Last Updated: June 19, 2012 19:36

আপনি কি অবসাদে ভুগছেন? মাঝে মাঝেই মনে হয় বেঁচে থেকে কী লাভ? বহুবার চেষ্টা করেও প্রাণে ধরে শেষ করতে পারেননি জীবনটাকে? বার বার ব্যর্থতা কি আপানাকে ঠেলে দিয়েছে অবসাদের আরও গভীরে? যদি সত্যিই এরকম পরিস্থিতিতে আপনি থাকেন তাহলে মরবার আগে জীবনের শেষ পিকনিকটা অবশ্যই সেরে নিন হেমলক সোসাইটির সঙ্গে। না, সেই বিখ্যাত মার্কিন সংস্থার কথা বলছি না। সৃজিত মুখার্জির নতুন ছবির নাম `হেমলক সোসাইটি।` অবসাদে ভোগা হাজার হাজার মানুষকে সফল ভাবে মরতে শেখানো যে ছবির মূলমন্ত্র, `মরবে মরো, ছড়িয়ো না।`
আগের ছবিতেই দর্শকদের গভীরে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন সৃজিত। আর এবার অবসাদের গভীরে ডুবে থাকা মানুষদের মুক্তি দেওয়ার দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি। সমাজের বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত, হতাশার অতলে কুল না পাওয়া কিছু মানুষই চরিত্র হয়ে উঠেছে সৃজিতের নতুন ছবির। এঁরা প্রত্যেকেই কখনও না কখনও চেষ্টা করেছেন জীবনকে শেষ করে দেওয়ার। কিন্তু পারেননি। অবশেষে তাঁদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে হেমলক সোসাইটি: আমাদের কোন শাখা নেই। যেখানে নিজেদের মতোই আরও অনেক মানুষের সঙ্গে জীবনের শেষ পিকনিকে জড়ো হয়েছেন তাঁরা।

মূলত ফিকশন ধর্মী ছবি হলেও সৃজিত `হেমলক সোসাইটি`র অনুপ্রেরণা পেয়েছেন একই নামের একটি সংগঠনের কাছ থেকে। ১৯৮০ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার সান্টা মনিকায় ডেরেক হাম্ফ্রি নামে এক মার্কিন নাগরিক গড়ে তুলেছিলেন এই সংস্থা। হাম্ফ্রির আত্মজীবনী মূলক লেখা `জিনস্ ওয়ে` প্রকাশিত হয়েছিল ১৮৭৫ সালে। মৃত্যুশয্যায় নিজের গুরুতর অসুস্থ স্ত্রীকে আত্মহত্যায় সাহায্য করার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ ছিল সেই বইতে। `জিনস্ ওয়ে`র সাফল্যই হাম্ফ্রিকে হেমলক সোসাইটি গড়ে তুলতে অনুপ্রাণিত করেছিল। মৃত্যুশয্যায় থাকা অসহায় মানুষদের তথ্য ও আইনি সহায়তা দেওয়াই ছিল এই সংস্থার মূল উদ্দেশ্য। ১৯৯২ সালে হাম্ফ্রির বই `ফাইলান একজিট` প্রকাশিত হওয়ার পর এই ধরনের অন্য একটি সংস্থার সঙ্গে হাত মেলায় হাম্ফ্রির `হেমলক সোসাইটি`। যদিও ওই বছরই সংস্থা ছেড়ে বেরিয়া আসেন হাম্ফ্রি। ২০০৩ সালে `কমপ্যাশন অফ চয়েসেস` নামে সংস্থার সঙ্গে যুক্ত হয় `হেমলক সোসাইটি`। বর্তমানে ফ্লোরিডা, ইলিনয় ও সান দিয়েগোতে তিনটি নথিভুক্ত সংস্থা রয়েছে `হেমলক সোসাইটি`-র নামে।

২২ জুন মুক্তি পাচ্ছে সৃজিতের `হেমলক সোসাইটি`। ছবির প্রোমো ইতিমধ্যেই ভালই সাড়া ফেলেছে। হিট করেছে অনুপমের কন্ঠে `এখনো অনেক রাত`, শিলাজিতের `জল ফরিং`। অনুপম, শিলাজিত ছাড়াও হেমলক সোসাইটিতে গান গেয়েছেন রূপম ইসলাম, রূপঙ্কর, লোপামুদ্রা মিত্র ও শ্রেয়া ঘোষাল। `অটোগ্রাফ` ও `বাইশে শ্রাবণ`-এর সাফল্যের পর বুদ্ধিদীপ্ত বাঙালিকে হলমুখো করতে সৃজিতকে এবার আর বেশি বেগ পেতে হবে বলে মনে হয় না। `বাইশে শ্রাবণ` থেকেই সৃজিত ক্যাম্পে পাকাপাকি জায়গা করে নিয়েছেন পরমব্রত। গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে রয়েছেন কোয়েল মল্লিক, সব্যসাচী চক্রবর্তী, বরুণ চন্দ। মরবার সহজতম উপায় জানতে মূলত দাগা খাওয়া বাঙালিকে অপেক্ষা করতে হবে আর মাত্র কয়েকটা দিন।
First Published: Tuesday, June 19, 2012, 21:35