও সমস্যা হয়নি। আমার মা, বাবা মনে করেন আমার জীবনে আমি যেটা করতে চাইব সেটাই শেষ কথা। আর মডেলিংয়ের মত ভাল, ক্রিয়েটিভ, ডায়নামিক প্রফেশনে তো বাধা দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।
আভিনয় আসার ইচ্ছাআমার ইচ্ছা আছে সিনেমায় অভিনয় করার। মডেলিংতো করছি। যদি এর মধ্যেই ছবির সুযোগ আসে অবশ্যই করবো।
আনন্দর স্টাইল স্টেটমেন্টআমি অন্ধের মত কোনও ট্রেন্ড ফলো করি না। আই ট্রাই টু পোট্রে মাইসেল্ফ। নিজের মত থাকতেই আমি ভালবাসি।
পাঠকদের জন্য স্টাইল টিপসআউট অফ দ্য ওয়ে কিছু করার দরকার নেই। ফিল গুড অ্যাবাউট ইয়োর ওন সেল্ফ। ফিল কনফিডেন্ট। তোমাকে সিম্পল কিন্তু স্টাইলিশ লাগাটাই সবথেকে বড় ব্যাপার।
আনন্দর পুজোর প্ল্যানআমার সব বন্ধুবান্ধবরা বাইরে থাকে। ওরা পুজোয় আসছে। পুজোয় অনেদিন পর ওদের সঙ্গে বাড়িতে বসে আড্ডা দেব। একদিন হয়তো ঠাকুর দেখতে বেরোতে পারি। অন্যদিনগুলো বাড়িতে বসেই রান্না করে খাওয়া-দাওয়ার প্ল্যান আছে।
First Published: Tuesday, May 28, 2013, 17:41