Last Updated: January 15, 2013 21:48

হলদিয়া পেট্রোকেমের আংশিক মালিকানা থেকে সরে আসছে রাজ্য সরকার। রাজ্য সরকারের শেয়ারের মূল্য নির্ধারণের জন্য আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তবে এই মালিকানা কার হাতে যাবে তা নিয়ে বিরোধ রয়েছে। রাষ্ট্রায়ত্ত্ব তেল সংস্থা ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন নিলাম না ডেকে পূর্ণেন্দু চ্যাটার্জি গোষ্ঠীর হাতে একতরফা পরিচালন ক্ষমতা তুলে দেবার বিরুদ্ধে। নিলাম হলে তাতে অংশ নেবার কথাও ঘোষণা করেছেন আইওসি কর্তৃপক্ষ।
১৯৮৫ সালের চুক্তি অনুযায়ী হলদিয়া পেট্রোকেমে ৪৪ শতাংশ মালিকানা রয়েছে পূর্ণেন্দু চ্যাটার্জি গোষ্ঠীর হাতে।এছাড়া রাজ্য সরকারের শিল্পোন্নয়ন নিগমের হাতে রয়েছে ৩৩ শতাংশ শেয়ার। বাদবাকি শেয়ারের মধ্যে রয়েছে ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশনের ১০ শতাংশ।টাটাগোষ্ঠীর ৩ শতাংশ এবং অন্যান্য ১৭টি গোষ্ঠীর হাতে মিলিতভাবে ১০ শতাংশ।
রাজ্য সরকারের শেয়ার ছেড়ে দেওয়ার কথা শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছেন। দীর্ঘ কয়েকমাস ধরে এইচপিএল চালানো হয়েছে সর্বোচ্চ উত্পাদনশীলতার থেকে অনেক কম হারে। ফলে সংস্থার আর্থিক অবস্থা ভাল নয়। এই অবস্থায় রাজ্য সরকারের অংশীদারির ন্যায্য আর্থিক মূল্য কত, তা নির্ধারণের জন্য `ডিউ ডিলিজেন্স` প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। হিসাবপত্র পরীক্ষার কাজ শেষ। চলতি মাসেই তিন বিদেশি বিশেষজ্ঞ নিয়ে গড়া একটি দল প্রযুক্তিগত দিকগুলি খতিয়ে দেখতে আসছেন। কেন্দ্রে ইউপিএ- টু সরকারের বিলগ্নীকরণ নীতিতে এই অলাভজনক রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সংস্থাকে লাভজনক বেসরকারি সংস্থা হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা চলছে। কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেটের নীতিগত সম্মতির পর এবার ওপেন বিড বা প্রকাশ্য নিলামের পালা।
বিলগ্নিকরণ সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেট কমিটির সিংহভাগ সদস্যের মত, চ্যাটার্জি গোষ্ঠীকে প্রথমে হলদিয়া পেট্রোকেম অধিগ্রহণের সুযোগ করে দেওয়া উচিত। চ্যাটার্জি গোষ্ঠীর দাবি মূল চুক্তি অনুযায়ী তাদের এই প্রস্তাব প্রাপ্য। তারা চার হাজার কোটি টাকার বিশেষ প্যাকেজের মাধ্যমে পেট্রোকেমের পুনর্জীবন দেওয়ার জন্য প্রস্তুত। এখানে নীতিগত আপত্তি তুলেছে অন্যতম অংশীদার রাষ্ট্রায়ত্ত্ব তেল সংস্থা ইন্ডিয়ান ওয়েল কর্পোরেশন। তাদের দাবি, নিলাম হোক প্রকাশ্যে। সর্বাধির দর প্রদানকারীকেই দেওয়া হোক পেট্রোকেম পরিচালনার দায়িত্ব। এমনকি কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গিয়ে তারা নিলামে অংশ নেবার কথাও জানিয়ে দিয়েছেন।
১) ইন্ডিয়ান ওয়েল কর্পোরেশন একটি রাষ্ট্রায়ত্ত্ব তেল সংস্থা। বিশেষ ক্যাবিনেট কমিটির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যাওয়ায় তাদের আদৌ নিলামে অংশ নিতে দেওয়া হবে কি না, তা বড় প্রশ্ন।
২) পেট্রোকেমকে লাভজনক করার জন্য আইওসি-র দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা কি, তা এখনও স্বচ্ছ নয়।
৩) আইওসি-র মনোভাব দেখে কেন্দ্র আদৌ ওপেন টেন্ডার ডাকবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠল।
৪) ওপেন টেন্ডার না ডেকে বিলগ্নীকরণ হলে বিনিয়োগকারীদের কাছে ভুল বার্তা যেতে পারে।
এই যাবতীয় বিতর্ক সামাল দিয়ে কোন পন্থায় এইচপিএল-এর বিলগ্নীকরণ হবে, তার দিকে এখন তাকিয়ে রয়েছে গোটা বিশ্বের শিল্পমহল।
First Published: Tuesday, January 15, 2013, 21:48