Last Updated: December 12, 2013 10:38

জলদস্যুদের হাতে বন্দি ভারতীয় নাবিকদের ছাড়িয়ে আনার ব্যাপারে কড়া পদক্ষেপ নেবে ভারত। বুধবারই একথা জানান জাহাজমন্ত্রী জিকে ভাসান। জলদস্যুদের সাহায্য করার অভিযোগে টোগো জেলে চার মাস ধরে বন্দি রয়েছেন এমটি সেঞ্চুরিয়ান জাহাজের ক্যাপ্টেন সুনীল জেমস ও তাঁর সঙ্গীরা। তাঁদের ছাড়াতে উদ্যোগ নেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সঙ্গেও দেখা করেছেন আটক নাবিকদের পরিবার।
বিষয়টি গুরুত্ব সহ দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর দফতর। পাশাপাশি ভারতীয় জলসীমা অতিক্রম করে যেন মত্স্যজীবীরা অন্যদেশের জলসীমায় ঢুকে না পড়ে সেবিষয়ে সচেতনতার উপরেও জোর দিচ্ছে কেন্দ্র। ভারতীয় জাহাজগুলির ওপর ক্রমশ বাড়ছে জলদস্যুদের আক্রমণ। যা নিয়ে রীতিমতো চিন্তিত ভারতীয় জাহাজ মন্ত্রক। ভারতীয় জাহাজগুলির নিরাপত্তা আরও জোরদার করার জন্য ইতিমধ্যেই উপকূলরক্ষী বাহিনীকে আরও শক্তিশালী করার ওপর জোর দিচ্ছে কেন্দ্র।
এক্ষেত্রে পণ্যবাহী ভারতীয় জাহাজগুলিতে বন্দুক সহ নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন, ভারতীয় জলসীমা সম্পর্কে মত্স্যজীবীদের অবহিত করার মতো বিষয়গুলিতে জোর দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি টোগোয় বন্দি ভারতীয় নাবিক সুনীল জেমসকেও ছাড়ানোর ব্যাপারেও উদ্যোগ নিচ্ছে দিল্লি। এই বিষয়ে প্রতিরক্ষামন্ত্রক, বিদেশ মন্ত্রক, জাহাজ মন্ত্রক ও অন্যান্য এজেন্সি গুলি একযোগে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন জাহাজমন্ত্রী।
চার মাস আগে এমটি সেঞ্চুরিয়নের ক্যাপ্টেন সুনীল জেমস ও জাহাজের অন্যান্য সদস্যদের গ্রেফতার করে টোগোর পুলিস। সুনীল জেমসের জাহাজে জলদস্যুদের আক্রমণ হয়। সেই সংক্রান্ত অভিযোগ জানাতেই টেগোয় জাহাজ থামিয়েছিলেন ক্যাপ্টেন সুনীল। কিন্তু তাঁদের বিরুদ্ধে উল্টে জলদস্যুদের সাহায্য করার অভিযোগ আনে টোগো প্রশাসন। গ্রেফতার করা হয় সুনীল জেমস সহ জাহাজের অন্যান্য সদস্যদের। এরপর থেকেই টোগো জেলে বন্দি রয়েছেন সুনীল ও তাঁর সঙ্গীরা। টোগো আদালতের কাছে এই মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির আবেদন করেছে বিদেশমন্ত্রক। বিদেশমন্ত্রী সলমন খুরশিদ জানিয়েছেন আটক ভারতীয় নাবিকদের ছাড়িয়ে আনার বিষয়ে সবরকম চেষ্টা চালাচ্ছে ভারত সরকার।
বিষয়টি নিয়ে দশই ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে দেখা করেন সুনীল জেমসের স্ত্রী অদিতি জেমস। প্রধানমন্ত্রী তাঁদের সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন কংগ্রেস নেতা সঞ্জয় নিরুপম।
সুনীল জেমসের স্ত্রীর অভিযোগ, টোগোর জেলে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে একটি চোখে ইনফেকশনের সমস্যায় ভুগছেন সুনীল। মিলছে না উপযুক্ত চিকিত্সা। তাই দ্রুত তাঁর মুক্তির আবেদন জানিয়েছে সুনীলের পরিবার। দোসরা ডিসেম্বর মুম্বইয়ে সেপ্টিসেমিয়ায় মারা গিয়েছে সুনীল জেমসের এগারো মাসের ছেলে। মার্চেন্ট নেভিতে কাজ করা সুনীলের ফিরে আসার অপেক্ষায় ছেলের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়াও করেনি তাঁর পরিবার। তার দেহ মুম্বইয়ের হাসপাতালের মর্গে কোল্ড স্টোরেজে রাখা রয়েছে।
First Published: Thursday, December 12, 2013, 10:38