সরকার, কমিশনের সংঘাতে এখনও অধরা নির্ঘণ্টের রফা সূত্র

সরকার, কমিশনের সংঘাতে এখনও অধরা নির্ঘণ্টের রফা সূত্র

সরকার, কমিশনের সংঘাতে এখনও অধরা নির্ঘণ্টের রফা সূত্র পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের সংঘাত শেষ পর্যন্ত পৌঁছে গেল নজিরবিহীন পর্যায়ে। এক তরফা ভাবে দিন ঘোষণা করে নজিরবিহীন কাণ্ড করেছে রাজ্য সরকার। সেই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনায় চিঠি দিয়ে নজিরবিহীন কাণ্ড করল কমিশনও। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক দু তরফের সংঘাতের পর্যায়গুলি। 

সংঘাতের শুরুটা হয়েছিল গত বছর। পুজোর পরেই পঞ্চায়েত ভোট হবে বলে জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু কমিশন জানিয়েছিল, তারা তৈরি নয়। তারপর শীতকালে ভোট চায় সরকার।

কিন্তু রাজ্য নির্বাচন কমিশন জানিয়েছিল, ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ শুরু করেছে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন। জানুয়ারির মাঝামাঝি সেই কাজ শেষ হবে। তাই ফেব্রুয়ারিতে ভোট করা সম্ভব নয়। ওই সময় ভোট হলে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা পিছিয়ে দিতে হবে বলেও জানায় কমিশন। বর্তমান পঞ্চায়েতগুলির মেয়াদ মে মাস পর্যন্ত। আইন মেনে তার আগে পঞ্চায়েতগুলি ভাঙা যাবে না বলেও কমিশন যুক্তি দেয়।  

বিরোধ তারপরেও চলতে থাকে। কমিশন ৮০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করে তিন দফায় ভোট করার প্রস্তাব দেয়। কিন্তু সরকার কেন্দ্রীয় বাহিনী ছাড়া এক দফায় ভোট করতে চেয়েছিল। পরে সরকার দু দফায় ভোট করতে রাজি হলেও কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন রাজি হয়নি।

আনুষ্ঠানিক পত্রযুদ্ধ শুরু হয় ফেব্রুয়ারিতে। বারোই ফেব্রুয়ারি সরকার রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়ে ২০ ও ২৪ এপ্রিল দু দফায় ভোট করার কথা বলে।

২০ ফেব্রুয়ারি কমিশন সরকারকে পাল্টা চিঠিতে জানায় ভোট হোক তিন দফায়, ২৮ এপ্রিল এবং ২ ও ৬ মে।

৪ মার্চ ফের কমিশনকে চিঠি দিয়ে সরকার জানায়, তারা ২৪ ও ২৮ এপ্রিল দু`দফায় ভোট করতে চায়।

৭ মার্চ রাজ্যকে দেওয়া চিঠিতে কমিশন জানিয়ে দেয়, তারা আগের অবস্থানে অনড়। ভোট হোক তিন দফায়, ২৮ এপ্রিল এবং ২ ও ৬ মে। কমিশনের যুক্তি ছিল, আইন অনুযায়ী সব কাজ শেষ করে তার আগে ভোট করা সম্ভব নয়। কমিশনের বক্তব্য ছিল, ভোট অবাধ ও শান্তিপূর্ণ করার দায়িত্ব তাদের। তাই তারা কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করে তিন দফায় ভোট করতে চায়।  

অতি সম্প্রতি তিনটি বিধানসভা উপনির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনীর অধীনে ভোট করলেও রাজ্য সরকার পঞ্চায়েত ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়োগে নারাজ।   

এরপর আর কমিশনেক কোনও চিঠি দেয়নি সরকার। ২২ মার্চ, শুক্রবার একতরফা ভাবে ভোটের দিন ঘোষণা করে দেন পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনে কমিশনের সুপারিশও মানতে রাজি হয়নি রাজ্য সরকার।

First Published: Monday, March 25, 2013, 20:50


comments powered by Disqus